উপরে পুরনো টুইট (চিহ্নিত)। এটিই মুছে (নীচে) নতুন টুইট। —নিজস্ব চিত্র।
প্রায় পাঁচ মাস পর রাজভবনে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দেখা করলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের সঙ্গে। গত বছরের ১৫ অগস্ট শেষ বার রাজভবনে গিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার রাজভবন থেকে বেরনোর পর একটি টুইট করেন রাজ্যপাল। সেখানে লেখা ছিল, তাঁদের মধ্যে ‘নববর্ষের শুভেচ্ছা বিনিময়’ হয়েছে। কিন্তু সেই টুইট কিছু ক্ষণের মধ্যেই রাজ্যপালের টুইটার হ্যান্ডল থেকে মুছে ফেলা হয়। নতুন টুইটে লেখা হয়, মুখ্যমন্ত্রী রাজভবনে আসায় ‘সস্ত্রীক আমি শুভেচ্ছা জানিয়েছি’। তবে তিনি কেন রাজভবনে গিয়েছিলেন, তা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী কোনও মন্তব্য করেননি। যাওয়ার সময় গাড়ির কাচ নামিয়ে হাত নাড়তে নাড়তে বেরিয়ে যান মমতা।
বুধবার সন্ধ্যা সওয়া ৫টা নাগাদ রাজভবনে যান। ঘণ্টাখানেক সেখানে তিনি ছিলেন। নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, নতুন বছরের শুরুতে ‘সৌজন্য সাক্ষাৎ’ করতেই রাজভবন গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। নবান্ন থেকে মুখ্যমন্ত্রীর কনভয় রাজভবনের অ্যাসেম্বলি গেট দিয়ে ঢোকে। সাক্ষাৎ শেষে এসপ্ল্যানেড ইস্ট গেট দিয়ে বেরিয়ে যায় তাঁর কনভয়। এই বৈঠক প্রসঙ্গে রাজভবন সূত্রে রাত পর্যন্ত কিছু জানানো হয়নি। এর আগে স্বাধীনতা দিবসের সকালে রেড রোডে কুচকাওয়াজ শেষ হওয়ার পরে রাজভবনে গিয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করে সৌজন্য সেরেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: উইপোকারা বেরিয়ে গেলেই ভাল হয়, সোহমের কটাক্ষ কি সেই শুভেন্দুকেই
গত ২৯ ডিসেম্বর এই রাজ্যপালের অপসারণ দাবি করে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দকে চিঠি দিয়েছেন তৃণমূল সাংসদরা। তার পর মমতার সরকারের প্রতি আরও আক্রমণাত্মক হয়ে উঠেছেন রাজ্যপাল। বুধবার সকালেও পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুকের বর্গভীমার মন্দিরে গিয়ে পুজো দেওয়ার পর সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের জবাবে রাজ্য সরকারকে কাঠগড়ায় তুলেছেন তিনি। পাল্টা বুধবারেই তৃণমূল ভবনের সাংবাদিক সম্মেলনে সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদার রাজভবনকে ‘বিজেপি অফিস’ করে তোলার অভিযোগ করেছেন।
আরও পড়ুন: নীলবাড়ির হিসাব পাল্টাতে পারে ৩০ আসন, মতুয়া-মন খুঁজছে বিজেপি
সংসদীয় রাজনীতিতে মুখ্যমন্ত্রী-রাজ্যপাল সাক্ষাৎ অত্যন্ত স্বাভাবিক। কিন্তু, ২০১৯-এর অগস্টে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল পদে ধনখড় দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই নানা ইস্যুতে তাঁর সঙ্গে সঙ্ঘাত বেধেছে রাজ্যের। রাজ্যপাল যেমন একাধিক বিষয় নিয়ে রাজ্য সরকারের কার্যকলাপ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন, পাল্টায় তেমনই রাজ্য সরকারের মন্ত্রী ও তৃণমূল সাংসদরা আক্রমণও করেছেন তাঁকে।
এর আগে তৃণমূল ভবনে এক সাংবাদিক সম্মেলনে খোদ মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যপালকে বিজেপি-র মুখপাত্র বলে আক্রমণ করেছিলেন। সঙ্ঘাত তথা বাগ্যুদ্ধ এমন পর্যায়ে পৌঁছেছিল, যে মুখ্যমন্ত্রী রাজভবন যাওয়াই বন্ধ করে দিয়েছিলেন। এমন আবহে মুখ্যমন্ত্রীর রাজভবনে যাওয়া নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়েছে।