গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
২৩ জানুয়ারি নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মদিনকে ‘জাতীয় ছুটি’র দিন ঘোষণার দাবি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। চিঠিতে মোদীকে তিনি অনুরোধ করেছেন, নেতাজির ১২৫তম জন্মবার্ষিকীর আগেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হোক। মমতার অভিমত, নেতাজির জন্মদিন গোটা দেশেই মর্যাদার সঙ্গে পালিত হয়। তাই ওই দিনটিকে জাতীয় ছুটির দিন ঘোষণা করাই উচিত। প্রয়োজনে প্রধানমন্ত্রী যাতে ওই বিষয়ে ‘ব্যক্তিগত ভাবে’ উদ্যোগী হন, সে অনুরোধও জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
বুধবার যে চিঠি মমতা পাঠিয়েছেন মোদীকে, তাতে শুরুতেই তিনি মনে করিয়ে দিয়েছেন, ২০২২ সালের ২৩ জানুয়ারি নেতাজির ১২৫তম জন্মবার্ষিকী। মমতা লিখেছেন, নেতাজি একজন ‘জাতীয় বীর’ এবং ‘জাতীয় নেতা’। মমতা লিখেছেন, ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে ভারতের স্বাধীনতার সংগ্রামের প্রতীক নেতাজি। তার সঙ্গেই মনে করিয়ে দিয়েছেন, রাজ্য সরকার অনেক দিন ধরেই নেতাজির জন্মদিনে জাতীয় ছুটি ঘোষণা করার দাবি জানিয়ে আসছে। যে দাবি এখনও পূরণ হয়নি।
নেতাজির অন্তর্ধান নিয়ে যে ‘রহস্য’ রয়েছে, দু’পাতার চিঠিতে সে প্রসঙ্গও উল্লেখ করেছেন মমতা। তাঁর বক্তব্য, সেই ‘রহস্য’ উদ্ঘাটনে কেন্দ্রীয় সরকারের উদ্যোগী হওয়া উচিত এবং আসল তথ্য খুঁজে বার করে তা প্রকাশ্যে আনা উচিত। প্রধানমন্ত্রীকে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মনে করিয়ে দিয়েছেন, নেতাজিকে ঘিরে যা কিছু অজানা, সে সব প্রকাশ্যে আনতে নেতাজি সংক্রান্ত বিভিন্ন গোপন ফাইল রাজ্য সরকার আগেই প্রকাশ্যে এনেছে। চিঠির শেষ স্তবকে মুখ্যমন্ত্রীর অনুরোধ, নেতাজির জন্মদিনকে জাতীয় ছুটির দিন ঘোষণার দাবি যাতে পূরণ হয়, তা নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রী ব্যক্তিগত ভাবে হস্তক্ষেপ করুন। কারণ, নেতাজি সম্পর্কে দলমত নির্বিশেষে প্রায় সব বাঙালিই আবেগপ্রবণ। তাঁর জন্মদিনকে জাতীয় ছুটির দিন ঘোষণা করার দাবিও তাই দীর্ঘদিনের।
আরও পড়ুন: সৌমিত্রের স্মৃতিতে সংগ্রহশালা তৈরি করুক রাজ্য, দাবি অধীরের
আরও পড়ুন: নামেই মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ, সময় এলেই পদত্যাগ করতে বাধ্য করবে বিজেপি: শিবসেনা
অতীতে বাম আমলেও রাজ্যের তরফে ওই দাবি জানানো হয়েছিল কেন্দ্রের কাছে। কিন্তু বাংলার মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে মমতা যে ভাবে প্রধানমন্ত্রীকে সরাসরি চিঠি লিখলেন বিষয়টি নিয়ে এবং তাঁর ‘ব্যক্তিগত হস্তক্ষেপ’ দাবি করলেন, তেমন আগের কোনও মুখ্যমন্ত্রী করেননি। এই দাবি সরাসরি কেন্দ্র নাকচ করলে তা বাংলায় বিজেপি-র পক্ষে অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়াবে। দাবি মেনে নিলে মমতার উদ্যোগ স্বীকৃতি পাবে। কেন্দ্র কোন পথে হাঁটে, সে দিকেই আপাতত নজর রাজ্য রাজনীতির কারবারিদের।