গঙ্গাসাগরে প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী।
নিজের হাতে থাকা ভূমি দফতরে ‘ঘুঘুর বাসা’ চলছে বলে মন্তব্য করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দক্ষিণ ২৪ পরগনার প্রশাসনিক বৈঠকে বুধবার তাঁর বক্তব্য, ‘‘এখানে (ভূমি দফতরে) ঘুঘুর বাসা রয়েছে! অফিসারদেরই তা ভাঙতে হবে।’’ সেই সঙ্গে জমি সংক্রান্ত সব অভিযোগের মীমাংসার বিষয়টি ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচির আওতায় আনার নির্দেশও দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
জমি সংক্রান্ত জটিলতায় সরকারের অনেক বড় কাজ আটকে থাকার ঘটনা নতুন নয়। তাই এ নিয়ে বার বার প্রকাশ্যেই সংশ্লিষ্ট দফতরের আধিকারিকদের সতর্ক করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে তাতে যে কাজ বিশেষ হয়নি, এ দিনের বৈঠকে তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন তিনি। প্রশাসনিক বৈঠকে বারুইপুরের একটি জমি সংক্রান্ত বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন স্থানীয় বিধায়ক। তার পরেই স্থানীয় আধিকারিকদের কাছে বিষয়টি নিয়ে জানতে চান মুখ্যমন্ত্রী। জবাবে সন্তুষ্ট হতে না পেরে তিনি প্রশ্ন করেন, ‘‘কেন আটকে থাকে কাজ?’’ এর পরে মুখ্যমন্ত্রী অবশ্য বৈঠকে উপস্থিত রাজ্যের মুখ্যসচিবকে বিষয়টি ‘দুয়ারে সরকার’ প্রকল্পের মধ্যে এনে এ সংক্রান্ত অভিযোগের দ্রুত সমাধানের উপরে জোর দিয়েছেন।
পর্যটন দফতর ঠিক মতো কাজ করছে না বলেও প্রশাসনিক বৈঠকে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তার পাশাপাশি এ দিনের বৈঠকে অবশ্য কুলতলির বাঘ-বন্দির ঘটনায় পুলিশ ও বন দফতরের কর্মীদের প্রশংসাও করেন তিনি। এই কাজে যুক্ত দুই দফতরের সংশ্লিষ্ট কর্মীদের পুরষ্কৃত করার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
দক্ষিণ ২৪ পরগনায় তথ্যপ্রযুক্তি হাব করা যায় কি না, এ দিনের বৈঠকে উপস্থিত ওই দফতরের সচিব তথা কলকাতার প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারের কাছে জানতে চান মুখ্যমন্ত্রী। রাজীব জানান, যোগাযোগ সংক্রান্ত কিছু সমস্যা রয়েছে। তবে পরিকল্পনা হাতে নেওয়ার চেষ্টা হবে। জেলায় এ দিন প্রায় ২৭০ কোটি টাকার বিভিন্ন প্রকল্প ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। বৈঠকে উপস্থিত জেলার বিধায়ক তথা রাজ্য বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সরকার বহু অর্থ ব্যয় করে বিভিন্ন প্রকল্প শুরু করছে। সেগুলি যন সময়ে শেষ হয়। সেগুলি যেন সচল থাকে।’’ এমন বৈঠকে অতীতেও স্পিকার বিমানবাবু উপস্থিত ছিলেন। যদিও স্পিকারের এই উপস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা। সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর মতে, ‘‘স্পিকার কখনওই এক জন সাধারণ বিধায়ক নন। অথচ দলীয় নেতাদের অনুগত হয়ে তাঁকে এই ধরনের বৈঠকে থাকতে হচ্ছে। এতে পরিষদীয় ব্যবস্থাই কলুষিত হচ্ছে।’’ বিরোধীরা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, প্রয়াত প্রাক্তন স্পিকার হাসিম আব্দুল হালিমকে অতীতে কখনও ব্রিগেড সমাবেশের মঞ্চে দেখা যেত না। গেলেও তিনি থাকতেন দর্শকাসনে।