—ফাইল চিত্র
অতিমারি আবহে সব বিধিনিষেধ মেনেই ২৬তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের (কিফ) আয়োজন করা হয়েছে। অন্য বছর নভেম্বরে হলেও, করোনার কারণে গত বছর এই উৎসব পিছিয়ে দেওয়া হয়। আগামী ৮ জানুয়ারি নবান্ন সভাঘর থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উৎসবের ভার্চুয়াল উদ্বোধন করবেন। শনিবার সাংবাদিক বৈঠকে এই কথা জানালেন কিফের চেয়ারম্যান পরিচালক রাজ চক্রবর্তী। এ দিন তাঁর সঙ্গে মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের পূর্ত, ক্রীড়া ও যুবকল্যাণ মন্ত্রী তথা কিফের মুখ্য উপদেষ্টা অরূপ বিশ্বাস, তথ্য-সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী তথা কিফের সহ-চেয়ারম্যান ইন্দ্রনীল সেন, শর্ট ফিল্ম এবং ডকুমেন্টরি কমিটির চেয়ারম্যান পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়, পাওলি দাম প্রমুখ।
অন্য বারের চেয়ে এ বার চলচ্চিত্র উৎসবের জৌলুস অনেকটাই কম। কারণ অতিমারির জন্যই দেশ-বিদেশের কোনও বিশিষ্ট অতিথি সশরীর উপস্থিত থাকতে পারবেন না। ভার্চুয়াল মাধ্যমে তাঁদের হাজির করানোর চেষ্টা চলছে বলে উদ্যোক্তাদের তরফে জানানো হয়েছে। তবে সত্যজিৎ রায় স্মারক বক্তৃতা দেওয়ার জন্য ৯ জানুয়ারি শহরে আসছেন ‘আর্টিকল ফিফটিন’, ‘থাপ্পড়’-খ্যাত পরিচালক অনুভব সিংহ। মূল ধারার ভারতীয় ছবির সামাজিক দায়বদ্ধতা বিষয়ে বক্তব্য রাখবেন তিনি। এ বারের উৎসবে দেখানোর জন্য আবেদনকারী ১১৭০টি ছবির মধ্যে ৮১টি পূর্ণ দৈর্ঘ্যের ছায়াছবি, ৫০টি স্বল্প দৈর্ঘ্যের ছবি এবং তথ্যচিত্র বাছাই করা হয়েছে। অংশ নিয়েছে ৪৫টি দেশ। উৎসবের উদ্বোধনী ছবি সত্যজিৎ রায়ের ‘অপুর সংসার’। ‘স্পেশ্যাল ট্রিবিউট’ বিভাগে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, দক্ষিণ কোরীয় পরিচালক কিম কি-দুক, ফার্দান্দো সোলানাস, বাসু চট্টোপাধ্যায়, ঋষি কপূর, ইরফান খান, তাপস পাল, অমলাশঙ্কর এবং সন্তু মুখোপাধ্যায়ের ছবি দেখানো হবে।
জন্ম শতবর্ষে স্মরণে দেখানো হবে ফেদেরিকো ফেলিনি, এরিক রোমার, পণ্ডিত রবিশঙ্কর, হেমন্ত মুখোপাধ্যায় ও ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি। চলচ্চিত্র উৎসব চলাকালীনই বিবেকানন্দের জন্মদিন (১২ জানুয়ারি) উপলক্ষে তাঁকে নিয়ে ছবিও দেখানো হবে।
করোনাকালের নব্য স্বাভাবিকতার অঙ্গ হিসেবে প্রেক্ষাগৃহের ৫০ শতাংশ আসনেই দর্শকদের বসানো হবে। টিকিট বুক করতে হবে অনলাইনে ‘বুক মাই শো’ থেকে। মাল্টিপ্লেক্স এবং সিঙ্গলস্ক্রিনের বদলে শুধুমাত্র সরকারি প্রেক্ষাগৃহেই এ বার ছবির প্রদর্শন হবে। যার মধ্যে রয়েছে নন্দন ওয়ান, নন্দন টু, নন্দন থ্রি, রবীন্দ্রসদন, শিশির মঞ্চ, রবীন্দ্র ওকাকুরা (সল্টলেক), কলকাতা ইনফরমেশন সেন্টার, চলচ্চিত্র শতবর্ষ ভবন। স্বাভাবিক কারণেই উৎসবের আড়ম্বর কমানো হলেও ছবির মানের ক্ষেত্রে কোনও আপস করা হয়নি বলে জানালেন কিফ কর্তৃপক্ষ।