—ফাইল চিত্র।
পাশের নদিয়া জেলার কল্যাণীতে হেলিকপ্টার থেকে নেমে কাঁচরাপাড়ায় তৃণমূলের কর্মিসভা করতে যেতে পারেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর সভার জন্য হেলিপ্যাড তৈরি করা হচ্ছে কল্যাণীর রথতলায়। সেখান থেকে আজ, শুক্রবার কাঁচরাপাড়ার মিলন নগর আদর্শ সঙ্ঘের মাঠে কর্মিসভা করতে যাওয়ার কথা মুখ্যমন্ত্রীর। তৃণমূল নেতৃত্ব জানিয়েছেন, ব্যারাকপুর লোকসভা ও বীজপুর বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে ওই এলাকায় মুখ্যমন্ত্রীর কোনও জনসভা হচ্ছে না। হবে কর্মিসভা।
মুখ্যমন্ত্রী শেষ পর্যন্ত হেলিকপ্টারেই যাবেন কিনা, তা অবশ্য এখনও স্পষ্ট নয়। পুলিশের বক্তব্য, আবহাওয়া খারাপ থাকলে মুখ্যমন্ত্রীকে সড়ক পথেই যেতে হবে। আর আবহাওয়া না বিগড়োলে তিনি কপ্টারে যাবেন কি না, সেই সিদ্ধান্ত মুখ্যমন্ত্রী নিজেই নেবেন। তবে কলকাতার উপকণ্ঠে কাঁচরাপাড়ায় যাওয়ার জন্য মুখ্যমন্ত্রীর কপ্টার ব্যবহার নিয়ে বিরোধীরা ইতিমধ্যেই কটাক্ষ শুরু করেছে।
বিজেপির কটাক্ষ, রাস্তায় মুখ্যমন্ত্রীকে যাতে ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি শুনতে না হয়, সেই জন্যই আকাশ-পথে যাত্রা করতে হচ্ছে মুখ্যমন্ত্রীকে। তবে তৃণমূল নেতৃত্ব বিজেপির সেই দাবিকে উড়িয়ে দিয়েছেন। উত্তর ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূলের এক শীর্ষ নেতার বক্তব্য, ‘‘বিজেপি রাজ্যকে অশান্ত করার পরিকল্পনা নিয়েছে। ফলে তারা কী বলল, না বলল, তাতে কিছু যায় আসে না।’’ তাঁদের বক্তব্য, অশান্তি বাধানোর কোনও রাস্তায় তাঁরা নেই। তবে মুখ্যমন্ত্রীর ওই সভাস্থলেই কাল, শনিবার সভা করবে বলে ঘোষণা করেছে বিজেপি।
দ্বিতীয় বার প্রধানমন্ত্রী পদে নরেন্দ্র মোদীর শপথের দিন অশান্ত নৈহাটিতে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সে দিন তাঁর দলের প্রাক্তন বিধায়ক, বর্তমানে বিজেপির সাংসদ অর্জুন সিংহের ‘গড়’ ভাটপাড়ার দু’জায়গায় মুখ্যমন্ত্রীর যাওয়ার পথে ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি দেন বিজেপি সমর্থকেরা। দু’বারই গাড়ি থেকে নেমে তাঁদের তাড়া করেন মুখ্যমন্ত্রী। এ বার যাতে তেমন কোনও পরিস্থিতি তৈরি না হয়, তার জন্যই কপ্টারের ব্যবস্থা কিনা, তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে সব মহলেই।
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, এ বারও মুখ্যমন্ত্রী সড়ক পথে যাবেন বলেই ঠিক ছিল। কিন্তু তাঁর নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে পুলিশ শেষ মুহূর্তে কপ্টারে যাওয়ার প্রস্তাব দেয়। বুধবার রাতে ঠিক হয়েছিল, হেলিপ্যাড হবে কাঁচরাপাড়া লাগোয়া হালিশহরে। ভোটের আগে তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কপ্টার সেখানেই নেমেছিল। সেই পরিকল্পনা বৃহস্পতিবার সকালে বাতিল হয়। প্রশাসন এ দিন সিদ্ধান্ত নেয়, হেলিপ্যাড হবে কল্যাণীর রথতলায়।
সভাস্থল থেকে রথতলা ৩ কিলোমিটার দূরে। মাত্র ১০ মিনিটেই সভায় পৌঁছে যাওয়ার কথা তাঁর। হালিশহর থেকেও একই সময় লাগে। পুলিশের বক্তব্য, হালিশহরের তুলনায় রথতলা থেকে মুখ্যমন্ত্রীর যাতায়াত অনেক সহজ হবে। ব্যারাকপুর কমিশনারেটের ডিসি (জোন-১) অজয় ঠাকুর বলেন, ‘‘যেখানে হেলিপ্যাড হচ্ছে, সেটি সভাস্থলের রাস্তাতেই পড়ে। সেই জন্যই এমন সিদ্ধান্ত।’’
তবে স্থানীয় সূত্রের বক্তব্য, হালিশহরের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তপ্ত। হালিশহর পুরসভাও তৃণমূলের হাতছাড়া হয়েছে। ফলে, সেখানেও মুখ্যমন্ত্রীকে ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি শুনতে হতে পারে বলে আশঙ্কা তৃণমূল নেতৃত্বের। তবে আজ রাস্তায় যথেষ্ট সংখ্যক দলীয় কর্মী-সমর্থক রাখার পরিকল্পনা করেছে তৃণমূল।
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।