জামুড়িয়ায় তৃণমূলের সভায় মমতার সঙ্গে শিল্পাঞ্চলে দলের দুই প্রার্থী জিতেন্দ্র তিওয়ারি ও ভি শিবদাসন। ছবি: ওমপ্রকাশ সিংহ।
কুলটিতে জল প্রকল্প গড়তে না পাড়ার দায় কেন্দ্রের উপরে চাপিয়ে দিলেন তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার কুলটির সভায় তিনি দাবি করেন, কেন্দ্র টাকা না দেওয়ায় জলপ্রকল্প করা যাচ্ছে না। তবে তার সঙ্গেই তাঁর আশ্বাস, বাঁকুড়া ও পুরুলিয়ায় কয়েকশো কেটি টাকা খরচ করে যেমন জলপ্রকল্প তৈরি হচ্ছে, আসানসোলেও সেই চেষ্টা করা হবে।
বুধবার দুপুরে কুলটি ও বারাবনিতে দু’টি সভা করেন তৃণমূল নেত্রী। কুলটির সভায় মুখ্যমন্ত্রী জল সমস্যা সমাধানের কোনও দিশা দেখাবেন, আশায় ছিল জনতা। কিন্তু মমতা বলেন, ‘‘পানীয় জলের টাকা দেওয়া বন্ধ করেছে কেন্দ্র। জেএনএনইউআরএম প্রকল্প বন্ধ করে দিয়েছে, তাই কুলটিতে জলপ্রকল্প করা যাচ্ছে না।’’ এর পরেই তিনি আশ্বস্ত করেন, এখানকার সরকারি সংস্থাগুলির সামাজিক দায়িত্ব পালনের তহবিল থেকে জল সমস্যা মেটানো যায় কি না, সেই চেষ্টা করা হবে। বাঁকুড়া, পুরুলিয়ার মতো আসানসোলেও জলপ্রকল্প তৈরির চেষ্টা করবেন বলে জানান তিনি।
মুখ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্যের বিরোধিতা করে আসানসোলের প্রাক্তন সাংসদ বংশগোপাল চৌধুরী দাবি করেন, কুলটির জলপ্রকল্পের জন্য রাজ্যের বামফ্রন্ট সরকারের আমলে কেন্দ্র ১৩৩ কোটি টাকা অনুমোদন করেছিল। তিনি বলেন, ‘‘২০০৬ সালে অনুমোদিত প্রকল্পটি ২০১১ সালে শেষ হয়ে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পুর কর্তৃপক্ষের স্বদিচ্ছার অভাবে প্রকল্প রূপায়ণে হাতই পড়েনি। ফলে, প্রকল্পটি ফিরিয়ে নিয়েছে কেন্দ্র। এই ঘটনায় তৎকালীন কেন্দ্রীয় সরকারের কোনও দায় নেই।’’ বিরোধীদের আরও দাবি, জেএনএনইউআরএম প্রকল্প এখন বন্ধ হয়ে থাকতে পারে। কিন্তু কেন্দ্র যখন জলপ্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছিল, তখন প্রকল্পটি বহাল তবিয়তে চালু ছিল। তাই মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রের উপরে দোষ চাপালেও তা ধোপে টেকে না।
বুধবার রূপনারায়ণপুরের সভায় এলাকার প্রায় বন্ধ পড়ে থাকা কেবলস কারখানার পুনরুজ্জীবন নিয়ে কোনও কথা বলেননি মমতা। তবে শিল্পাঞ্চলের বেকারদের চাকরি ও শিল্পায়ন নিয়ে বলার সময় তিনি বলেন, ‘‘চিত্তরঞ্জন কারখানা এক সময়ে লাটে উঠে গিয়েছিল। আমি যখন রেলমন্ত্রী ছিলাম তখন এই কারখানাকে অনেক বরাত পাইয়ে দিয়েছি। কারখানা ফের ঘুড়ে দাঁড়িয়েছে।’’ আসানসোলে একটি শিল্পনগরী হবে বলে আশ্বাস দিয়ে তিনি জানান, আসানসোলকে জেলা করার সিদ্ধান্ত হয়ে গিয়েছে। এখানে অনেক সরকারি কার্যালয় হবে। এলাকার গুরুত্ব বাড়বে। বেকারদের আয়ের পথ সুগম হবে।
২০১১ সালে পরিবর্তনের হাওয়ার মধ্যেও জামুড়িয়ায় জিতেছিল সিপিএম। সে কথা উল্লেখ করে এ বার তাঁদের প্রার্থীকে জেতানোর ডাক দেন মমতা। জামুড়িয়ার সভায় বিজেপিকেও আক্রমণ করেন মমতা। লোকসভা ভোটের আগে নানা প্রতিশ্রুতি দিলেও বিজেপি এই অঞ্চলে কোনও কাজ করেনি বলে দাবি করেন তিনি।