ছবি: পিটিআই।
বিজেপির বিরুদ্ধে আক্রমণে এ বার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সামনে আনলেন পড়শি দুই রাজ্য অসম এবং ত্রিপুরাকে। বঙ্গভাষী অধ্যুষিত বিজেপি-শাসিত এই দুই রাজ্যের একের পর এক ‘পরিস্থিতি’ তুলে ধরে তৃণমূল নেত্রী বোঝাতে চান ওই দুই রাজ্যে মানুষ কত ‘কষ্টে’ রয়েছেন। বিধানসভা ভোটের দিকে তাকিয়ে তৃণমূলের শারদ-সংখ্যার নিবন্ধে ওই দুই রাজ্যের নানারকম ‘নেতিবাচক’ দৃষ্টান্ত তুলে ধরে এ রাজ্যেও বিজেপির বিরুদ্ধে মমতা বার্তা দিতে চেয়েছেন বলে পর্যবেক্ষকদের অভিমত।
শনিবার সন্ধ্যায় নজরুল মঞ্চে তৃণমূলের শারদ সংখ্যা প্রকাশ করে মমতা বলেনও, ‘‘যে যতই চেষ্টা করুন না কেন, বাংলাকে কেউ কারও থেকে কেড়ে নিতে পারবে না।’’ ওই শারদ সংখ্যাতেই তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী স্পষ্ট লিখেছেন, ২০২১ সালের ভোট কঠিন লড়াই।
‘কিছু কথা কিছু ব্যথা’ শীর্ষক নিবন্ধে মমতা তুলে ধরেছেন এনআরসি-বিদ্ধ অসমের কথা। অসমবাসীর পাশে দাঁড়াতে সেখানে তিনি যে তৃণমূলের প্রতিনিধিদলকে পাঠিয়েছিলেন, সেই ঘটনার কথাও উল্লেখ করেছেন তাঁর লেখায়। তিনি লিখছেন, ‘বাংলার সাথে আশপাশের প্রতিবেশী রাষ্ট্র ও রাজ্যগুলোর সম্পর্ক বরাবর ভাল। তারা ভাল থাকলে আমরা ভাল থাকি। তারা দুঃখে থাকলে আমরা কষ্ট পাই’।
ত্রিপুরা প্রসঙ্গে মমতা লিখেছেন, ‘ত্রিপুরায় গণতন্ত্র কাঁদছে।...ওই রাজ্যে ভোট মানে এখনও প্রহসন’। বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে মমতার অভিযোগ, ‘ত্রিপুরায় আইনশৃঙ্খলার অবস্থা খুব খারাপ। কিছু সমাজবিরোধীদের হাতে চলে গিয়েছে আগরতলা শহর। অপূর্ব সুন্দর একটি রাজ্যকে তছনছ করে দিল বিজেপি।’ ওই রাজ্যে ‘অরাজকতা’র দৃষ্টান্ত তুলে ধরতে মমতার দাবি, ‘একটি তথ্যে দেখেছিলাম, ১৭ মাসে তিন জন মুখ্যসচিবকে সরানো হয়েছে। ডিজিকে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। কথা না শুনলে হয় বদলি, নয় বরখাস্ত করা হয়েছে। এক আইএএস অফিসার ইস্তফা দিয়েছেন’।
তুলনায় তৃণমূল শাসিত পশ্চিমবঙ্গ ‘স্বস্তি’তে রয়েছে বলে দাবি করে মমতা লিখেছেন, ‘বিজেপি এমন একটা দল, যাদের উন্নয়ন নিয়ে কোনও কথা নেই। মানুষের পরিষেবা নিয়ে একটি শব্দ নেই। শুধু মিথ্যা আর কুৎসা’। বাংলার জন্য এর পরেই তাঁর পরামর্শ, ‘ভুলে যাবেন না ত্রিপুরার জনসংখ্যা ৩৭ লাখ। বাংলায় ১০ কোটি। লোকসভা ভোটে সিপিএমের ভোটে ক’টা আসন জিতে সন্ত্রাসের রাজনীতি কায়েম করতে চাইছে। এই রাজ্যে কোনও দিন ওদের আসতে দেবে না মা-মাটি-মানুষ।’