নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম কমাতে বৈঠকে বসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। ফাইল চিত্র।
ক্রমান্বয়ে বেড়ে চলা নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীর মূল্যে রাশ টানতে জরুরি বৈঠক ডাকল দিল রাজ্য সরকার। আগামী ১৪ নভেম্বর নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে এ ব্যাপারে বৈঠকে বসতে চলেছেন রাজ্যের পাঁচ মন্ত্রী। নবান্নের এক শীর্ষ আধিকারিক শনিবার জানান, ওই বৈঠকে কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, কৃষি ও বিপণন মন্ত্রী বেচারাম মান্না, উদ্যানপালনমন্ত্রী সুব্রত সাহা, মৎস্যমন্ত্রী বিপ্লব রায়চৌধুরী, প্রাণিসম্পদ বিকাশমন্ত্রী স্বপন দেবনাথ থাকবেন। বৈঠকে যোগ দিতে বলা হয়েছে সংশ্লিষ্ট দফতরের সচিব এবং দ্রব্যমূল্য সংক্রান্ত টাস্ক ফোর্সের সদস্যদেরও। বৈঠকে থাকবেন কলকাতা এবং বিভিন্ন পুলিশ কমিশনারেটের শীর্ষ আধিকারিকেরাও।
দুয়ারে পঞ্চায়েত নির্বাচন। মাস কয়েকের মধ্যেই তার নির্ঘণ্ট তৈরি হয়ে যাবে। তারই প্রস্তুতির ইশারা মিলছে ওই বৈঠকে, এমনই দাবি বিজেপি এবং বামেদের। নবান্নের শীর্ষ স্থানীয় এক আধিকারিকও জানান, রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচনের ‘প্রস্তুতি’ আগাম সেরে রাখতেই বৈঠকে পুলিশ ও প্রশাসনের আধিকারিকদের এক সঙ্গে ডাকা হয়েছে। এবং সেই লক্ষ্যেই এ বার নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম কমাতে বৈঠকে বসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
নতুন বছর শুরুতেই পঞ্চায়েত নির্বাচনের ভোটার তালিকা চূড়ান্ত হয়ে যাওয়ার কথা। তা মিটতেই শুরু হয়ে যাবে নির্বাচন কমিশনের ভোট-প্রস্তুতি। রাজনীতির বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, পঞ্চায়েত নির্বাচনে স্থানীয় বিভিন্ন সুবিধা-অসুবিধা বা আঞ্চলিক ইস্যু’ই প্রাধান্য পেয়ে থাকে। সেই তালিকায় নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর মূল্যবৃদ্ধি যে একটি জ্বলন্ত ইস্যু তা সরকার জানে। তাই গ্রামীণ মানুষের হাতে স্বল্প মূল্যে আনাজ, ডিম-সহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য পৌঁছে দেওয়ার পথ আলোচ্য বিষয় হতে পারে বলে মনে করছে প্রশাসনের একাংশ।
নবান্নের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘এ ব্যাপারে জেলার বিভিন্ন বাজারে জিনিসপত্রের দাম সংক্রান্ত বিষয়ে খোঁজ খবর নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। আর সে রিপোর্ট হাতে পেয়েই তিনি দেখেছেন, শুধু শহরাঞ্চল নয়, গ্রামীণ এলাকাতেও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি হয়েছে অস্বাভাবিক হারে। বৈঠকের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এর পরেই।’’ এ ব্যাপারে ইতিমধ্যেই জেলা স্তরে বিভিন্ন দফতরের আধিকারিকদের কাছে প্রয়োজনীয় নির্দেশ পাঠানো হয়েছে। এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যের সঙ্গে রাজ্যের প্রায় সব মানুষই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে যুক্ত। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে না আনতে পারলে তার ছায়া পঞ্চায়েত ভোটে পড়তে বাধ্য। তাই মূল্যবৃদ্ধিতে রাশ টানা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে এখন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।।’’