পুলিশকে ধমক মুখ্যমন্ত্রীর। —ফাইল চিত্র
মালদহ জেলায় পথ দুর্ঘটনা বৃদ্ধি ও ঘন ঘন ঝাড়খণ্ড দিশম পার্টির পথ অবরোধকে ঘিরে পুলিশের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী এতটাই ক্ষুব্ধ হন যে, পুলিশকে চাকরি ছেড়ে দিয়ে নাটক করা ও গানের দল গড়ার ‘পরামর্শ’ দেন। ঝাড়খণ্ড দিশম পার্টির পথ অবরোধ নিয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে ‘ব্যালেন্স’ খেলারও অভিযোগ তোলেন মুখ্যমন্ত্রী। শুধু তাই নয়, এর পিছনে কারা আছে জানতে এসটিএফ, সিআইডি ও এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চকে দিয়ে তদন্ত করাতেও বলেন। কী ভাবে সামলানো হবে এই সমস্যা, তার পথও বাতলে দেন তিনি। বলেন, প্রয়োজনে অবরোধকারীদের ‘কাউন্সেলিং’ করতে হবে পুলিশকে। পাশাপাশি দিশম পার্টির এই কাজের বিরুদ্ধে স্থানীয় আদিবাসীদের নিয়ে পাল্টা আন্দোলনে নামতেও দলের নেতাদের নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। জেলা পরিষদের প্রাক্তন সভাধিপতি সরলা মুর্মুরা কেন চুপ, সেই প্রশ্নও তিনি তোলেন।
এ দিন প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী জানতে চান, ‘সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ’ কর্মসূচি থাকা সত্ত্বেও মালদহে এ বছর পথ দুর্ঘটনা বাড়ল কেন? পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া সচেতনতা কর্মসূচি বাড়ানো এবং যানজট কমাতে বাড়তি পুলিশ রাখার কথা বলেন। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে থামিয়ে দেন। এর পরেই ওঠে ঝাড়খণ্ড দিশম পার্টির অবরোধের প্রসঙ্গ। মুখ্যমন্ত্রী পুলিশকে নিশানা করে প্রশ্ন তোলেন, এই দলটি এত পথ অবরোধ করে কী করে? তিনি বলেন, ‘‘হবিবপুরের কাছাকাছি দু’টি লোক আছে। ঝাড়খণ্ড থেকে টাকা নিয়ে এসে এই কাজ করায়।’’ সরাসরি না বললেও স্থানীয় রাজনৈতিক মহলের দাবি, এই দু’জন বিজেপির বিধায়ক জোয়েল মুর্মু এবং সাংসদ খগেন মুর্মু। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, পুলিশ কিছু করে না। তাঁর কথায়, ‘‘দু’টি লোকের জন্য সমস্যা হচ্ছে। কত বড় নেতা তারা? কোনও একটা রাজনৈতিক দলের মদতে রাস্তা অবরোধ হবে, আর পুলিশ কেন ভয় পাবে? এত ভয় তো পুলিশের চাকরি করতে হবে না। পুলিশের চাকরি ছেড়ে নাটক করুন। বা গানের দল করুন, একদম সেফ।’’
খগেন মুর্মু বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী এখন সব কিছুতেই বিজেপি জুজু দেখছেন। তিনি বুঝে গিয়েছেন যে আদিবাসীরা তাঁর দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। তাই, বিভ্রান্তিকর কথাবার্তা বলে বাজার গরম করতে চাইছেন তিনি। কিন্তু তাতে কিছু লাভ হবে না।’’