Mukul Roy

মুকুলের মুখে বিজেপিই, গুরুত্ব দিতে নারাজ মমতা

দিল্লি পৌঁছানোর পরে মুকুলের কথায় যে অসংলগ্নতা ছিল, তা অবশ্য এ দিন দেখা যায়নি। তবে এটাও মনে হয়েছে, মুকুল যেন মাঝে মধ্যেই ফিরে যাচ্ছেন অন্য এক জন্মে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি ও কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ এপ্রিল ২০২৩ ০৬:৩৯
Share:

মুকুল রায় এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।

তাঁকে ঘিরে ‘অন্তর্ধান রহস্য’ ভেদ করে বুধবার একটি বেসরকারি হোটেলের ঘরে মুকুল রায় সাংবাদিকদের সামনে এলেন এবং জানালেন, তিনি ‘লুকিয়ে’ দিল্লিতে আসেননি। কাউকে ‘না জানিয়ে’ এসেছেন মাত্র। ‘কাজ’ হয়ে গেলেই ফিরে যাবেন। সেই কাজ যতটুকু বোঝা গেল, অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করা বা কথা বলা। কী নিয়ে সংলাপের ইচ্ছা তাঁর, স্পষ্ট নয়। জানালেন, রাজ্যে যে ‘পরিবর্তন’ হয়েছে, তাতে লাভ হয়নি। প্রয়োজন আরও একটি পরিবর্তনের। তিনি তৃণমূল ভবনে গিয়ে পতাকা হাতে নিলেও নিজেকে বারবার বিজেপি-র নেতা হিসাবেই এ দিন তুলে ধরে বললেন, দল দায়িত্ব দিলে রাজ্যে কাজ করতে আগ্রহী।

Advertisement

মুকুল যখন দিল্লিতে বসে রাজ্যে ‘পরিবর্তন’ ও তৃণমূলের কাজকর্ম নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন, কলকাতায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তখন কৃষ্ণনগর উত্তরের বিধায়কের রাজনৈতিক গতিবিধিকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে চাননি। তাঁর মন্তব্য, ‘‘কে কোথায় যাবেন, সেটা তাঁর অধিকার। উনি বিজেপির বিধায়ক রয়েছেন।’’ তবে মুকুলের ছেলে শুভ্রাংশু রায় যে তাঁর বাবাকে জোর করে দিল্লি নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ এনেছেন, প্রশাসনিক স্তরে তা গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে বলেই মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘আমি যত দূর শুনেছি, তাঁর ছেলে একটা মিসিং ডায়েরি করেছে, কোনও এজেন্সি ধরে নিয়ে গিয়েছে। তেমন ক্ষেত্রে প্রশাসন খতিয়ে দেখবে। তাঁকে উদ্ধার করার দায়িত্ব আছে। আমার কিছু বলার নেই। এটা তাঁদের সিদ্ধান্ত।’’

বিজেপিতে এখন আর মুকুল কল্কে পাবেন কি না, সে সব প্রশ্ন তো রয়েছেই। কিন্তু রাজধানীর রাজনৈতিক শিবিরের বক্তব্য, এই মুকুল অতীতের ছায়ামাত্র! শাহের দফতর থেকে জানানো হয়েছে যে, দেখা করতে চেয়ে মুকুলের তরফে কোনও ফোন আসেনি। সূত্রের খবর, রাজ্য বিজেপি যেখানে মুকুলকে গুরুত্ব দিতে চাইছে না, সেখানে শাহ আগ বাড়িয়ে কোনও পদক্ষেপ করবেন না।

Advertisement

দিল্লি পৌঁছানোর পরে মুকুলের কথায় যে অসংলগ্নতা ছিল, তা অবশ্য এ দিন দেখা যায়নি। তবে এটাও মনে হয়েছে, মুকুল যেন মাঝে মধ্যেই ফিরে যাচ্ছেন অন্য এক জন্মে। বলছেন, “পশ্চিমবঙ্গে সিপিএম-কে হারানোটাই সব চেয়ে বড় লড়াই!” রাজনৈতিক শিবিরের একাংশের মতে, মুকুলকে দিল্লি নিয়ে আসার মধ্যে একটি রাজনৈতিক নাটক রয়েছে। তাতে কার লাভ কার ক্ষতি, তার চুলচেরা হিসাবও চলছে। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী নিয়োগ দুর্নীতির সঙ্গে মুকুল-পুত্র শুভ্রাংশুকে জড়িয়ে অভিযোগ করেছিলেন। মুকুলের বিজেপি-যোগ প্রসঙ্গে শুভেন্দু বলেছেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি যথেষ্ট স্বনির্ভর, এ রকম প্রত্যাখ্যাত হওয়া মানুষকে নেতা বানানোর আমাদের কোনও প্রয়োজন নেই।” মুকুল অবশ্য এ দিন বলেন, “আমি বিজেপি-তেই ছিলাম। তাই সেই দলে নতুন করে যোগ দেওয়ার কোনও প্রশ্ন নেই। পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতি ভাল নয়। সেখানকার বর্তমান শাসক দল তার জন্য দায়ী। বিজেপি সুযোগ দিলে রাজ্যে আমি দলকে ভাল জায়গায় পৌঁছে দেব।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement