মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।—ছবি পিটিআই।
দিল্লির সাম্প্রতিক হিংসাকে ‘পরিকল্পিত গণহত্যা’ বলে চিহ্নিত করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই ঘটনার জন্য বিজেপিকে দায়ী করে দিল্লিতে ‘গুজরাত মডেল’ নিয়ে আসা হয়েছে বলেও নিশানা নির্দিষ্ট করেছেন তৃণমূলনেত্রী। সুপ্রিম কোর্টের তত্বাবধানে ঘটনার তদন্তও চেয়েছেন তিনি।
সোমবার নেতাজি ইন্ডোরে অনুষ্ঠিত দলীয় নেতা-কর্মী-জনপ্রতিনিধিদের এক সভায় মমতা বলেন, ‘‘এটা দাঙ্গা নয়। পরিকল্পনা করে গণহত্যার পরে দাঙ্গার চেহারা দেওয়া হয়েছে। প্রতিদিন নালা খুঁড়ছে আর লুকানো দেহ উদ্ধার হচ্ছে।’’ তিনি প্রশ্ন তোলেন, পুলিশ ও একাধিক কেন্দ্রীয় বাহিনী এবং সেনা থাকা সত্ত্বেও এই ঘটনা ঘটল কীভাবে? এই ঘটনার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের ক্ষমা চাওয়া উচিত বলেও মন্তব্য করেন তিনি। দিল্লির দাঙ্গায় ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্যের জন্য দলের তরফে একটি তহবিল তৈরির কথাও মমতা এদিন জানিয়েছেন। দিল্লির হিংসার ঘটনা নিয়ে কংগ্রেসের ভূমিকারও সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘‘ওদের তো সারা দেশে সংগঠন আছে। কেন প্রতিবাদ নেই?’’
রবিবারই কলকাতায় এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতার বিরুদ্ধে রাজ্যে দাঙ্গা করানোর অভিযোগ করেছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। এদিন পাল্টা আক্রমণে তৃণমূলনেত্রী বলেন, ‘‘দিল্লির পুলিশ তো কেন্দ্রের। পুলিশ দাঁড়িয়ে দেখেছে। কেন্দ্রের হাতে সিআরপিএফ, সিআইএসএফ। সেনাবাহিনীও ছিল। তা সত্ত্বেও শিখ দাঙ্গার পরে এত বড় দাঙ্গা হল কেন?’’ নাম না করেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দিকে ইঙ্গিত করে মমতা বলেন, ‘‘এ সব করার জন্য বিজেপির তো ক্ষমা চাওয়া উচিত ছিল। ক্ষমা চাইল না। ক্ষমা চাওয়া তো দূরের কথা, নির্লজ্জের মতো এখানে এসে বলছে, আমাকে দখল নিতে হবে। যেখানে দখল নিয়েছে সেখানে দাঙ্গা করেছে।’’ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে তাঁর প্রশ্ন, ‘‘কাকে নাগরিকত্ব দেবেন? উদ্বাস্তুরা সকলেই নাগরিক। নতুন করে সিএএ করলেন কেন? জনগনের রক্ত খাওয়া হবে বলে?’’
শহিদ মিনারের সভায় বাংলার ‘আইনশৃঙ্খলা বলতে কিছু নেই’ বলে মন্তব্য করেছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। এদিন মমতার জবাব, ‘‘এখানে এসে আইনশৃঙ্খলা নিয়ে কথা বলছেন! যেখানে জিতেছে সেখানে মানুষকে রক্ত উপহার দিয়েছে। দাঙ্গা করেছে। অসমে দাঙ্গা করেছে। ত্রিপুরায় কারও কথা বলার অধিকার নেই। উত্তরপ্রদেশে মেয়েরা অত্যাচারিত হয়ে অভিযোগ করলে তাঁকে পুড়িয়ে মারা হয়। তা না হলে পরিবারের লোকেদের পুড়িয়ে মারা হয়। কোনও বিচার নেই। বাংলায় বিচার হয়।’’