ঝাড়গ্রামে আদিবাসী দিবসের অনুষ্ঠানে এক ছাত্রীর হাতে সাইকেল তুলে দিচ্ছেন মমতা। শুক্রবার। ছবি: ফেসবুক।
প্যারিসে অলিম্পিক্স প্রতিযোগিতার আবহেই ঝাড়গ্রামের মেয়েদের তিরন্দাজিতে পদক জয়ের স্বপ্ন দেখালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাদ্যায়। শুক্রবার ছিল আদিবাসী দিবস। সেই উপলক্ষেই ঝাড়গ্রামে এসেছিলেন মমতা। সেখানেই একটি জনসভায় মমতা বলেন, ‘‘আমি বিশ্বাস করি ঝাড়গ্রামের আর্চারি অ্যাকাডেমি থেকে এক দিন আমাদের মেয়েরা অলিম্পিক্সে যাবে। তারা অলিম্পিক্স জয় করবে। সেই উদ্দেশেই কিন্তু এগুলো করা হয়েছে।’’
আদিবাসী দিবস উপলক্ষে গত বছরেও ঝাড়গ্রামে এসেছিলেন মমতা। এ বারেও সেখানে এসে আদিবাসীদের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে যোগ দেন। নিজের শাড়ির উপরে আদিবাসীদের ঐতিহ্যবাহী শাড়িও জড়িয়ে নিতে দেখা যায় মুখ্যমন্ত্রীকে। পরে ঝাড়গ্রামের জন্য রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প এবং পরিকল্পনার কথা জানান মমতা। তিনি জানান, ঝাড়গ্রামে ২৯৩টি প্রকল্পে প্রায় ১৬৯ কোটি টাকা খরচ করেছে সরকার। ভবিষ্যতেও ঝাড়গ্রামের পর্যটন শিল্পের উন্নয়নের আরও পরিকল্পনা রয়েছে তাঁর। এমনকি, ঝাড়গ্রামে একটি ‘টাইগার সাফারি’ চালু করার ঘোষণাও করেছেন মমতা।
শুক্রবার মমতা ওই অনুষ্ঠানে ঝাড়গ্রামের পর্যটন প্রসঙ্গে আলোচনা করতে করতে হঠাৎই বলেন, ‘‘আপনাদের এখানে একটা ছোট্ট চিড়িয়াখানা আছে তাই তো? আমি আগামী দিনে আরও পর্যটক আকর্ষণের জন্য ঝাড়গ্রাম চিড়িয়াখানার উল্টো দিকে যে ৬৪ একর জমি আছে, তাতে একটা টাইগার সাফারি চালু করব। ১০ কোটি টাকা দিয়ে। যাতে অনেক পর্যটক আসে। দেখতে পায়। উত্তরবঙ্গে একটা করেছি। এখানেও করে দিচ্ছি।’’
এর পাশাপাশি ঝাড়গ্রামের স্বনির্ভর গোষ্ঠীর তৈরি জিনিসপত্র এবং কুটিরশিল্পের জিনিসপত্র বিক্রির জন্য একটি শপিং মল তৈরির কথাও বলেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বলেন, ‘‘একটা বিগবাজার হবে। তাতে শপিং মল থাকবে। আপনাদের তৈরি জিনিসপত্র থাকবে। আবার একটা সিনেমাহলও থাকবে। জিনিসপত্র বিক্রি হবে। আপনাদেরও আয় বাড়বে।’’
এর পরেই ঝাড়গ্রামের আর্চারি অ্যাকাডেমির প্রসঙ্গে কথা বলেন মমতা। তাঁর বক্তব্য, ‘‘২০ বছর আগে যখন অলিম্পিক্স হয়েছিল, আমি তখন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ছিলাম। তখন আমি পরিকল্পনা করেছিলাম আগামী ২০ বছরের। সমস্ত অ্যাকাডেমি করে প্লেয়ার তৈরি করা। এই আর্চারি অ্যাকাডেমিও তৈরি করেছি, যাতে ২০-২১ বছর বাদে ভারতীয় খেলোয়াড়েরা সম্মান অর্জন করতে পারে।’’ অলিম্পিক্স প্রসঙ্গে মমতার কথায় উঠে আসেন বিনেশ ফোগাটের কথাও। বিনেশের নাম না করে তিনি বলেন, ‘‘আমি ব্যথিত। যে মেয়েটি সোনা আনতে পারত, কী কারণে বা কেন কী ভাবে তাকে বঞ্চিত করা হল, সেটা দেশবাসী জানবে আগামী দিন। কিন্তু তাকেও আমি সংগ্রামী অভিনন্দন জানাই।’’