অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
১০০ দিনের কাজ-সহ বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্পের বকেয়া টাকার দাবিতে গত ২-৩ অক্টোবর দিল্লিতে আন্দোলন করেছিলেন তৃণমূলের ‘সেনাপতি’ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। দিল্লির যন্তর মন্তরের কর্মসূচি থেকে তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তাঁর সঙ্গে ১০০ দিনের কাজের যে বঞ্চিতেরা দিল্লি পৌঁছেছেন, তাঁদের টাকা যদি কেন্দ্রীয় সরকার দু’মাসের মধ্যে না মেটায়, তা হলে তিনি ব্যক্তিগত ভাবে সেই টাকা দেবেন। সময়সীমা শেষ হওয়ার আগেই সেই কাজ শুরু করে দিলেন ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ অভিষেক।
তৃণমূলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ১০০ দিনের কাজের পারিশ্রমিক পাওয়ার ক্ষেত্রে যে ‘বঞ্চিত’ শ্রমিকেরা অভিষেকের কর্মসূচিতে দিল্লি গিয়েছিলেন, তাঁদের যাঁর যে পরিমাণ বকেয়া, তা পাঠানো শুরু করেছেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। গত শনিবার থেকে এই আর্থিক অনুদান পাঠানো হচ্ছে। পাশাপাশি, প্রত্যেকের নাম করে একটি চিঠিও লিখছেন অভিষেক।
অভিষেকের পাঠানো চিঠি। —সংগৃহীত।
সেই চিঠিতে লেখা রয়েছে, দিল্লির আন্দোলন ও তার পরবর্তী কালে রাজভবনের উত্তর ফটকের সামনে অভিষেকের ধর্নার কথা। পাশাপাশিই অভিষেক লিখেছেন, ‘‘প্রতিশ্রুতি মতো আর্থিক সাহায্য পাঠালাম। সপরিবার ভাল থাকুন। লড়াইয়ে থাকুন। মা-মাটি-মানুষের আন্দোলনে থাকুন। বকেয়া আদায়ের এই অধিকারের লড়াই চলতে থাকবে। জনবিরোধী, বাংলাবিরোধী কেন্দ্রের বিরুদ্ধে এই লড়াই আমরা জিতবই।’’
অন্য দিকে, এই টাকা দেওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিজেপি। দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘‘কে কাকে অর্থ দিচ্ছেন জানি না। তবে সরকারি টাকা ব্যক্তিগত ভাবে দেওয়া যায় বলে শুনিনি। যদি দেন, তবে পাপস্খালন করছেন। শ্রমিকদের বকেয়া টাকা চুরি করে তাঁদেরই ফেরত দেওয়া হচ্ছে। গরু-কয়লা পাচারে টাকা তো আর কম নেই।’’
১০০ দিনের কাজের টাকা নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তৃণমূলের অভিযোগ মূলত দু’টি। এক, কেন্দ্র প্রকল্পের টাকাই বন্ধ করে দিয়েছে। দুই, কাজ করানোর পরেও শ্রমিকদের মজুরি আটকে রেখেছে। বাংলার শাসক দলের দাবি, কেবল বকেয়া মজুরির পরিমাণই সাড়ে সাত হাজার কোটি টাকা। যদিও বিজেপির বক্তব্য, রাজ্য সরকার আগের টাকার হিসেব দেয়নি। তা যত দিন না দেবে, তত দিন নতুন করে কোনও টাকা পাঠানো হবে না।
উল্লেখ্য, শুধু ১০০ দিনের কাজ নয়। আবাস যোজনা, গ্রামসড়ক যোজনার টাকাও কেন্দ্রীয় সরকার আটকে রেখেছে বলে দাবি তৃণমূলের। গত ২৩ নভেম্বর তৃণমূলের বিশেষ অধিবেশন থেকে সর্বময় নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন, বকেয়ার দাবিতে ফের দিল্লিতে আন্দোলন করবে তৃণমূল। ডিসেম্বরের দ্বিতীয় বা তৃতীয় সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে সময় চাওয়া হবে। সময় দিলে ভাল, না হলে রাস্তাতেই আন্দোলন হবে। এবং এ বার দিল্লি অভিযানে থাকবেন মমতা নিজে। সে সব পর্বের আগে গত কর্সূচিতে যে কথা দিয়েছিলেন অভিষেক, তা রাখার পালা শুরু করে দিলেন তিনি।