শনিবার রায়গঞ্জের সভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: ভিডিয়ো থেকে।
দু’দিন আগে কোচবিহারে সভা করে গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেখান থেকে একাধিক ইস্যুতে রাজ্য সরকারকে আক্রমণ করেছেন তিনি। কেন্দ্রীয় প্রকল্প রাজ্যে প্রয়োগ না করতে দেওয়া নিয়েও কটাক্ষ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। শনিবার রায়গঞ্জের সভা থেকে মোদীর সেই আক্রমণের জবাব দিয়েছেন মমতা। পাল্টা যুক্তি দিয়ে বুঝিয়েছেন, কেন কেন্দ্রের ‘আয়ুষ্মান ভারত’ রাজ্যে করতে দেওয়া হয়নি। সেই সঙ্গে জলপাইগুড়ির ঘূর্ণিঝড় প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর নীরবতাকেও কটাক্ষ করেছেন।
মমতা বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী বলে গেলেন বাংলার সরকার আমার কথা শোনে না। কেন শুনব? আমরা কি বিজেপির চাকর? যেটায় মানুষের লাভ হবে, আমি সেটা করব। বিজেপির লাভ আমি করব কেন?’’ তার পরেই ‘আয়ুষ্মান ভারত’-এর প্রসঙ্গ তোলেন মমতা। কোচবিহার থেকে মোদী বলেছিলেন, ‘‘বাংলার জন্য যা উন্নয়নমূলক প্রকল্প নিয়ে আসি, তৃণমূল সরকার তা চালু করতে দেয় না। ‘আয়ুষ্মান ভারত’ প্রকল্প এখানে চালু করতে দেয়নি মমতার সরকার। এখান থেকে কেউ কোনও কাজে বাইরের রাজ্যে গেলে চিকিৎসার খাতে ওই প্রকল্পে টাকা পেতেন। সেটা করতে দেয়নি।’’ জবাবে মমতা বলেন, ‘‘আমরা কেন ‘আয়ুষ্মান ভারত’ করব? আমাদের তো ‘স্বাস্থ্যসাথী’ আছে। আমাদের এই প্রকল্পে রাজ্যের ন’কোটি মানুষ সাহায্য পান। ‘আয়ুষ্মান ভারত’ সকলের জন্য নয়। ওই প্রকল্পে সুবিধা হবে এক কোটি মানুষের। তা হলে আমি কেন ওটা করতে দেব? বাকি আট কোটি মানুষ কোথায় যাবেন?’’
জলপাইগুড়ির দুর্যোগে মোদীর নীরবতাকে কটাক্ষ করে মমতা শনিবার রায়গঞ্জের সভা থেকে বলেন, ‘‘জলপাইগুড়িতে এত বড় দুর্যোগ হল, এত মানুষ মারা গেলেন, দেশের প্রধানমন্ত্রী সেটা নিয়ে কোনও কথা বললেন না। দুর্যোগের পর উনি কোচবিহারে এলেন। অথচ দুর্যোগ নিয়ে কোনও কথা নেই! আসলে ওঁরা শুধু নাম কিনতে চান। রাজ্য সরকার দুর্যোগ মোকাবিলা করবে, টাকা দেবে, আর উনি শুধু নাম কিনবেন।’’
গত রবিবার জলপাইগুড়িতে ঘূর্ণিঝড়ের ফলে বিস্তীর্ণ এলাকা লন্ডভন্ড হয়ে গিয়েছিল। চার জনের মৃত্যুও হয় সেই দুর্যোগে। ঘটনার দিন রাতেই উত্তরবঙ্গে পৌঁছে গিয়েছিলেন মমতা। সামনে থেকে তিনি পরিস্থিতির তদারকি করেন। মৃতদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন এবং আহতদের দেখতে হাসপাতালে যান রাতেই। সেই ঘটনার পরে মোদী এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে দুঃখপ্রকাশ করেছিলেন। তার চার দিন পরে কোচবিহারে ভোটের প্রচারেও গিয়েছিলেন। অনেকেই আশা করেছিলেন, উত্তরবঙ্গের বিপর্যয় নিয়ে হয়তো কিছু বলবেন প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু ওই প্রসঙ্গই উত্থাপন করতে দেখা যায়নি তাঁকে। যা নিয়ে বিজেপির অন্দরেও অস্বস্তি তৈরি হয়েছিল।