ফাইল চিত্র।
স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে রোগী প্রত্যাখ্যান কড়া হাতে বন্ধ করতে এবং ভিন্ রাজ্যে ওই প্রকল্পে চিকিৎসায় রাশ টানতে বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। শনিবার সে বিষয়ে রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম-সহ অন্যান্য আধিকারিকের সঙ্গে বৈঠক করেছেন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী।
প্রশাসন সূত্রের খবর, স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের পাশাপাশি নির্দিষ্ট পোর্টালের মাধ্যমে অপুষ্টিতে ভোগা সদ্যোজাতদের উপর নিরবচ্ছিন্ন পর্যবেক্ষণ, জন্ম-মৃত্যু পোর্টালের অগ্রগতি, স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়েছে। সূত্রের খবর, আগামী মাসে ফের এ নিয়ে বৈঠক ডাকতে চলেছেন মুখ্যসচিব। প্রশাসনের অন্দরে জল্পনা, বর্তমান আর্থিক পরিস্থিতিতে ‘অপ্রয়োজনীয়’ খরচে রাশ টানতে চাইছে সরকার। তারই প্রস্তুতি শুরুর বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই বার্তাকে কার্যকরী করার জন্যই মুখ্যসচিবের এই বৈঠক।
সম্প্রতি রাজ্যের স্বাস্থ্য কর্তা এবং জেলাশাসকদের সঙ্গে বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, কোনও নার্সিংহোম স্বাস্থ্যসাথী কার্ড প্রত্যাখ্যান করলে তাকে কারণ দর্শাতে বলা হবে। প্রয়োজনে কড়া পদক্ষেপও করা হবে। মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, “খুব ক্রিটিক্যাল, যেটার চিকিৎসা নেই, সেটা ছাড়া বাইরে যাওয়া উচিত নয়।” এ ব্যাপারে মুখ্যসচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটিও গড়ে দেন তিনি। তবে প্রশাসনের একাংশের মতে, শীর্ষ মহলের নির্দেশ এলেও এ ব্যাপারে তড়িঘড়ি পদক্ষেপ করা মুশকিল। তাই আগামী এক মাসে গতিপ্রকৃতি বুঝে নিতে চাইছেন প্রশাসনের শীর্ষ কর্তারা।
অপুষ্টির শিকার শিশুদের উপরেও নজর দিতে চাইছে রাজ্য। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, নির্দিষ্ট সময় অন্তর প্রসূতিদের ওজন এবং উচ্চতার হিসেব কষে গর্ভস্থ শিশুর ওজন নেওয়া হয়। বাচ্চা জন্মানোর পরে তার ওজন নেওয়া হয়। এ বার বাড়ি যাওয়ার পরে ৭, ১৪, ২৮, ৪২তম দিনে গিয়ে আশা কর্মীরা শিশুর ওজন নেন। এ বার থেকে সেই সমস্ত তথ্য মাতৃ-মা প্রকল্পের পোর্টালে নথিভুক্ত থাকবে। যাতে ঝুঁকিপূর্ণ প্রসূতি এবং অপুষ্টিতে কোনও শিশু আক্রান্ত হচ্ছে কি না তা সহজেই চিহ্নিত করতে পারে স্বাস্থ্য দফতর। এক আধিকারিক জানান, ২৮তম দিনে স্বাভাবিক ভাবে যে ওজন থাকার কথা তার থেকে কোনও শিশুর ওজন কম হলে তাকে চিহ্নিত করা হবে। কেন শিশুর পর্যাপ্ত পুষ্টি হচ্ছে না, সেই বিষয়ে জানতে সংশ্লিষ্ট বাড়িতে গিয়ে মায়ের কাউন্সেলিং করবেন আশা কর্মী ও স্বাস্থ্য কর্মীরা। শিশুকে স্তন্যপান করাতে কোনও সমস্যা কিংবা মায়ের কোনও উপসর্গ দেখা দিচ্ছে কি না, তা খোঁজ নেবেন কর্মীরা। সেই উত্তরও পোর্টালে নথিভুক্ত করা হবে। অন্য দিকে, জন্ম-মৃত্যুর শংসাপত্র পেতে একটি পোর্টাল সম্প্রতি চালু করেছে রাজ্য। সূত্রের খবর, সেই পোর্টালে তথ্য ঠিকমতো নথিবদ্ধ করার ব্যাপারেও জোর দিয়েছেন মুখ্যসচিব।