তৃণমূলের সব সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট থেকে নেত্রীর বক্তৃতা বুথে বুথে সম্প্রচারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। —ফাইল চিত্র।
চিরপরিচিত ধর্মতলার মঞ্চ নয়। করোনা-পরিস্থিতিতে জেরে ভরসা ‘ভার্চুয়াল’ মাধ্যম। সেই ‘ভার্চুয়াল’ মাধ্যম থেকেই মঙ্গলবার ২১ জুলাইয়ের সভা শুরু করলেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০২১-এর আগের শেষ ২১ জুলাইয়ে দলকে কী বার্তা দেন তৃণমূলনেত্রী? আপাতত সে দিকেই অধীর আগ্রহে তাকিয়ে তৃণমূল নেতা-কর্মী-সমর্থকেরা।
এক নজরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য:
• এ বারে ৫০ লাখ মানুষকে আমি স্পর্শ করতে পেরেছি।
• একুশে জুলাই দিচ্ছে ডাক, বিজেপি বাংলা থেকে বিদায় যাক।
• এত বড় সাহস, দিল্লির এক জন তাঁবেদার বা সুবেদার আমাকে ফোন করে বলছে, উপাচার্যদের শোকজ করবে। আমি বললাম, হাত দিয়ে দেখুন, ছাত্র আন্দোলন কাকে বলে, দেখতে পাবেন।
• কিন্তু ভুলেও যদি ওদের বিশ্বাস করো, তা হলে জীবনও যাবে, জীবিকাও যাবে।
• জনগণ সাবধান, আপনাদের করছি আহ্বান, বিজেপির সাথে আছে অনেক অনেক টাকা আর গান।
• মনে রাখবেন, ২১ মে বদলা নিয়ে বিজেপির জামানত জব্দ করে বুঝিয়ে দিতে হবে, বাইরে থেকে এসে বাংলাকে কব্জা করা যায় না।
• একটা ঘটনা ঘটলেই গাড়িগুলো জ্বালিয়ে দিচ্ছে। রাস্তায় বসে পড়ছে। যেন ওর রাস্তা। যেন দিল্লি থেকে এসে রাস্তাগুলো বানিয়ে দিয়েছে।
• বাংলা কিন্তু বেতন কাটেনি। সবাই সময় মতো বেতন পাচ্ছেন।
• এমপি ল্যাড বন্ধ করে দিয়েছে, বেতন কাটা হচ্ছে।
• কোভিডের নাম করে কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের ডিএ ফ্রিজ করে দেওয়া হয়েছে।
• নির্বাচনকে বিজেপি একটা নোংরা খেলায় পরিণত করেছে। টাকা দিয়ে ভোট কেনে।
• আর বিজেপির রাজত্বে কথায় কথায় বঞ্চনা, অসম্মান, চক্রান্ত।
• সারা জীবন সিপিএমের হাতে মার খেতে খেতে আমার সারা শরীর ক্ষত বিক্ষত করে দিয়েছে।
• শান্তিতে ক’দিন কাজদ করতে পেরেছি। কেন্দ্রীয় সরকার টাকা দেয়নি। বঞ্চনা করেছে। কথায় কথায় অপমান করেছে।
• মনে রাখবেন, গুজরাত বাংলা শাসন করবে না। বাংলা বাংলা শাসন করবে।
• থানায় গিয়ে ডায়েরি করবেন? তার আগেই খুন করে দেবে। পুলিশকেও খুন করে দিচ্ছে।
• কী চলছে উত্তরপ্রদেশে? জঙ্গলরাজ বললেও কম হবে।
• আমরা বলি বাংলায় আইনশৃঙ্খলা না থাকলে কোথায় আছে?
