উন্নয়ন ভাবনায় আবারও শ্রী ফেরালেন মুখ্যমন্ত্রী। ‘যুবশ্রী’, ‘কন্যাশ্রী’র পর এ বার ‘সেবাশ্রী’। উত্তরবঙ্গের ভূমিকম্প পীড়িতদের পাশে দাঁড়িয়ে রবিবারই এই নতুন প্রকল্পের কথা মাথায় আসে তাঁর। এর পরই আর সময় নষ্ট না করে তড়িঘড়িই আক্রান্তদের ‘পাশে দাঁড়াতে’ সোমবার এই নতুন প্রকল্প তৈরির কথা ঘোষণা করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘সেবাশ্রী প্রকল্পে প্রতি জেলায় ১০ জন করে বেছে দল তৈরি হবে। কোথাও কোনও প্রাকৃতিক বিপর্যয় হলে, ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়াবেন তাঁরা। এরা সমবেদনা, সান্ত্বনা জানাবেন।’’ তাঁর কথায়, মানুষের ক্ষতি হলে যেমন ওষুধ লাগে, তেমনই মাথায় হাত বুলিয়েও দিতে হয়। ভালবাসতে হয়। এতে সকলে শান্তি পায়। সেবাশ্রী প্রকল্পে সেই কাজটিই করা হবে। প্রশাসনিক সূত্রে জানানো হয়েছে, যুবশ্রী বা কন্যাশ্রী প্রকল্পের মতো সেবাশ্রী প্রকল্পে অর্থ বিলি করা হবে না। শুধু প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষজনকে সমবেদনা জানানো এবং প্রশাসনের সঙ্গে তাঁদের সমন্বয় ঘটানোই এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য। কারা এই প্রকল্পে কাজ করবেন, সে বিষয়ে অবশ্য এ দিন কিছু জানা যায়নি, তবে প্রতিটি জেলায় যে সেবাশ্রী প্রকল্পের দল থাকবে তা তিনি জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘প্রকল্পে কারা কাজ করবে, তা পরে ঠিক হবে।’’
মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার পরেই অবশ্য এই প্রকল্প নিয়ে ধন্দ তৈরি হয়েছে প্রশাসনের আধিকারিকদের মধ্যে। কারণ বর্তমান প্রশাসনিক পরিকাঠামোয় কোথাও প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঘটলে দুর্গতদের উদ্ধার করে ওষুধ ও খাবারের ব্যবস্থা করার জন্য বিপর্যয় মোকাবিলার দল রয়েছে। প্রশাসনের সঙ্গে দুর্গতদের সমন্বয় করাতে সিভিল ডিফেন্স থেকে শুরু করে ব্লক স্তরে পৃথক বিপর্যয় মোকাবিলার দলও রয়েছে। এখানেই প্রশ্ন উঠেছে, তা হলে সেবাশ্রী প্রকল্পের যে দল তৈরি হবে তাঁদের কাজ কী হবে শুধু সমবেদনা জানানো ? প্রশাসনিক আধিকারিকরা অবশ্য এটাও দাবি করেছেন, প্রকল্পের পুরো ‘গাইড লাইন’ না পেলে, কী হতে চলেছে তা জানা সম্ভব নয়।
‘সেবাশ্রী’ প্রকল্পের বিষয়ে সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কিছুই জানেন না বিপর্যয় মোকাবিলামন্ত্রী জাভেদ খানও। জাভেদ বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী আমাদের সুপ্রিমো। তিনি ত্রাণের কাজ তদারকি করতে শিলিগুড়িতে গিয়েছেন। তিনি প্রয়োজন মনে করেছেন, তাই করেছেন। তাঁর সঙ্গে আমার আজ কথা হয়নি। কথা হলেই সব জানতে পারব’’।