সিঙ্গুর-কৃতিত্ব মমতার নয়, দাবি অধীরের

সিঙ্গুরে জমি অধিগ্রহণকে অবৈধ বলে রায় দিয়েছে দেশের সর্বোচ্চ আদালত। বিষয়টি নিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জয়ের হাসি হাসলেও এ বিষয়ে তৃণমূলকে কৃতিত্ব দিতে নারাজ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

তমলুক শেষ আপডেট: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৩:০০
Share:

নিমতৌড়িতে অধীর চৌধুরী। নিজস্ব চিত্র।

সিঙ্গুরে জমি অধিগ্রহণকে অবৈধ বলে রায় দিয়েছে দেশের সর্বোচ্চ আদালত। বিষয়টি নিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জয়ের হাসি হাসলেও এ বিষয়ে তৃণমূলকে কৃতিত্ব দিতে নারাজ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। শনিবার পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুকে জেলা কংগ্রেসের এক কর্মিসভায় অধীরের বক্তব্য, ‘‘সিঙ্গুর নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট যে রায় দিয়েছে তা জমি অধিগ্রহণের পদ্ধতি নিয়ে। মামলা করেছিলেন আট-দশ জন ব্যক্তি। এতে তৃণমূলের কৃতিত্ব নেই। অথচ সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর তৃণমূল নেত্রী ও তাঁর দল সিঙ্গুর নিয়ে মাতামাতি করছে।’’ সঙ্গে তাঁর পরামর্শ ‘‘সিঙ্গুর নিয়ে সস্তার রাজনীতি না করে টাটাদের সঙ্গে আলোচনা করে শিল্পস্থাপন করলে ভাল হবে।’’

Advertisement

শুধু সিঙ্গুর কাণ্ড নয়, সম্প্রতি কংগ্রেসে ভাঙন প্রসঙ্গে তিনি এ দিন কর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন। ‘অধিকারী গড়’ পূর্ব মেদিনীপুরে দাঁড়িয়ে রেয়াত করেননি শুভেন্দু অধিকারীকেও। সেই শুভেন্দু অধিকারী যাঁকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দায়িত্ব দিয়েছেন অধীরের গড় মুর্শিদাবাদে ভাঙন ধরানোর। এবং সেই কাজে তিনি সফল তো বটেই। আর শুভেন্দুর গড়ে দাঁড়িয়ে নাম না করে তোপ দাগলেন অধীরও। তাঁর কথায়, ‘‘নন্দীগ্রামে জমিরক্ষা আন্দোলনে এই জেলার অধিকারী পরিবার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিল। একসময় তৃণমূল নেত্রীর পর দলে তাঁকে (শুভেন্দু অধিকারীর) স্থান দেওয়া হত। আর এখন তাঁকেই (শুভেন্দুকে) রাজ্যে পরিবহণ মন্ত্রী এবং মুর্শিদাবাদে অপহরণ মন্ত্রী করা হয়েছে।’’ সঙ্গে তাঁর সংযোজন, ‘‘টাকার লোভ দেখিয়ে, না হয় মামলার ভয় দেখিয়ে, এমনকি জনপ্রতিনিধিদের অপহরণ করে তৃণমূলে যোগ দিতে বাধ্য করছে তৃণমূল। তৃণমূল রাজ্যকে বিরোধী শূন্য করতে চাইছে।’’

স্থানীয় কংগ্রেস নেতা-কর্মীদের অভিযোগ ছিল, সিপিএম বিভিন্ন আন্দোলন কর্মসূচিতে তাঁদের গুরুত্ব দিয়ে ডাকছে না। জোট প্রসঙ্গ তুলে অধীরবাবু বলেন, ‘সিপিএমের সঙ্গে আমাদের নির্বাচনী জোট সমঝোতা হয়েছিল। রাজনৈতিকভাবে জোট হয়নি। তাই সিপিএম কর্মসূচিতে না ডাকলে যাবেন না। ডাকলে যাবেন। এ নিয়ে ক্ষোভ পুষে রাখবেন না।’’

Advertisement

সম্প্রতি পশ্চিম মেদিনীপুরে প্রদেশ কংগ্রেস নেতা মানস ভুঁইয়ার ভাই তথা জেলা কংগ্রেস সভাপতি বিকাশ ভুঁইয়া এক ঝাঁক দলীয় নেতা-কর্মী নিয়ে যোগ দিয়েছেন তৃণমূলে। এই প্রসঙ্গে দলীয় কর্মীদের প্রতি অধীরের আবেদন, ‘‘আপনারা ঘাবড়ে যাবেন না। সময় তো সব সময় ভাল যায়না। আপনাদের সঙ্গে আমরা আছি।’’ নন্দীগ্রাম আন্দোলনের প্রসঙ্গ তুলে অধীরের ঘোষণা, ‘‘নন্দীগ্রামের মানুষ এখনও বিচার পায়নি। দোষী পুলিশ অফিসারদের শাস্তি হয়নি। আমরা চাই নন্দীগ্রামের মানুষ বিচার পাক।’’ আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর শহিদ মাতঙ্গিনী হাজরার আত্মবলিদান দিন স্মরণে পটাশপুরে দলের তরফে আত্মবলিদান দিবস পালনের ডাকও দেন তিনি।

এ দিন দলীয় কর্মিসভায় অধীরবাবু মানস ভুঁইয়া প্রসঙ্গে কোনও মন্তব্য করেননি। তবে প্রদেশ কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক অমিতাভ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘উনি কখনও সিঙ্গুরে যাননি। এখন তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে সিঙ্গুর দিবস পালন করছেন। আসলে উনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে একটা পাকা চাকরি চেয়েছেন। কিন্তু তা এখনও হয়নি। তাই তৃণমূল নেতাদের কাছে যাচ্ছেন।’’এ দিন সভায় জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে আটশোরও বেশি কর্মী যোগ দিয়েছে বলে দাবি করেন জেলা কংগ্রেস সভাপতি আনোয়ার আলি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement