মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
এই শহরে তাঁদের একাধিক বার এক মঞ্চে দেখা গিয়েছে। এ বার আরবসাগরের তীরে অমিতাভ ও জয়া বচ্চনের সঙ্গে সান্ধ্য-আসরে মিলিত হতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুম্বইয়ে যে দিন ওই সাক্ষাৎ হওয়ার কথা, সে দিনই রাখিপূর্ণিমা। অমিতাভের বাংলো ‘জলসা’য় মেগাস্টারের হাতে তাই মমতাকে রাখি বাঁধতেও দেখা যেতে পারে, এমন সম্ভাবনার কথাও উঠে আসছে।
পটনা ও বেঙ্গালুরুর পরে বিজেপি-বিরোধী জোটের তৃতীয় মহা-বৈঠক মুম্বইয়ে হতে চলেছে আগামী ৩১ অগস্ট ও ১ সেপ্টেম্বর। মুম্বইয়ে ৩১ তারিখ রাতে ‘ইন্ডিয়া’ জোটের নেতা-নেত্রীদের জন্য নৈশভোজের আয়োজন করছেন এনসিপি নেতা শরদ পওয়ার এবং শিবসেনা (ইউবিটি) নেতা উদ্ধব ঠাকরে। তৃণমূল নেত্রীর মুম্বই পৌঁছে যাওয়ার কথা তার আগের দিন ৩০ তারিখ, বুধবার। সূত্রের খবর, বিকেলে মুম্বই পৌঁছে সন্ধ্যায় ‘জলসা’য় যেতে পারেন মমতা। কলকাতায় চলচ্চিত্র উৎসবের উদ্বোধনে একাধিক বার মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে এক মঞ্চে উপস্থিত থেকেছেন অমিতাভ-জয়া। মুম্বইয়ে মমতা গেলে যেন অবশ্যই ‘জলসা’য় আসেন, সেই আমন্ত্রণ করে রেখেছিলেন জয়াই। এ বার বিরোধী জোটের বৈঠক উপলক্ষে মমতা বলিউড নগরীতে আসছেন জেনে জয়া সেই আমন্ত্রণ আবার মনে করিয়ে দিয়েছেন বলে তৃণমূল কংগ্রেস সূত্রে খবর।
তবে বাংলার ‘ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর’ শাহরুখ খানের হাতে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী রাখি বাঁধতে যাবেন কি না, তা এখনও পরিষ্কার নয়। একটি সূত্রের বক্তব্য, ওই দিন শাহরুখের মুম্বইয়ে থাকা নিশ্চিত নয়। আবার পরের দু’দিন মুখ্যমন্ত্রীর রাজনৈতিক ব্যস্ততা বেশি।
অমিতাভদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ এবং রাখি বেঁধে শুভেচ্ছা বিনিময়ের পাশাপাশি একটি রাজনৈতিক সম্ভাবনাও বিরোধী শিবিরের মধ্যে চর্চায় উঠে আসতে শুরু করেছে। উত্তরপ্রদেশ থেকে সমাজবাদী পার্টির সাংসদ জয়ার রাজ্যসভায় মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী বছর এপ্রিলে। ওই সময়ে বাংলায় তৃণমূলের চার সাংসদেরও মেয়াদ ফুরোবে। তখন বাংলা থেকে জয়াকে রাজ্যসভায় ফের জায়গা করে দেওয়া হতে পারে, এমন জল্পনা ভাসছে বিরোধী শিবিরে। বাংলায় এসে ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের সঙ্গে বিজেপি-বিরোধী প্রচারে দেখা গিয়েছিল জয়াকে। তাঁকে রাজ্যসভায় তৃণমূল নেত্রী কাজে লাগাতে চাইতে পারেন, জল্পনা এমনই। তৃণমূলের এক প্রথম সারির নেতা অবশ্য বলছেন, ‘‘আগামী বছরের লোকসভা নির্বাচন অত্যন্ত গুরূত্বপূর্ণ। তার আগে কখন কী ঘটতে পারে, এত আগে কেউই বলতে পারে না। কখন কোন পদক্ষেপ প্রয়োজনীয়, দলনেত্রীই তা ঠিক করবেন।’’
মুম্বই যাওয়ার আগে কলকাতাতেও পর পর দু’দিন একাধিক কর্মসূচি রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর। মেয়ো রোডে আজ, সোমবার তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সমাবেশে তিনিই প্রধান বক্তা। তার পরে বিধানসভায় রয়েছে রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠক। বিধানসভা চত্বরে বনমহোৎসবের অনুষ্ঠানেও প্রধান অতিথি মুখ্যমন্ত্রী। পর দিন, মঙ্গলবার নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীর পৌরোহিত্যে সর্বদল বৈঠক ডাকা হয়েছে ‘বাংলা দিবস’ ও রাজ্য সঙ্গীত ঠিক করার আলোচনার জন্য।