মায়ের খুনে ধৃত পুত্র, বিষপান স্ত্রী-সন্তানের

বৃদ্ধাকে খুনের অভিযোগে তাঁর ছেলেকে গ্রেফতার করল পুলিশ। আর, তার খানিক পরেই বাড়ি থেকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় পাওয়া গেল ধৃতের স্ত্রী ও তিন ছেলেমেয়েকে। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও দুই ছেলেমেয়ে মারা গিয়েছে।

Advertisement

সম্রাট চন্দ

শান্তিপুর শেষ আপডেট: ১৮ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৪:০১
Share:

বৃদ্ধাকে খুনের অভিযোগে তাঁর ছেলেকে গ্রেফতার করল পুলিশ। আর, তার খানিক পরেই বাড়ি থেকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় পাওয়া গেল ধৃতের স্ত্রী ও তিন ছেলেমেয়েকে। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও দুই ছেলেমেয়ে মারা গিয়েছে।

Advertisement

পুলিশ জানায়, ধৃতের নাম সত্যেন বিশ্বাস। বাড়ি নদিয়ার শান্তিপুর থানার বাগানেপাড়া এলাকায়। দিন কয়েক ধরে তার মা তরুবালা বিশ্বাস (৭৫) নিখোঁজ। সত্যেন তাঁকে খুন করেছে বলে সোমবার থানায় যান তার বৌদি শ্যামলী বিশ্বাস। বিকেলে সত্যেনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তার পরেই স্ত্রী গীতা ও তিন ছেলেমেয়ে বিষক্রিয়ায় অসুস্থ হয়ে পড়েন।
শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে সত্যেনের বড় মেয়ে রিমা বিশ্বাসকে (১৭) ‘মৃত’ ঘোষণা করা হয়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় বাকি তিন জনকে শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে রিমার ভাই সুদীপকে (১২) ‘মৃত’ ঘোষণা করা হয়। পুলিশের অনুমান, স্বামী গ্রেফতার হওয়ায় ভেঙে পড়ে গীতা ছেলেমেয়েদের বিষ খাইয়ে নিজেও খেয়ে থাকতে পারেন ।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সত্যেন সুতো রং করার কারখানায় কাজ করতেন। তাঁরা দুই ভাই। ১৯ বছর আগে তাঁর দাদা রতন বিশ্বাসের মৃত্যু হলে তাঁর স্ত্রী শ্যামলী বাপের বাড়িতে চলে যান। শ্যামলীর অভিযোগ, “বাড়িতে পাঁচ কাঠা মতো জায়গা আছে। স্বামীর মৃত্যুর পরেই সত্যেন সম্পত্তি নিয়ে ঝামেলা শুরু করে। শাশুড়ি আমায় কিছু জায়গা দিতে চাইলে সে তাঁকে নির্যাতন করে। আমি মেয়েকে নিয়ে বাপের বাড়ি চলে যাই। সত্যেন মাকে খেতেও দিত না।”

Advertisement

গত ১ ডিসেম্বর সকালে উধাও হয়ে গিয়েছিলেন তরুবালা। তার পরেই গীতা ডায়েরি করেন। পরে শ্যামলীরা খবর পান, করমচাপুরে সে দিন এক মহিলার দগ্ধ দেহ পাওয়া গিয়েছে। এ দিন বিকেলে তরুবালার দেহ শনাক্ত করেন শ্যামলী।

তরুবালার বোনঝি ফুলমনি বিশ্বাস বলেন, “আশপাশের লোকের কাছে শুনেছি, আগের রাতে তাঁরা মাসির চিৎকার শুনতে পেয়েছিলেন।” শ্যামলী বলেন, “সত্যেন বা তার স্ত্রীকে কিছু না বলেই শাশুড়ি নানা সময়ে আত্মীয়ের বাড়ি চলে যেতেন। ওরা খোঁজও নিত না। এ বার তড়িঘড়ি ডায়েরি করায় আমার সন্দেহ হয়।”

রতনের মৃত্যুও বিষক্রিয়াতেই হয়েছিল বলে শ্যামলীর দাবি। তিনি বলেন, ‘‘সে দিন খাওয়ার পরে আমি, আমার স্বামী ও মেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ি। পরে ওঁর মৃত্যু হয়। এর ঠিক এক মাস আগেই আমার এগারো মাসের ছেলে গরুর দুধ খাওয়ার পরে অসুস্থ হয়ে মারা যায়।’’ যদিও এই সব ঘটনায় পুলিশে অভিযোগ দায়ের হয়নি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement