Mamata Banerjee

কাজ হচ্ছে না কেন? হাওড়ার বস্তি নিয়ে প্রকাশ্যেই ববি-অরূপকে তিরস্কার মমতার

পানীয় জলের সমস্যা এবং অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ নিয়েও মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আভিযোগ জানান বস্তির বাসিন্দারা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ অগস্ট ২০১৯ ১৯:২২
Share:

হাওড়ার বস্তিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের টুইটার হ্যান্ডল থেকে সংগৃহীত।

সরকারি প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও বস্তি উন্নয়নের কাজ ঠিক মতো হয়নি। সে জন্য এ বার প্রশাসনিক সভায় রাজ্যের মন্ত্রী তথা হাওড়া জেলা তৃণমূলের সভাপতি অরূপ রায়কে তিরস্কার করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রেহাই পেলেন না পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমও। রাস্তায় জল জমা নিয়েও কথা শুনতে হল তাঁকে।

Advertisement

সোমবার হাওড়ার শরৎ সদনে প্রশাসনিক সভা ছিল। সেখানে যাওয়ার পথে আচমকাই দু’নম্বর রাউন্ড ট্যাঙ্ক লেনের পাশে, হাওড়া পুরসভার ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের পুরনো বস্তিতে হাজির হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই বস্তির অধিকাংশ মানুষই হিন্দিভাষী। হিন্দিতেই মুখ্যমন্ত্রীকে নিজেদের অভাব-অভিযোগের কথা জানান তাঁরা। মুখ্যমন্ত্রীকে জানানো হয়, ওই বস্তিতে বাসিন্দার সংখ্যা চারশোরও বেশি। অথচ শৌচাগার রয়েছে মাত্র দু’টি! অধিকাংশ বাসিন্দার রেশন কার্ড পর্যন্ত নেই।

পানীয় জলের সমস্যা এবং অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ নিয়েও মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আভিযোগ জানান বস্তির বাসিন্দারা। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে বস্তির বেশ কিছু ঝুপড়িতেও ঢোকেন মুখ্যমন্ত্রী। শৌচালয়ের সংখ্যা বাড়ানো হবে বলে তাঁদের আশ্বাস দেন তিনি। কথা বলেন কচিকাঁচাদের সঙ্গেও। এর পরই শরৎ সদনের উদ্দেশে রওনা দেন তিনি। আর সেখানেই অরূপ রায়কে তিরস্কার করেন।

Advertisement

আরও পড়ুন: মানবাধিকার পুরোপুরি লঙ্ঘিত কাশ্মীরে: ফের আক্রমণে মমতা​

হাওড়ার জল নিকাশি ব্যবস্থার উন্নতি হয়নি কেন, প্রথমেই তা নিয়ে ফিরহাদ হাকিমকে প্রশ্ন করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘ববি তোমার দফতরকে জল নিকাশির পরিকল্পনা করতে বলা হয়েছিল। কিন্তু কাজ হয়নি। হাওড়ায় জল জমে যাওয়া একটা স্থায়ী সমস্যা। জল জমে গেলে বেরনোর জায়গা নেই। কাঁচা ড্রেন তৈরি না হওয়া পর্যন্ত এই সমস্যা মিটবে না। আজ রাউন্ড ট্যাঙ্ক লেনের বস্তিতে দেখলাম ৪০০ পরিবারের জন্য মাত্র মাত্র দু’টো শৌচালয় রয়েছে। এটা কেন হবে? বস্তি উন্নয়নে তো টাকা দেওয়া হয়! তা-ও কেন আমাকে এটা দেখতে হল? ’’

মমতা আরও বলেন, ‘‘বস্তিতে গিয়ে সবার সঙ্গে কথা বললাম আমি। ওদের সমস্যা জানতে চাইলাম। আপনারাও তো মাঝেমধ্যে বস্তিতে গিয়ে একটু ঘুরে আসতে পারেন। তাতে অন্তত জ্ঞানও বাড়ে। জেলা পুরসভাগুলো যাদের অধীনে রয়েছে, তারাই বা বস্তিগুলো পাকা করবে না কেন? আমি ববিকে বলব ব্যাপারটা দেখে নিতে।’’

আরও পড়ুন: মৃত ভেবে চিতাবাঘের ফোটো তোলার হিড়িক, তার পর আচমকা যা ঘটল...​

এর পরই বস্তির অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের জন্য সরাসরি অরূপ রায়কে তিরস্কার করেন মমতা। তিনি বলেন, ‘‘অরূপ এটা তোমার এলাকা। তোমার কাজ আমি করে দিতে যাব না। তোমাকেই করতে হবে।’’ তিরস্কৃত হয়ে বস্তিবাসীর উপর যাতে চোটপাট না করা হয়, তা নিয়েও অরূপ রায়কে সতর্ক করে দেন মমতা। তিনি বলেন, ‘‘তুমি আবার গিয়ে ওদের বোলো না যেন, দিদিকে এ সব বলতে গিয়েছ কেন? ওদের জানানোর অধিকার রয়েছে। আর জানার অধিকার রয়েছে দিদির। যে কোনও সময়, যে কোনও জায়গায় যাওয়ার অধিকার দিদির রয়েছে। মানুষের সমস্যা জানার অধিকার তোমার যেমন রয়েছে, আমারও রয়েছে। একটি মেয়ে বলছিল তুমি অনেক কাজ করো। কিন্তু এই কাজগুলি হয়নি। প্রত্যেক বিধায়ক, কাউন্সিলর, জেলা পরিষদ এবং পঞ্চায়েত সমিতিকে বলব, এই সমস্যাগুলো দেখুন। এতে মানুষ খুশি হবেন।’’ যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ওই বস্তির যাবতীয় সমস্যার সমাধান করতে হবে বলে এ দিন নির্দেশ দেন মমতা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement