ফাইল চিত্র।
কেন্দ্রীয় বাজেটের পরে বলেছিলেন, আলুসেদ্ধ মাখার তেল পাবেন না। বুধবার এক ধাপ এগিয়ে কেরোসিনে ভর্তুকি তোলার প্রসঙ্গ টেনে বললেন, এর পরে ঘরে কুপিও জ্বালাতে পারবেন না।
আলিপুরদুয়ারের যে মঞ্চ থেকে এ দিন এই কথা বলে বিজেপিকে আক্রমণ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তার থেকে কয়েক কিলোমিটারের মধ্যে এমন সব বসতি আছে, যেখানে আজও কেরোসিনের কুপি জ্বলে। পর্যবেক্ষকদের মতে, সেই সাধারণ লোকজন তো বটেই, এ দিন মুখ্যমন্ত্রীর লক্ষ্যই ছিল রাজ্যের সাধারণ গরিব মানুষ। তাই তিনি কেন্দ্রীয় বাজেটকে ‘গরিব, কৃষক, শ্রমিক বিরোধী’ তো বলেইছেন, পাশাপাশি বিজেপির সোনার বাংলা স্লোগানকে কটাক্ষ করে বলেন, “আমাদের সোনা চাই না, ‘রুটি-কাপড়া-মকান’ চাই।” আর সেটা যে তাঁর সরকারই দিতে পারবে, সেই আশ্বাস ও প্রতিশ্রুতিও দেন বক্তৃতার আগাগোড়া। বলেন, “তিন দিন পরে আমাদেরও বাজেট (ভোট অন অ্যাকাউন্ট) হবে। আমরা গরিব সরকার হতে পারি, কিন্তু মানুষের বিরুদ্ধে কোনও কাজ করি না।”
বছর দেড়েক আগে আলিপুরদুয়ার লোকসভায় পর্যুদস্ত হয়েছিল তৃণমূল। জেলার সব ক’টি কেন্দ্রে এগিয়ে ছিল বিজেপি। সেই প্রেক্ষাপটে এ দিন কিন্তু মমতার কর্মিসভায় তিলধারণের জায়গা ছিল না। পর্যবেক্ষকদের মতে, এই জমায়েতে এমন অনেকে রয়েছেন, যাঁদের ঘরে কেরোসিন জরুরি সামগ্রী। আলিরপুরদুয়ার জেলায় প্রচুর জনজাতি পরিবারের বাস। চা শ্রমিক এবং জনজাতি বাড়িতে এখনও কেরোসিন তেলের লম্ফ বা কুপি দেখতে পাওয়া যায়। এখনও বাগানের ঘরে ঘরে রেশনে পাওয়া কেরোসিন তেলের চাহিদা যথেষ্ট। ডুয়ার্সের গ্রামে খোলাবাজারেও আকছার কেরোসিন তেল মেলে। তাই এই নিত্যপণ্যটির মূল্যবৃদ্ধির কথা বলে সরাসরি ওই মানুষজনের দুর্ভোগের অংশীদার হওয়ার চেষ্টা করলেন মমতা।
বিজেপি নেতারা অবশ্য বলেন, এ বারের কেন্দ্রীয় বাজেট সাধারণ মানুষের কথা মাথায় রেখেই হয়েছে। তবে সরাসরি কেরোসিনে ভর্তুকি তুলে দেওয়া নিয়ে কিছু বলতে চাননি জলপাইগুড়ির বিজেপি সাংসদ জয়ন্ত রায়। তিনি বলেন, “কেন্দ্রীয় বাজেটের ছত্রে ছত্রে সাধারণ মানুষের কথা আছে। কারও কোনও মন্তব্যে সেই সত্য বদলাবে না।”