মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র
উত্তরবঙ্গ সফরে এসে এ বারে প্রশাসনিক বৈঠকের পাশাপাশি দার্জিলিং ও জলপাইগুড়ি জেলার বাছাই করা নাগরিকদের নিয়ে বিজয়া সম্মিলনীতে যোগ দেবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সরকারি সূত্রের খবর, সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে ২১ অক্টোবর, বিকেল ৪টেয় রাজ্য সরকার আয়োজিত ওই বিজয়া সম্মিলনী হবে শিলিগুড়ির মাল্লাগুড়ির পুলিশ কমিশনারেটের মাঠে, আর তাতে যোগ দেবেন মুখ্যমন্ত্রী। গত তিন দিন ধরে পুলিশ-প্রশাসনের তরফে সম্মিলনীর প্রস্তুতি ঘিরে তৎপরতা তুঙ্গে।
রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের বাইরে রেখে আমজনতা, শিক্ষক-শিক্ষিকা, বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠন, স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার প্রতিনিধিদের এই বিজয়া সম্মিলনীতে ডাকা হচ্ছে। প্রশাসন সূত্রে বলা হচ্ছে, দুই জেলার বিশিষ্ট নাগরিক, যাঁদের ভাবমূর্তি স্বচ্ছ, সকলেই একডাকে চেনেন, এমন লোকজনকেই প্রধানত আমন্ত্রণ জানানোর কথা ভাবা হচ্ছে। নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীর দফতরের একদল সচিব পর্যায়ের অফিসার দুই জেলা পুলিশ-প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় রেখে তালিকা তৈরি করছেন। অনুষ্ঠানে শারদ শুভেচ্ছা জানানো ছাড়াও মত-বিনিয়মের সুযোগ রাখা হচ্ছে।
ওই দিন বিকেল সাড়ে ৩টে নাগাদ বাগডোগরা বিমানবন্দরে নামার কথা মুখ্যমন্ত্রীর। তার পরে সোজা পুলিশ কমিশনারেটে এসে এই অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন মুখ্যমন্ত্রী। এখনও অবধি ঠিক রয়েছে, এই অনুষ্ঠান থেকে তিনি সোজা চলে যাবেন উত্তরকন্যার অতিথি নিবাস কন্যাশ্রীতে। রাত সেখানে কাটিয়ে পরদিন তিনি চার জেলার প্রশাসনিক সভা করবেন উত্তরকন্যাতেই। এর আগেও একাধিকবার পুজোর আগে বা পরে মুখ্যমন্ত্রী শিলিগুড়ি এসেছেন। তবে বিজয়া সম্মিলনী এই প্রথম।
রাজ্যের পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব বলেছেন, ‘‘গোটাটাই রাজ্য সরকারের অনুষ্ঠান। মানুষের সঙ্গে বিজয়ার শুভেচ্ছা বিনিয়ম, মত বিনিময় করতে মুখ্যমন্ত্রী আসছেন। সরকারি স্তরে প্রস্তুতি চলছে।’’ অনুষ্ঠানটিতে যাতে কোনওভাবে রাজনৈতিক ছোঁয়া বা প্রভাব না থাকে, সেই নির্দেশ স্পষ্টভাবে দেওয়া হয়েছে। স্বচ্ছ ভাবমূর্তির লেখক, প্রবন্ধকার, শিক্ষক, চিকিৎসক, বাস্তুকার, ব্যবসায়ীদের এই অনুষ্ঠানে ডাকা হবে। বিশেষ করে অবাঙালি অধ্যুষিত এলাকার বিশিষ্ট নাগরিকদেরও অতিথি তালিকায় রাখা হয়েছে বলে সূত্রের খবর।
দলীয় সূত্রের খবর, রাজ্যে ক্ষমতায় এলেও শিলিগুড়ি পুর এলাকা, মহকুমা, পাহাড়ে শাসকদল ভোটে জিততে পারেনি। তার উপরে শিলিগুড়ি লাগোয়া জলপাইগুড়ির জেলার ডাবগ্রাম ফুলবাড়ি, রাজগঞ্জে বিজেপির প্রভাব লোকসভা ভোটে ভালভাবেই টের পাওয়া গিয়েছে। সেখানে সরকারি প্রকল্পের অনুষ্ঠান, জনসভার মতো কর্মসূচির বাইরে গিয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে সরাসরি কথা বলতে চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী। জনসংযোগ বাড়ানো ছাড়াও আমন্ত্রিতদের মধ্যে থেকে বাছাই করার লোকজনের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে আগামী দিনে পুরসভার, মহকুমা পরিষদের মতো ভোটে তাঁদের প্রভাবকে কাজেও লাগাতে চায় তৃণমূল।