নয়া নাগরিকত্ব আইন বিরোধিতায় তৃতীয় দিন পথে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পিটিআই
পশ্চিমবঙ্গে নয়া নাগরিকত্ব আইন কার্যকর করতে দেব না, এই স্লোগান নিয়ে তৃতীয় দিন পথে নামলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন হাওড়া ময়দান শুরু হয়ে ব্রেবোর্ন রোড, টি-বোর্ড হয়ে মিছিলের গন্তব্য ধর্মতলার ডোরিনা ক্রসিং। তৃণমূল সূ্ত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার দুুপুর ২টোয় রানি রাসমণি রোডে এবং শুক্রবার দুুপুর তিনটেয় পার্ক সার্কাসে নয়া নাগরিক আইন বিরোধি সভাও করবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সিএবি সংসদে পাশ হওয়ার পরেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন উত্তর ও দক্ষিণ কলকাতা এবং হাওড়া জুড়ে তিন দিন মহামিছিল করবে তৃণমূল। কথা মতো সোমবার রেড রোড থেকে জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ি পর্যন্ত প্রায় চার কিলোমিটার পদযাত্রা করেন তিনি। সঙ্গে ছিল বিশাল মিছিল। মঙ্গলবারও দুপুর ১টা নাগাদ যাদবপুরের ৮-বি বাসস্ট্যান্ড থেকে মিছিল করে ভবানীপুরের যদুবাবুর বাজার পর্যন্ত যান। হাজার হাজার মানুষের সামনে সেখানেই তিনি বার্তা দেন- আমরা এই এই রাজ্যে নয়া নাগরিকত্ব আইন কার্যকর করতে দেব না। এদিনও মঞ্চ থেকে একই কথা বললেন মমতা—
•তৃণমূল নেত্রীর কথায়: শান্তির স্বার্থে এই আন্দোলন সংগঠিত করার চেষ্টা চলছে। সমাজের সর্বস্তরের মানুষ আমার সঙ্গে হাঁটছে। সকলকে ধন্যবাদ।
• মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, ‘‘আমরা হিংসা চাই না বলে পথে নেমেছি। এক হাজার বুলেটের যা দাম, দশটা মানুষ পথে নেমে কথা বললে তার দাম বেশি’’।
• মমতার কথায়: ‘‘বুলেট দিয়ে গণতান্ত্রিক আন্দোলন আটকানো যায় না।’’
•মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশ্ন- ‘‘আধার কার্ড চলবে না, এ কথা বলছেন কেন? আধার কার্ড জরুরি নয় তা হলে জনতার ৬ হাজার টাকা খরচ করালেন কেন’’?
•মমতা জানতে চান- ‘‘ আধার না চাইলে ব্যাঙ্ক সংযুক্তিকরণ করালেনই বা কেন?
•‘‘ভোটার কার্ড হবে না বলছেন। তা হলে ভোটে জিতে ক্ষমতায় এলেন কীসের ভিত্তিতে?’’, প্রশ্ন মমতার।
•মমতা বলেন, ‘‘বাবরির পরে দেশে আর কখনও অশান্তি দেখিনি। এখন দেখুন অসম, কাশ্মীর, ত্রিপুরা জ্বলছে।’’
• মমতার কথায়: ‘‘কয়েকটি জায়গায় হিংসার ঘটনা ঘটেছে। রেলে ভাঙচুরও। আমি সবাইকে শান্ত হতে বলেছি। আর আপনারা বলছেন গুলি করতে। গণতান্ত্রিক দেশে এমন কথা বৈধ?’’
•মমতার কথায়: ‘‘সবকা সাথ সবকা বিকাশ বলে আপনারা সবার মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করছেন কেন’’?
• ‘‘সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে এই আইন পাশ করানো হয়েছে। কিন্তু এই আইন অগণতান্ত্রিক, অনৈতিক’’, বললেন মমতা।
• মমতা বলেন: ‘‘আগে সিপিএম ভোট করতে দিত না। একেক জনের দশটা পনেরোটা ভোটার কার্ড থাকত। আমি বলেছিলাম নো আইডেন্টিটি কার্ড নো ভোট। আমি সেটা নিয়েই পার্লামেন্টে গিয়েছিলাম। আজ বাজারে ফেক ভিডিও ছেড়ে আমার নামে মিথ্যে ছড়ানো হচ্ছে। বিজেপির টাকায় এই ভিডিও হয়। এই ভিডিও ছড়াতে দেবেন না। ’’
-----------------------------------------------------------------------------------------------
•এদিন হাওড়া ময়দানের মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন অধ্যাপক। মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন কয়েকজন বাউলশিল্পীও। তাঁরা নাগরিকত্ব আইন বিরোধি গান দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু করেন।
• অনুষ্ঠানের শুরুতেই অন্য দু’দিনের মতোই শপথবাক্য পাঠ করান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
• মমতা একটি করে বাক্য বলতে থাকেন। তাঁর সঙ্গে সমবেত জনতা সেই বাক্য উচ্চারণ করে।শপথের মূল কথা: ্সর্বধর্মসমন্বয় আমাদের আদর্শ। কাউকে বাংলা ছাড়তে হবে না। কাউকে দেশ ছাড়তে হবে না।
• দুপুর ১টা ১০ মিনিট নাগাদ হাওড়া ময়দান থেকে শুরু হল মিছিল।
•আটোসাঁটো নিরাপত্তার মধ্যে দুপুর ১টা ১৫মিনিট নাগাদ হাওড়া ব্রিজের কাছে পৌঁছল মিছিল।
• দুপুর ১টা ৪০ মিনিট নাগাদ মিছিল পৌঁছল ব্রেবোর্ন রোডে।
•টি বোর্ডের কাছে এই মিছিল।ঘড়িতে ১টা ৫০ মিনিট।
• দুপুর ১ টা ৫৫ মিনিট নাগাদ লালবাজারের কাছে পৌঁছল মিছিল।
• ঘড়ির কাটায় দুুপুর ২টো। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে মিছিল পৌঁছল বেন্টিঙ্ক স্ট্রিট।