অস্থিরতা তৈরি করছে সিপিএম, কংগ্রেস, বিজেপি, দাবি করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।
বিগত বেশ কিছুদিন ধরে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে আক্রান্ত হতে হচ্ছে পুলিশকে। কোনও ঘটনা ঘটলেই মানুষের ক্ষোভের শিকার হচ্ছে পুলিশ। বিরোধীদের দাবি, মানুষের বিরক্তির প্রতিফলন ওই সব ঘটনা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাল্টা দাবি, অস্থিরতা তৈরি করছে সিপিএম, কংগ্রেস, বিজেপি সম্মিলিত ভাবে।
মঙ্গলবার নবান্নের সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, ‘‘সিপিএম, বিজেপি, কংগ্রেস তাদের সভায় বারবার বলে পুলিশ পেটাও। অনেক তথ্য আছে আমার কাছে। রোজ উৎসাহ দেয়।’’ তিনি মনে করিয়ে দিয়েছেন, ‘‘পুলিশ রক্ষক। তারা না থাকলে শান্তি থাকবে না।’’ মমতার ঘোষণা, ‘‘পুলিশকে যারা পেটাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা উচিত।’’
সম্প্রতি পুলিশের উপরে আক্রমণের একাধিক ঘটনা ঘটেছে। গত ২৫ এপ্রিল এক নাবালিকার মৃত্যুর ঘটনার প্রতিবাদে মিছিল হচ্ছিল উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জে। সেই মিছিল হঠাৎই মারমুখী হয়ে ওঠে বলে অভিযোগ। তাদের একটি অংশ কালিয়াগঞ্জ থানা আক্রমণ করে। সেখান থেকে কয়েক জন পুলিশ গিয়ে আশপাশের বাড়িতে আশ্রয় নেন। তাঁদের মধ্যে মহিলা পুলিশও ছিলেন। মারমুখী জনতার একটি অংশ ঘরে ঢুকে সেই পুলিশদের উপরে চড়াও হয় বলে অভিযোগ। কালিয়াগঞ্জ থানাতে আগুনও ধরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে।
মঙ্গলবার পূর্ব মেদিনীপুরের এগরাতেও পুলিশ গেলে তাদের উপরে স্থানীয় গ্রামবাসীরা চড়াও হন বলে অভিযোগ। কেন বার বার অভিযোগ জানানো সত্ত্বেও এলাকায় বাজি তৈরির কারখানা রয়ে গিয়েছিল, সেই প্রশ্ন তুলে পুলিশের কলার ধরে টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে যাওয়া, মারধরের দৃশ্য দেখা গিয়েছে বলে স্থানীয়দের দাবি। পরে বড় বাহিনী এসে পরিস্থিতি সামাল দেয়।
এর আগে ধান কাটার যন্ত্র নিয়ে ফেরার পথে রাস্তার উপরে থাকা ১১ হাজার ভোল্ট ক্ষমতা সম্পন্ন বিদ্যুৎবাহী তারের সংস্পর্শে এসে উত্তর প্রদেশের দুই যুবকের মৃত্যুর ঘটনায় রবিবার উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল বীরভূমের সদাইপুর থানার রেঙ্গুনি গ্রাম। স্থানীয়দের অভিযোগ ছিল, বিদ্যুৎ দফতরকে বহুবার বলা সত্ত্বেও নিচু হয়ে ঝুলে থাকা তার সরায়নি দফতর। দেহ উদ্ধারে গিয়ে স্থানীয়দের হেনস্থার মুখে পড়ে পুলিশ। পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট ছুড়তে থাকে উত্তেজিত জনতা। ইটের ঘায়ে এবং পড়ে গিয়ে দুই পুলিশ কর্মী জখম হন।
অতীতে বার বার আইনশৃঙ্খলার কোনও ঘটনায় কখনও পুলিশের ভূমিকার খোলাখুলি সমর্থন করেছেন মমতা, কখনও তাদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। এগরার বিস্ফোরণ-ঘটনায় স্থানীয় পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী তথা পুলিশমন্ত্রী। জানিয়েছেন, এগরা থানার আইসি-কে কারণ দর্শানোর নোটিস দেওয়া হয়েছে। পদক্ষেপ করা হবে তাঁর বিরুদ্ধে। এই প্রসঙ্গেই মমতা বলেন, ‘‘একটা ঘটনা ঘটে গেলে মানুষ বিক্ষোভ করতে পারেন। তাদের বিক্ষোভটা সঙ্গত বলে মনে করি। কিন্তু কথায় কথায় পুলিশকে কেন পেটাবে? তারা কী করেছে?’’