ফের ‘জয় শ্রীরাম’, এবার আর পাত্তা দিলেন না মমতা

বৃহস্পতিবার শ্রীরামপুরের মাহেশে রথ টানতে আসেন মুখ্যমন্ত্রী। রথের রশিতে টান দেওয়ার জন্য যখন তিনি অপেক্ষা করছেন, তখনই কিছু লোক বার কয়েক ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি দেন।

Advertisement

প্রকাশ পাল

শ্রীরামপুর শেষ আপডেট: ০৫ জুলাই ২০১৯ ০২:৩৩
Share:

—ফাইল চিত্র।

নিজেকে কি বদলে ফেলছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়? ‘জয় শ্রীরাম’ শুনেও তাঁর নির্বিকার থাকা দেখে পর্যবেক্ষক মহলে এমনই আলোচনা শুরু হয়েছে।

Advertisement

বৃহস্পতিবার শ্রীরামপুরের মাহেশে রথ টানতে আসেন মুখ্যমন্ত্রী। রথের রশিতে টান দেওয়ার জন্য যখন তিনি অপেক্ষা করছেন, তখনই কিছু লোক বার কয়েক ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি দেন। ভিড়ের মধ্যে মুখ্যমন্ত্রীর কানে ওই ধ্বনি পৌছেছে কি না, বলা কঠিন। তবে পৌঁছলেও দৃশ্যত তাঁকে আমল দিতে দেখা যায়নি।

অথচ মাসখানেক আগেও ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি নিয়ে তুলকালাম ঘটেছে বাংলায়। লোকসভা ভোট-পর্ব থেকেই বিজেপির ‘জয় শ্রীরাম’ রাজনীতির বিরোধিতা করেছেন মমতা। প্রচারে যাওয়ার সময় গাড়ি থেকে নেমে স্লোগানকারীদের দিকে রীতিমতো তেড়ে যেতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। ভোটের পরে ভাটপাড়া, নৈহাটি অঞ্চলে ‘জয় শ্রীরাম’ শুনে গাড়ি থেকে একাধিকবার নেমে পড়েছেন তিনি। মেজাজ হারিয়েছেন। যা নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে দীর্ঘ বিতর্ক হয়েছে। রাজ্যে বিজেপিও ক্রমশ ‘জয় শ্রীরাম’কে রাজনৈতিক স্লোগানে পরিণত করেছে। মুখ্যমন্ত্রীকে দেখলেই তাঁকে ‘উত্যক্ত’ করার অস্ত্র হিসেবে এই স্লোগান ব্যবহার করতে শুরু করেছিল গেরুয়া শিবির।

Advertisement

বৃহস্পতিবার তাঁকে লক্ষ্য করে সেই স্লোগান ভেসে এলেও মমতার ‘নির্বিকার’ থাকা অবশ্যই তাৎপর্যপূর্ণ। যা নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে রাজনৈতিক মহলের একাংশের গুঞ্জন, প্রশান্ত কিশোর রাজ্যে আসার পরেই কি মমতার এই পরিবর্তন? তাঁদের বক্তব্য, মুখ্যমন্ত্রী যদি এই স্লোগানে আমল না দেন, তা হলে স্বাভাবিক ভাবেই গেরুয়া শিবিরের অস্ত্রটি ভোঁতা হয়ে যাবে।

এ দিনের ঘটনার পর বিজেপি নেতা ভাস্কর ভট্টাচার্য, শ্যামল বসুদের বক্তব্য, ‘‘জগন্নাথের পাশাপাশি শ্রীরামের নামেও স্লোগান দিয়েছেন আমাদের লোকেরা। এটা নতুন নয়। দুই দেবতা ভিন্ন অঙ্গে একই অবতার। মুখ্যমন্ত্রী শ্রীরামের নাম ভুলিয়ে দিতে চাইলেও পারবেন না।’’ জেলা তৃণমূল সভাপতি দিলীপ যাদবের অবশ্য দাবি, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর কাছাকাছি ছিলাম। জয় জগন্নাথ বাদে অন্য ধ্বনি শুন‌িনি।’’ পুলিশেরও দাবি, এমন কিছুই হয়নি।

এ দিন নির্ধারিত সময়ের প্রায় এক ঘণ্টা আগে বেলা দেড়টা নাগাদ মমতা মাহেশে পৌঁছে যান। খারাপ আবহাওয়ার জন্য হেলিকপ্টারের পরিবর্তে সড়ক পথে আসতে হয় তাঁকে। মন্দিরে ঢুকে প্রথমে জগন্নাথের বিগ্রহকে প্রণাম করেন তিনি। এর পর মন্দির চত্বরেই বক্তৃতা করেন। জানান, মাহেশ বাংলার পর্যটনে ‘বড় জায়গা’ পাবে। পর্যটন প্রকল্পের কাজ চলছে। টাকার অভাব হবে না। আকবর আলি খোন্দকার সাংসদ থাকার সময় মাহেশে রথ টানতে এলেও কখনও মন্দিরে ঢোকেননি বলেও জানান মুখ্যমন্ত্রী।

মুখ্যমন্ত্রীর বক্তৃতার পরেই দেবতাদের বিগ্রহ রথে তোলার প্রক্রিয়া শুরু হয়। মমতা তখন ঘণ্টাখানেক স্থানীয় ইএসওপিডি হাসপাতালের ঘরে অপেক্ষা করেন। বেলা ৩টে নাগাদ মুখ্যমন্ত্রী রথের সামনে যান। সেখানেও মঞ্চে বক্তৃতা করেন। তার পরে নীচে নেমে দাঁড়াতেই— ‘জয় শ্রীরাম’। সে দিকে ভ্রূক্ষেপও না করে রথের রশিতে টান দিয়ে বেলা সওয়া তিনটে নাগাদ এলাকা ছাড়েন মুখ্যমন্ত্রী।

অন্য বারের মতো, এ দিনও কলকাতায় ইসকনের রথযাত্রার সূচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী।

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement