কাঁথির সভায় অমিত শাহ। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল
আগামী মে মাসের শেষে লোকসভা ভোটের ফল ঘোষণার দিনই রাজ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার পড়ে যাবে বলে ভবিষ্যদ্বাণী করলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ। লোকসভা নির্বাচনের সঙ্গে রাজ্য সরকার পড়ে যাওয়ার সম্পর্ক কী, শাহ অবশ্য তার ব্যাখ্যা দেননি। আর তৃণমূলের কটাক্ষ, ‘‘শাহ দিবাস্বপ্ন দেখছেন। তাঁর কথার যুক্তি নেই।’’
পাশাপাশি তৃণমূল প্রশ্ন তুলেছে, ভোটের দিন ঘোষণা নির্বাচন কমিশনের কাজ। অমিত শাহ ভোটের ফল ঘোষণার দিন আগাম জানিয়ে দিচ্ছেন কেমন করে? এ নিয়ে নির্বাচন কমিশনেও দরবার করার কথা ভাবছেন তাঁরা।
পূর্ব মেদনীপুরের কাঁথিতে মঙ্গলবার জনসভায় শাহ বলেন, ‘‘মে মাসের শেষে লোকসভা ভোটের গণনা হবে। বেলা দু’টোর মধ্যে মমতাদিদির সরকার পড়ে যাবে এ রাজ্যে।’’ কিন্তু লোকসভা ভোটের ফলে রাজ্য সরকার কী ভাবে বদলে যাবে, তা শাহের বক্তৃতায় পাওয়া যায়নি। তৃণমূল নেতা এবং রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর কটাক্ষ, ‘‘উনি এবং দিল্লির বিজেপি নেতারা দিবা স্বপ্ন দেখছেন। লোকসভা ভোটে ওরা ১০০-র গণ্ডিও পেরবে না। এ রাজ্যে ভোট তো ’২১ সালে। কোন জাদুমন্ত্রে উনি ২০১৯ সালেই এখানকার সরকারের পতন হবে বলছেন জানি না।’’
আরও পড়ুন: অমিত শাহের সভা শেষ হতেই রণক্ষেত্র কাঁথি, মমতাকে ফোন করলেন উদ্বিগ্ন রাজনাথ
তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যোগ দেওয়া এক নেতা এ দিন ওই সভাতেই দাবি করেন, লোকসভা ভোটে তৃণমূলকে ২০-র নীচে নামাতে না পারলে তিনি রাজনীতি ছেড়ে দেব।
গত তিন বছরে রাজ্যে শাহ যতগুলি সভা করেছেন, তাঁর এ দিনের বক্তৃতা ছিল কার্যত সেগুলিরই পুনরাবৃত্তি। গণতন্ত্র, দুর্নীতি, অনুন্নয়ন, অনুপ্রবেশ এবং গরু পাচার প্রসঙ্গে এ দিন তৃণমূল ও রাজ্য সরকারকে আক্রমণ করেন শাহ। তাঁর দাবি, ‘‘ভারতীয় গণতন্ত্রে প্রচারের অধিকার সকলের আছে। আমরা যাত্রা নিয়ে গ্রামে গ্রামে পৌঁছতে চেয়েছিলাম। কিন্তু মমতাদিদির সরকার আমাদের অনুমতি দেয়নি।’’ এরপরেই তাঁর হুঁশিয়ারি, ‘‘যত আটকানো হবে তত আমরা মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে যাব।’’
শাহের আরও অভিযোগ, কেন্দ্রীয় প্রকল্পগুলি এ রাজ্যে নিজেদের নামে চালিয়ে কৃতিত্ব দাবি করছে তৃণমূল সরকার।
বিজেপি সভাপতির আবেদন, ‘‘এ রাজ্য কংগ্রেস, কমিউনিস্ট এবং তৃণমূলকে সুযোগ দিয়েছে। এক বার বিজেপিকে সুযোগ দিলে, সোনার বাংলা ফিরে আসবে।’’ এর জন্য লোকসভা নির্বাচনে বাংলা থেকে অন্তত ২৩টি আসন জয়ের লক্ষ্যমাত্রা কর্মীদের ফের মনে করিয়ে দেন তিনি।
অন্য দিকে, এ দিনই ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব হুগলির আরামবাগে এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গিরিরাজ সিংহ শ্রীরামপুরে সভা করেন। ত্রিপুরার ১০ মাসের বিজেপি সরকারের সঙ্গে রাজ্যে ৭ বছরের তৃণমূল সরকারের তুলনা করে তিনি বলেন, ‘‘ত্রিপুরায় হিংসা বন্ধ করে দিয়েছি আমরা। পশ্চিমবঙ্গে ঠিক উল্টোটা ঘটছে।’’