• একটা দিল্লির সরকার, চক্রান্তের জোতদার বলছে, বাংলায় নাকি আইনশৃঙ্খলা নেই।
• কয়েকটা সিট পেয়ে যেন সারা পৃথিবী জয় করে নিয়েছে। গুন্ডামি করা, হি্ংসা করা, দাঙ্গা করা, চক্রান্ত করা।
• আমাদের রাজ্যে উপসর্গহীন ৮৭ শতাংশ। সামান্য উপসর্গ ৮ শতাংশ। গুরুতর সংক্রমণ ৫ শতাংশের। আমামাদের ডিসচার্জ রেট ৬০ শতাংশ।
• কোভিড একটু বেড়েছে। কিন্তু চিন্তা করার কিছু নেই।
• দিল্লি একটা ছোট্ট জায়গা। কলকাতার মতো। গুজরাত, ওড়িশা বাংলার অর্ধেক। অন্য রাজ্যের সঙ্গে বাংলার তুলনা হয় না। উত্তরপ্রদেশ বড় রাজ্য, তার পরেই কিন্তু বাংলা। মনে রাখবেন।
• বহিরাগতরা বাংলা চালাবে না।
• কেন্দ্রে ক্ষমতায় আছে বলে গায়ের জোর? কখনও বলছে এনকাউন্টার করো, কখনও বলছে হিংসা করো, আপনাদের রাজনৈতিক জন্ম কোথায়?
• প্রধানমন্ত্রী এলেন এক ঘণ্টার জন্য দয়া করে। এক হাজার কোটি টাকা দিলেন, আমরা সঙ্গে সঙ্গে সে টাকা খরচ করে দিয়েছি।
• আমপান হল, বিজেপির কী নাচানাচি বাপরে!
• ভাববেন না যে, কোভিড চলছে বলে এনসিআর ভুলে যাব।
• আমরা ভুলে যাইনি দিল্লির লড়াই।
• আমরা ভুলে যাইনি এনসিআর-এর লড়াই।
• আমাদের সরকার থাকলে সারা জীবন ফ্রি-তে রেশন পাবেন।
• যাঁরা আমপানে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত, তাঁরা ক্ষতিপূরণ পাবেন।
• আমপান ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য প্রায় সাড়ে ৬ হাজার ক্ষতি ছাড়া হয়েছে।
• সীমান্তে নিহত শহিদদের শ্রদ্ধা।
• দেশের সমস্ত শহিদকে স্মরণ করছি।
• দেশে ভয়ে অনেকে কথা বলতে পারছেন না।
• আগামী বছরে আরও বড় সভা হবে।
• ধর্মতলায় সভা করতে পারলাম না। আমরা ব্যথিত।
পূর্বনির্ধারিত সূচি অনুযায়ী এ দিন দুপুরে কালীঘাটের বাড়ির দফতর থেকে ২১ জুলাইয়ের তৃণমূলের সভা শুরু হয়। তৃণমূলের পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী কন্টেনমেন্ট এলাকা ছাড়া রাজ্যের সমস্ত বুথে এ দিন বেলা ১টায় দলীয় পতাকা উত্তোলন করেন তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা। পতাকা তুলে শহিদদের উদ্দেশে শ্রদ্ধা জানিয়ে বেলা ২টোয় কালীঘাট থেকে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে দলের নেতা-কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশে বক্তৃতা শুরু করেন মমতা। করোনা-পরিস্থিতির জেরে ধর্মতলায় ২১ জুলাইয়ের জমায়েত না হলেও তৃণমূলের সব সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট থেকে নেত্রীর বক্তৃতা বুথে বুথে সম্প্রচারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে এটাই শেষ ২১ জুলাইয়ের সভা। দলীয় তথা রাজ্য রাজনীতিতে গুরুত্বের নিরিখে স্বাভাবিক ভাবেই এ বছর তা অন্য এক মাত্রা যোগ করেছে। রাজনৈতিক শিবিরের একাংশের ধারণা, আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে দিশা নির্দেশের জন্য বার্তা দিতে এই মঞ্চকেই বেছে নেবেন তৃণমূলনেত্রী।