সৌজন্য: বৃহস্পতিবার মিরিককে মহকুমা ঘোষণার মঞ্চে মুখ্যমন্ত্রী। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।
রোদ-কুয়াশা-বৃষ্টি ঘেরা মঞ্চ। সেখানে তিনি বললেন, ‘‘জন্মদিন মুবারক, মিরিক।’’ একই সঙ্গে অনুরোধ করলেন, ‘‘পাহা়ড়ে যারা কাজ করতে চায়, তাদের সুযোগ দিন।’’
যা দেখেশুনে পাহাড়াবাসী বলছেন, মিরিককে মহকুমা ঘোষণার মঞ্চ থেকেই পাহাড়ে পরিবর্তনের ডাক দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ওই সভায় মোর্চা-কে সরাসরি আক্রমণ করেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, ‘‘জিটিএকে দায়িত্ব দেওয়া সত্ত্বেও কাজ হচ্ছে না। তাই রাজ্য যতটা সম্ভব নিজেই পাহাড়ে উন্নয়নের চেষ্টা করছে। ১৫টি বোর্ডও যথেষ্ট কাজ করছে।’’ তার পরেই পাহাড়ে আসন্ন পুরসভা, পঞ্চায়েত ও জিটিএ ভোটের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ‘‘পাহাড়ে আমরা সরাসরি উন্নয়নের কাজ করতে চাই। আগামীতে পুরসভা, পঞ্চায়েত ও জিটিএ ভোট রয়েছে। পাহাড়ের জন্য মনপ্রাণ দিয়ে কাজ করবে, এমন বোর্ড গড়ার কথাই আপনাদের ভাবতে হবে।’’
এর পরে হাততালিতে ভেসে যায় চারদিক। তখনই মুখ্যমন্ত্রীর সংযোজন, ‘‘জানেন তো আমি বারবার পাহাড়ে আসি। পাহাড়ের মানুষ বড় ভাল। ছেলেমেয়েরা স্মার্ট। আমার এত ভাল লাগে! মাঝেমধ্যে মনে হয়, পাহাড়েই একটা কারও বাড়ি দেখে সেখানেই থেকে যাই।’’
আরও পড়ুন: নয়াচরে পলি ফেলবে বন্দর
সরকারি মঞ্চ থেকে জিটিএ-র কাজকর্মের সমালোচনায় মুখ্যমন্ত্রী সরব হওয়ায় অবাক হচ্ছে না গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। দলের সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরি বলেন, ‘‘পাহাড়ে মে মাস থেকে পরপর ভোট। তাই মুখ্যমন্ত্রী নিজের দলকে চাঙ্গা করতে নানা কথা বলবেনই। তবে সরকারি মঞ্চ থেকে পাহাড়ে বদলের ডাক না দিলেই পারতেন।’’
এ দিন সকালে সুকনা থেকে মিরিক পর্যন্ত রাস্তার দু’ধারে অন্তত ২০ জায়গায় বৃষ্টি মাথায় লোকজন অপেক্ষা করছিল মুখ্যমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে। বেলা আড়াইটেয় মিরিকের মঞ্চে উঠে মুখ্যমন্ত্রী জানান, এর পর থেকে আর কোনও কাজে শিলিগুড়ি, দার্জিলিং বা কার্শিয়াঙে ছোটাছুটি করতে হবে না মিরিকবাসীকে। এখানকার জমির নথিভুক্তিকরণ নিয়ে যে সমস্যা রয়েছে, তা-ও দ্রুত মেটানোর আশ্বাস দিলেন। মিরিক লেক ও তাকে ঘিরে পর্যটনকে চাঙ্গা করার কথাও বললেন। এবং বললেন, ‘‘অনেক আশা নিয়ে জিটিএ গড়া হয়েছিল। দুঃখের সঙ্গে বলতে বাধ্য হচ্ছি, ৬ বছর ধরে জিটিএ মিরিক লেকের হাল ফেরাতে পারল না।’’
২৬ মিনিটের বক্তৃতা যখন শেষ হল, তখন কুয়াশা কেটে গিয়েছে।