—ফাইল চিত্র।
জলপাইগুড়ির পাশাপাশি রবিবারের ঘূর্ণিঝড়ে তছনছ হয়েছে আলিপুরদুয়ারেরও একাংশ। সোমবার জলপাইগুড়ি থেকে আলিপুরদুয়ারের সেই সব ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় গেলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এলাকা পরিদর্শনের পর মুখ্যমন্ত্রী জানান, তিনি এক রকম ঝুঁকি নিয়েই আলিপুরদুয়ারে এসেছেন। তিনি বলেন, ‘‘হেলিকপ্টার দিনে তিন ঘণ্টার বেশি উড়তে পারে না। কিন্তু আমি কলকাতা থেকে যে কপ্টারে এসেছি, সেই কপ্টারেই আবার আলিপুরদুয়ারে আসতে হল। এক রকম ঝুঁকি নিয়ে আসতে হল আমাকে।’’
রবিবার কয়েক মিনিটের ঝড়ে আলিপুরদুয়ার ১ ব্লকের চকোয়াখেতি, তপসিখাতা এলাকাতেও ক্ষয়ক্ষতি হয় বহু বাড়িতে। আলিপুরদুয়ার ২ ব্লকের পাশাপাশি কুমারগ্রাম ব্লক, আলিপুরদুয়ার এক ব্লক-সহ একাধিক জায়গায় শিলাবৃষ্টির জেরে টোম্যাটোর পাশাপাশি একাধিক ক্ষেতে ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। ঝড়ে বড়-বড় গাছ ভেঙে পড়ে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে একাধিক এলাকা। অনেকেই আশ্রয়হীন। তাঁদের ত্রাণশিবিরে রাখা হয়েছে। সোমবার দুপুরে আলিপুরদুয়ারের ছ’মাইলের একটি প্রাথমিক স্কুলের ত্রাণশিবিরে যান মুখ্যমন্ত্রী। কথা বলেন দুর্গতদের সঙ্গে। পরে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে মমতা বলেন, ‘‘তপসিঘাটা গ্রামে রিলিফ ক্যাম্পে যাঁরা আছেন, সেই পরিবারগুলির সঙ্গে কথা বলেছি, তাঁদের বক্তব্য শুনেছি। চোখের সামনে যে ঘরগুলি দেখলাম, সেগুলি পুরোটাই টিনে চাপা গড়ে গিয়েছে, গাছে চাপা পড়ে গিয়েছে। একটা জিনিসও লোকে ঘর থেকে বার করতে পারেনি। এই তপসিঘাটা স্কুলে তাঁরা আশ্রয় নিয়েছেন।’’
মুখ্যমন্ত্রীর সংযোজন, ‘‘এখন এমসিসি (নির্বাচনী আচরণবিধি) চালু আছে, কিন্তু বিপর্যয় জরুরি বিষয়। বিপর্যয় ব্যতিক্রমী বিষয়। আমাদের সরকার আছে, প্রশাসন আছে। আমি প্রশাসনকে বলব, সমীক্ষা করে দেখুক এবং নিজের মতো করুক। কার কতটা ঘর ভেঙেছে, কতটা আংশিক ভেঙেছে, কতটা পুরো ভেঙেছে। যাদের বাড়িতে কিচ্ছু নেই, প্রশাসন তাদের জন্য সাহায্যের হাত গতকাল থেকেই বাড়িয়েছে। মানুষ বিপদে পড়লে তাঁকে উদ্ধার করাই আমাদের কাজ।’’
ঝড়ে কোচবিহারের একাংশও তছনছ হয়েছে। কোচবিহার ২ নম্বর ব্লকের মরিচবাড়ি খোল্টা গ্রাম পঞ্চায়েতের ডুডুমারি, দলদলি, মরিচবাড়ি, খোচাবাড়ি এলাকায় ঝড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। মাথাভাঙাতেও কয়েক মিনিটের ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কয়েকটি এলাকা। চিকিৎসাধীন অনেকে। মাথাভাঙা ১ ব্লকের কুর্শামারি পচাগড় গ্রাম পঞ্চায়েতের বড় কাওয়ারডারা এলাকায় ব্যাপক ঝড়ের তাণ্ডব চলে। উড়ে যায় বহু বাড়ির ঘরের চাল। ঘরের উপর গাছ ভেঙে পড়েছে। উপড়ে পড়ে বিদ্যুতের খুঁটি। আলিপুরদুয়ার থেকে মমতা জানান, মঙ্গলবার তিনি মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসকে কোচবিহারে পাঠাবেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘কুমারগ্রামের ত্রাণশিবিরে যাবে অরূপ। কোচবিহারেও ক্ষতি হয়ে থাকলে প্রশাসন পদক্ষেপ করবে। সেই মতোই নির্দেশ দেওয়া আছে।’’