Mamata Banerjee

‘বজ্জাতদের’ দিকে আঙুল মমতার, কটাক্ষ দিলীপের

মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, গোষ্ঠী সংঘর্ষ, ঘৃণা-ভাষণের মতো বিষয় জানা গেলে সঙ্গে সঙ্গে অভিযোগ জানানো উচিত। কিন্তু সংবাদ মাধ্যমের একাংশ তাতে মদত দেয়।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৫ মে ২০২৩ ০৬:৫৪
Share:

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।

গৌড়বঙ্গে সাম্প্রতিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির জন্য ‘কিছু বজ্জাত রাজনৈতিক নেতা’র দিকে আঙুল তুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রশ্ন তুললেন সীমান্ত রক্ষী বাহিনী (বিএসএফ), পুলিশ, প্রশাসন এবং সংবাদমাধ্যমের একাংশের ভূমিকা নিয়ে। দাওয়াই দিলেন ‘ইনফর্মেশন নেটওয়ার্ক’ শক্তিশালী করার। বৃহস্পতিবার মালদহ কলেজ অডিটোরিয়ামে মালদহ এবং মুর্শিদাবাদের প্রশাসনিক সভার মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আইন-শৃঙ্খলার ব্যাপারে ডিজিকে বলব, কালিয়াচক, গাজল, এগুলো ইচ্ছে করে দেখানো হচ্ছে। ২০-২৫ জনের একটা বৈঠক হয়েছে, তারা দিল্লি থেকে এসেছিল। তারা বলেছে, ‘সংঘর্ষ লাগাও’। কাউকে ডেকে টাকাও দেওয়া হচ্ছে। এগুলো আমাদের নজরে আসছে। এটা নজরে রাখতে হবে।’’ সংঘর্ষের পরিস্থিতি তৈরি করতে চাইছে ‘কিছু বজ্জাত রাজনৈতিক নেতা’, এমনও দাবি তাঁর।

Advertisement

যদিও বিষয়টি নিয়ে পাল্টা কটাক্ষ করেছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তাঁর কটাক্ষ, ‘‘বাইরে থেকে লোক ঢুকল কী করে? উনি কি ঘুমোচ্ছিলেন? পশ্চিমবঙ্গ কি ধর্মশালা!’’

মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, গোষ্ঠী সংঘর্ষ, ঘৃণা-ভাষণের মতো বিষয় জানা গেলে সঙ্গে সঙ্গে অভিযোগ জানানো উচিত। কিন্তু সংবাদ মাধ্যমের একাংশ তাতে মদত দেয়। তাঁর দাবি, ঘটনা ঘটলেই, সঙ্গে সঙ্গে পদক্ষেপ করতে হবে। কিন্তু কিছু লোক ইচ্ছাকৃত দেরি করছে। তাঁর কথায়, ‘‘কালিয়াগঞ্জের ঘটনাটা, ময়না-তদন্তের রিপোর্ট মানুষকে জানাতে এত সময় লাগল কেন? সঙ্গে সঙ্গে কী হয়েছে জনগণকে জানিয়ে দিলে, সংবাদ মাধ্যমের যে অংশ বদমায়েশি করে, মিথ্যে কথা বলে, সেটা কিন্তু করতে পারে না।’’ মুখ্যমন্ত্রীর বিশ্লেষণ, পুলিশের একাংশ পরিস্থিতির জন্য দায়ী। বলেন, ‘‘কিছু কিছু আইসি দেখছি, ইদানীং একটু গড়িমসি করছে। কালিয়াগঞ্জে প্রথমে কনস্টেবলকে পাঠিয়েছে কেন? কেন ওসি যায়নি? কনস্টেবল গিয়ে আবার দু’ঘণ্টা বসে আছে। একটা মৃতদেহ যখন দেখতে পাচ্ছ, সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে আইসি যাবে। সসম্মানে মৃতদেহ নিয়ে আসবে।’’

Advertisement

সম্প্রতি উত্তর দিনাজপুরের রাধিকাপুর পঞ্চায়েতের চাঁদগাঁও এলাকায় কালিয়াগঞ্জ থানায় ভাঙচুরে অভিযুক্ত বিজেপি সদস্যকে ধরতে গিয়ে গুলি চালিয়ে তাঁর আত্মীয়কে মারার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্ন, ‘‘গুলি কোথা থেকে চলল, কে চালাল? শুনেছি, ওই গ্রামটা বিএসএফ নিয়ন্ত্রণ করে? তদন্ত হওয়া উচিত।’’ উত্তর দিনাজপুরের জেলাশাসক অরবিন্দকুমার মিনা ওই এলাকাটি সীমান্ত লাগোয়া বলে জানানোয় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘তোমাদের যে তথ্য নেই, সে তথ্য আমার কাছে আছে। তার মানে তোমাকে বিনা কারণে কেউ গালি দিচ্ছে, তুমি বসে হজম করছ।’’ এর পরেই মমতার পরামর্শ, ‘ইনফর্মেশন নেটওয়ার্ক’, ‘আইবি’-কে শক্তিশালী করতে হবে। রাজ্য প্রশাসনের কর্তাদের তিনি নির্দেশ দেন, পুলিশের ডিজি পর্যায়ে ঝাড়খণ্ড, বিহার এবং ওড়িশার সঙ্গে বৈঠক করতে।

বিএসএফের ভূমিকা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যের প্রেক্ষিতে বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষের প্রতিক্রিয়া, ‘‘প্রকাশ্যে পুলিশ গুলি করল। সবাই জানল, আর উনি জানলেন না! পুলিশ কী করেছে, গ্রামের মানুষ দেখেছেন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement