কাটমানি নিয়ে সরগরম সভা

শুক্রবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার পৈলানে রাজ্যের ১৫৫তম প্রশাসনিক বৈঠকে এ ভাবেই বার বার কাঠগড়ায় উঠল পঞ্চায়েত, গ্রামোন্নয়ন এবং জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর। বিধায়কেরা তো বটেই, ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় পর্যন্ত সরাসরি আঙুল তুললেন এই দফতরের বিরুদ্ধে।

Advertisement

অত্রি মিত্র

পৈলান শেষ আপডেট: ০৩ জুন ২০১৭ ০৩:৪৩
Share:

নিজস্ব চিত্র।

বৈঠকের শুরু থেকেই অভিযোগের তিরে বিদ্ধ হচ্ছিল তাঁর দফতর। কখনও কাটমানি, কখনও কাজ ফেলে ঠিকাদার পালিয়ে যাওয়া, কখনও পাইপলাইন বসানোর পরেও জল না-আসা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে বসে কার্যত সব খোঁচা হজম করলেন মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। এক সময়ে তো মমতা বলেই ফেললেন, ‘‘আমার কিন্তু সব দিকে নজর আছে!’’

Advertisement

শুক্রবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার পৈলানে রাজ্যের ১৫৫তম প্রশাসনিক বৈঠকে এ ভাবেই বার বার কাঠগড়ায় উঠল পঞ্চায়েত, গ্রামোন্নয়ন এবং জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর। বিধায়কেরা তো বটেই, ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় পর্যন্ত সরাসরি আঙুল তুললেন এই দফতরের বিরুদ্ধে।

এ দিন জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতরের বিরুদ্ধে একগুচ্ছ অভিযোগ তোলেন অভিষেক। তিনি জানান, ডোঙারিয়া-২ নম্বর পানীয় জল প্রকল্প যেখানে হয়েছে, সেখানেই পরিশুদ্ধ জল যাচ্ছে না। বিষয়টি শুনেই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘এমনটা কেন হচ্ছে সুব্রতদা!’’ সুব্রতবাবু জানান, বিষয়টা দেখতে বলা হয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে অভিষেক জানান, ডোঙারিয়া-১ প্রকল্পেও অনেক জায়গায় পাইপলাইন বন্ধ হয়ে জল যাচ্ছে না।

Advertisement

মুখ্যমন্ত্রী এই অভিযোগ শুনে দফতরের সচিব সৌরভ দাসকে বলেন, ‘‘ঠিকাদারেরা কিন্তু কাজ করছে না। অত বড় বড় পাইপ, তাতে জল যাবে না কেন! তার মানে ওরা চুরি করছে।’’

এর মধ্যেই গোসাবার বিধায়ক জয়ন্ত নস্কর অভিযোগ করেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনার রাস্তা অর্ধেক তৈরি করে ঠিকাদার পালিয়ে গিয়েছে।’’ মুখ্যমন্ত্রী শুনে বলেন, ‘‘এগুলো বদমায়েশি। আমি বলব, ঠিকাদারেরা পালিয়ে গেলে তাদের সম্পত্তি ক্রোক করে সেই অর্থে যাতে বাকি রাস্তা করা যায়, এমন আইন তৈরি করতে হবে!’’ তবে ঠিকাদারদের একাংশের বক্তব্য, তাঁরা তো কাজ করতেই চান। কিন্তু পাড়ায় পাড়ায় তোলা দিতে দিতে এমন হাল হয় যে, কাজ ছেড়ে চলে যেতে হয়।

সাতগাছিয়া বিধানসভা এলাকায় ২৫০টি নলকূপ বসানো নিয়েও ‘কাটমানি’র প্রসঙ্গ আসে। মুখ্যমন্ত্রী জেলাশাসককে বলেন, ‘‘দেরি করবেন না। রমজান মাস শুরু হয়ে গিয়েছে।’’ তার পরেই তিনি বলেন, ‘‘দেখবেন, তাড়াহুড়োয় যেন কাটমানি না খায়। টিউবওয়েল দিয়ে যেন বালি না ওঠে!’’

সুব্রতবাবুর অবশ্য দাবি, ‘‘জেলায় পানীয় জল প্রকল্পে ১৪০০ কোটি টাকা খরচ করা হচ্ছে। রাজ্যের মধ্যে এই জেলাতেই সর্বাধিক ৫৫০ কিলোমিটার রাস্তা হচ্ছে। কাজেই মুখ্যমন্ত্রী রেগে যাননি। বরং, আমাদের কাজে তিনি সন্তুষ্ট।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement