জগদীপ ধনখড় ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
রাজ্যপাল বনাম রাজ্য সরকার সংঘাতে নতুন মাত্রা। রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের বিধানসভা পরিদর্শন ঘিরে বৃহস্পতিবার তৈরি হল নাটকীয় পরিস্থিতি।
এ দিন সকালে বিধানসভা থেকে বেরিয়ে রাজ্য সরকারকে আক্রমণ করেছিলেন রাজ্যপাল। দুপুরে এ নিয়ে পাল্টা মুখ খুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। বক্তব্যে কোথাও জগদীপ ধনখড়ের নাম উচ্চারণ করলেন না বটে, কিন্তু রাজ্যপালের মাধ্যমে সমান্তরাল প্রশাসন চালানো হচ্ছে বলে স্পষ্ট অভিযোগ তুললেন তিনি। ইনফোকমের মঞ্চে তিনি বলেন, ‘‘বাংলায় সমান্তরাল সরকার চালানোর চেষ্টা হচ্ছে। সেই জন্য দু’দিনের বিধানসভার অধিবেশন স্থগিত করে দিতে হয়েছে।’’
এ দিন বিধানসভার গেটের বাইরে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন রাজ্যপাল। তার প্রথম জবাব দেন শিক্ষামন্ত্রী তথা তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই মুখ্যমন্ত্রীর প্রত্যুত্তর সেই বিরোধ এ বার চরমে তুলে দিল। ইনফোকমের মঞ্চে কেন্দ্রীয় সরকারের পাশাপাশি তিনি নিশানা করেন রাজভবনকেও। সম্প্রতি মহারাষ্ট্রের রাজনৈতিক সঙ্কটের উদাহরণ টেনে মমতা বলেন, ‘‘আমাদের এখানেও সমান্তরাল সরকার চালানো হচ্ছে। প্রত্যেক জায়গাতেই হচ্ছে। আপনারা শুধু মহারাষ্ট্র দেখেছেন। কিন্তু, যদি এ রাজ্যের দিকে তাকান তা হলে দেখবেন সেখানকার থেকে ১০০ শতাংশ বেশি হচ্ছে। প্রতিদিন হচ্ছে।’’
আরও পড়ুন: অর্থনীতিতে ‘অন্ধকারতম সময়’, ইনফোকমের মঞ্চে মন্তব্য মমতার, তীব্র আক্রমণ কেন্দ্রকে
সম্প্রতি গণপিটুনি রোধ-সহ কয়েকটি বিল নিয়ে রাজ্যপাল এবং রাজ্য সরকারের দ্বন্দ্ব চরমে উঠেছে। সেই দ্বন্দ্বের দায় রাজ্যপালের কোর্টেই ঠেলে দিয়ে মমতার মন্তব্য, ‘‘আমার বলতে খারাপ লাগছে যে, বিলে সই না করার জন্য বিধানসভা মুলতুবি হয়ে রয়েছে। কিন্তু, এটাই চূড়ান্ত বিল নয়। এটা নিয়ে এখনও আলোচনাই হয়নি। এই বিল বিধানসভায় আনার জন্য অনুমতি চাই। কিন্তু, এমনটা প্রতিদিন হচ্ছে। তবে, আমরা লড়াই চালিয়ে যাব।’’
আরও পড়ুন: প্রথমে বন্ধ গেট, তার পরে নির্জন বিধানসভা, সরকারকে আক্রমণে রাজ্যপাল, পাল্টা কটাক্ষ পার্থর
জগদীপ ধনখড়ের বিধানসভা সফর নিয়ে এ দিন এক প্রস্থ নাটক হয়েছে। রাজ্যপাল বলেন, ‘‘আমি এখানে এসেছিলাম ঐতিহাসিক বিল্ডিং, এখানকার পরিবেশ এবং লাইব্রেরি দেখতে। কিন্তু, বিধানসভা সভা বন্ধ থাকলেও সচিবালয় খোলা রাখা উচিত ছিল।’’ এর পরই বিস্ফোরক দাবি করেন তিনি। বলেন, ‘‘রাজভবনের বিশেষ সচিবকে স্পিকারের সচিবের থেকে ফোন করেন। তিনি বলেন যে, আমি এখানে আসছি জেনে তাঁরা খুশি। রাজভবনের বিশেষ সচিবকে জানানো হয় স্পিকার আমার সঙ্গে মধ্যাহ্নভোজ সারবেন। আমার স্ত্রীকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়। কিন্তু, ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই রাজভবনের বিশেষ সচিবকে ফের স্পিকারের সচিব ফোনে জানান যে ওই কর্মসূচি বাতিল।’’ এর দায় স্পিকারের কাঁধেই চাপিয়ে দিয়েছেন রাজ্যপাল।