(বাঁ দিকে) অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (ডান দিকে)। ছবি: ফেসবুক।
কেন্দ্রীয় বঞ্চনার বিরুদ্ধে এবং বকেয়া মেটানোর দাবিতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে যাঁরা দিল্লিতে গিয়েছিলেন, তাঁদের পাওনা টাকা মেটাতে শুরু করেছেন তৃণমূলের ‘সেনাপতি’। দিল্লি থেকেই তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, কেন্দ্রীয় সরকার যদি দু’মাসের মধ্যে বকেয়া না মেটায়, তবে শ্রমিকদের টাকা ব্যক্তিগত ভাবে দেবেন। কিন্তু এত টাকা কোথায় পাচ্ছেন অভিষেক? প্রশ্ন তোলে বিজেপি। বুধবার বিধানসভায় সেই প্রশ্নের জবাব দিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মমতা জানান, তাঁর দলের সাংসদেরা একত্রে এই টাকার ব্যবস্থা করেছেন। সকলে সম্মিলিত ভাবেই বকেয়া টাকা মেটানোর চেষ্টা করেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘আমার দলের সাংসদেরা প্রত্যেকে এক লক্ষ টাকা করে দিয়েছেন। নিজেদের বেতন থেকে তাঁরা ওই টাকা দিয়েছেন। দিল্লিতে যে তিন হাজার মানুষ অভিষেকের সঙ্গে গিয়েছিলেন, তাঁদের বকেয়া সেই টাকা দিয়ে মেটানো হচ্ছে।’’
এর পাশাপাশি, বিজেপিকে কটাক্ষ করে তাঁর বক্তব্য, ‘‘এমন বিরোধী দল, যারা বলে আসছে টাকা দেবে না! গরিব মানুষ কি কিছুই পাবে না?’’
লোকসভায় তৃণমূলের সাংসদ সংখ্যা ২২। রাজ্যসভায় ১৩ জন সাংসদ রয়েছেন তৃণমূলের। অর্থাৎ, মোট ৩৫ জন সাংসদ তাঁদের বেতন থেকে এক লক্ষ টাকা করে দিয়েছেন। এ ভাবে ৩৫ লক্ষ টাকা ওঠার কথা। মমতার কথা অনুযায়ী, তা থেকেই শ্রমিকদের বকেয়া মেটানো হচ্ছে।
উল্লেখ্য, ১০০ দিনের কাজ-সহ বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্পের বকেয়া টাকার দাবিতে গত ২-৩ অক্টোবর দিল্লিতে আন্দোলন করেছিলেন অভিষেক। তাঁর সঙ্গে দলের নেতাকর্মীরা ছাড়াও রাজধানীতে গিয়েছিলেন বহু ‘বঞ্চিত’ শ্রমিক। অভিযোগ, কাজ করেও তাঁরা তাঁদের প্রাপ্য মজুরি পাননি। শুধু ১০০ দিনের কাজ নয়। আবাস যোজনা, গ্রামসড়ক যোজনার টাকাও কেন্দ্রীয় সরকার আটকে রেখেছে বলে দাবি তৃণমূলের। সম্প্রতি জানা যায়, দিল্লিতে যাওয়া শ্রমিকদের বকেয়া মেটাতে শুরু করেছেন অভিষেক। টাকার সঙ্গে তাঁদের কাছে যাচ্ছে একটি করে চিঠি। তাতে অভিষেক লিখেছেন, ‘‘প্রতিশ্রুতি মতো আর্থিক সাহায্য পাঠালাম। সপরিবার ভাল থাকুন। লড়াইয়ে থাকুন। মা-মাটি-মানুষের আন্দোলনে থাকুন। বকেয়া আদায়ের এই অধিকারের লড়াই চলতে থাকবে। জনবিরোধী, বাংলাবিরোধী কেন্দ্রের বিরুদ্ধে এই লড়াই আমরা জিতবই।’’
অভিষেকের এই উদ্যোগ প্রকাশ্যে এলে বিজেপি পাল্টা প্রশ্ন তোলে। দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘‘কে কাকে অর্থ দিচ্ছেন জানি না। তবে সরকারি টাকা ব্যক্তিগত ভাবে দেওয়া যায় বলে শুনিনি। যদি দেন, তবে পাপস্খালন করছেন। শ্রমিকদের বকেয়া টাকা চুরি করে তাঁদেরই ফেরত দেওয়া হচ্ছে। গরু-কয়লা পাচারের টাকা তো আর কম নেই।’’ বুধবার বিধানসভায় গিয়ে বিজেপির প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন মমতা।