দল, পুলিশ উভয়কেই তোপ মমতার

কখনও উড়ালপুলে গুলি চালিয়ে জো়ড়া খুন, কখনও চলন্ত ট্রেনে বোমা বা বাড়িতে ঢুকে গুলি করে হত্যা। একের পর এক অপরাধে যখন কার্যত তোপের মুখে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন, তখনই মধ্যমগ্রামে প্রশাসনিক বৈঠকে জেলার আইনশৃঙ্খলা নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করলেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী। আগে হাওড়ায় গিয়েও আইনশৃঙ্খলা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন তিনি, যার দু’ঘণ্টার মধ্যেই সরতে হয় হাওড়ার পুলিশ কমিশনারকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ মে ২০১৫ ০১:২২
Share:

মধ্যমগ্রামে মুখ্যমন্ত্রী। —নিজস্ব চিত্র।

কখনও উড়ালপুলে গুলি চালিয়ে জো়ড়া খুন, কখনও চলন্ত ট্রেনে বোমা বা বাড়িতে ঢুকে গুলি করে হত্যা। একের পর এক অপরাধে যখন কার্যত তোপের মুখে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন, তখনই মধ্যমগ্রামে প্রশাসনিক বৈঠকে জেলার আইনশৃঙ্খলা নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করলেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী। আগে হাওড়ায় গিয়েও আইনশৃঙ্খলা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন তিনি, যার দু’ঘণ্টার মধ্যেই সরতে হয় হাওড়ার পুলিশ কমিশনারকে।

Advertisement

বৃহস্পতিবার মধ্যমগ্রামের নজরুল মঞ্চে উত্তর ২৪ পরগনার ওই বৈঠকেও নিজেই দল ও প্রশাসনের সমালোচনায় নামেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেন, ‘‘সমাজবিরোধীরা কারও নয়। যারা তাদের নিয়ে চলছে, তারা ভুল করছে। তারা যে দলেরই হোক না কেন, গ্রেফতার করতে হবে।’’ এর পাশাপাশি ব্যারাকপুর-টিটাগড়ে দলীয় কোন্দলের দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘‘ব্যারাকপুর-টিটাগড়ে কিছু লোক নিজেদের করে খাওয়ার জন্য দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করবে, তা হতে দেব না।’’

জেলায় একের পর এক অপরাধের পরেও কেন বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় সিসিটিভি বসেনি— তা নিয়েও বিরক্তি প্রকাশ করেন মমতা। সেই সঙ্গেই বলেন, শুধু বন্দুক-লাঠি নয়, পুলিশের আচরণেও পরিবর্তন আনতে হবে।

Advertisement

সম্প্রতি ভরসন্ধ্যায় জনবহুল উড়ালপুলে ‘গ্যাং ওয়ার’ দেখেছে মধ্যমগ্রাম। সেখানে জোড়া খুনে যুক্ত সন্দেহে গ্রেফতার করা হয় কামারহাটির তৃণমূল-ঘনিষ্ঠ জমি মাফিয়া বাবু মণ্ডল ও তার সঙ্গীদের। সে প্রসঙ্গে প্রশাসনকে কড়া হতে বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেছেন নজরদারি বাড়ানোর কথাও।

মধ্যমগ্রামের ঘটনার দিন কয়েক পরেই টিটাগড়ের কাছে ট্রেনে বোমা নিয়ে দুষ্কৃতী-লড়াইয়ে জখম হন ১৫ জন যাত্রী ও এক দুষ্কৃতী। পরদিনই টিটাগড় বাসস্ট্যান্ডের কাছে ফের বোমা ফেটে জখম হন ৭ জন। গত শনিবার রাতে নোয়াপাড়ার এক যুবককে বাড়িতে ঢুকে খুন করে দুষ্কৃতীরা। অনেকের মতে, পরপর এমন ঘটনার জেরেই এ দিন বৈঠকে আইনশৃঙ্খলার হাল নিয়ে এ ভাবে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।

তবে এর পরেও জেলায় পরিস্থিতির বিশেষ উন্নতি হবে বলে মনে করছেন না বিরোধীরা। সিপিএমের ভারপ্রাপ্ত জেলা সম্পাদক নেপালদেব ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘ওঁর দলের লোকজনের হাতেই তো সব অস্ত্রশস্ত্র। বিভিন্ন ঘটনায় তারাই ধরা পড়ছে। উনি নিজেই দলীয় কর্মীদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারছেন না। এ সব বৈঠক করে তাই অশ্বডিম্ব প্রসবই হবে।’’ একই সুরে জেলার বিজেপি নেতা ও বিধায়ক শমীক ভট্টাচার্যও বলেন, ‘‘এক দিকে মুখ্যমন্ত্রী নিজেই এমন কথা বলছেন, যাতে সমাজবিরোধীরা উৎসাহিত হচ্ছে। অন্য দিকে, এখন পুলিশকে কড়া ব্যবস্থা নিতে বলছেন। পুলিশ তো আর স্বশাসিত সংস্থা নয়!’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement