বিধানসভায় সংবিধান দিবসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।—ছবি পিটিআই।
মহারাষ্ট্রের পটপরিবর্তন টেনে কেন্দ্রীয় সরকারকে আক্রমণ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার সংবিধান দিবসে তিনি বলেন, ‘‘ফ্রিডম অ্যাট মিড নাইট শুনেছি। গভর্নমেন্ট অ্যাট মিড নাইট শুনিনি। মাঝে মাঝে মনে হয় রাত জেগে পাহারা দিতে হবে।’’
মহারাষ্ট্রে বিজেপি রাতারাতি যে সরকার গঠন করেছিল, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পর তা ভেঙে গিয়েছে। এদিন রাজ্য বিধানসভায় সংবিধাননের ৭০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে অনুষ্ঠিত আলোচনায় তা নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘কলমের এক খোঁচায় সংবিধানের সার্থকতা রক্ষা করেছে সুপ্রিম কোর্ট। একটা সরকার পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছে।’’ তারপরই তিনি বলেন, ‘‘একটা পার্টি জিততে পারে, একটা পার্টি হারতে পারে। যে যতই অহঙ্কার করুন, মনে রাখতে সব শেষে জনগণই গুরুত্বপূর্ণ।’’ সংবিধান দিবসের জন্য নির্দিষ্ট বিশেষ অধিবেশনে আলোচনার ফাঁকে মহারাষ্ট্রের বিষয়টি উল্লেখ করেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। উপস্থিত সদস্য ও অতিথিদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘‘গণতন্ত্র বিপন্ন নয়। মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন।’’ স্পিকারের এই ঘোষণায় উপস্থিত বিধায়কদের বড় অংশই টেবিল চাপড়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন।
রাজনৈতিক স্তরে বিজেপির বিরুদ্ধে সরকার ভাঙাগড়ার ‘খেলা’ নিয়ে আগেই সরব হয়েছে তৃণমূল। এদিন একটু ঘুরিয়ে সে দিকে ইঙ্গিত করে বিধানসভার বক্তৃতায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘সকাল-সন্ধ্যা ভয় দেখানো হচ্ছে। কখনও এজন্সি দিয়ে, কখনও অন্য কোনও সংস্থা দিয়ে। ভয়ে সারা দেশ কাঁপছে।’’ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘এখনও দেশে এমন কিছু মানুষ আছেন, যাঁরা জেলে যেতে পারেন তবে আপনাদের কোলে যাবেন না।’’
সংবিধান দিবসের বক্তৃতাতে বিজেপি শাসনে ‘গণতন্ত্র’ নিয়ে অভিযোগ করে কাশ্মীরের কথা তোলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘ফারুক আবদুল্লার কী হল! তাঁর ব্যাপারে কথা বলতে পারব না! নিশ্চই বলব। বাক্ স্বাধীনতা আছে। কথা বলার অধিকার আছে। দেশটা বাচ্চার হাতের মোয়া নয়।’’
এদিনই মহারাষ্ট্রের প্রসঙ্গ টেনে পশ্চিমবঙ্গে রাজ্যপালের ভূমিকা নিয়ে দিল্লিতে ফের সরব হয়েছে তৃণমূল। তৃণমূলের সংসদীয় দলের নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমাদের রাজ্যেও রাজভবন থেকে সরকার চালাতে চেষ্টা করছেন রাজ্যপাল। যা তিনি পারেন না। তাই রাজ্যপাল পদের প্রয়োজনীয়তা নিয়েই আমরা সংসদে আলোচনা চাই।’’