মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তিনি যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তা রাখবেন বলে বুধবার মন্তব্য করলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস।
এ দিন সকালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠানে কলেজ স্ট্রিট ক্যাম্পাসে যান রাজ্যপাল। সেখানেই এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ কথা জানান। এ দিনই পড়ন্ত বিকেলে রাজভবনে পৌঁছন মুখ্যমন্ত্রী। সেখান থেকে বেরিয়ে মমতা বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের রায় অনুযায়ী, আমার সঙ্গে রাজ্যপালের বৈঠক ভাল হয়েছে। পুরোটাই আমরা আলোচনা করেছি। ২৬ জানুয়ারি আসব আবার।’’
রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্য-রাজ্যপালের সংঘাত সুপ্রিম কোর্টে গড়িয়েছে। সেখানে গত সোমবার রাজ্যের অভিযোগ ছিল, আদালতের নির্দেশে মুখ্যমন্ত্রী-রাজ্যপালের বৈঠকে রাজ্যপাল তথা আচার্য যে সব আশ্বাস দিয়েছিলেন, তা তিনি রাখেননি। সেই প্রসঙ্গেই এ দিন প্রতিশ্রুতি রাখার কথা বলেছেন রাজ্যপাল। তিনি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী আমার সাংবিধানিক সহকর্মী। আমি মুখ্যমন্ত্রীকে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছি তা রাখব। তবে প্রতিশ্রুতি প্রতিশ্রুতির জায়গায়। আইন আইনের জায়গায়। আইনে যা নির্দেশ আসবে, তা মানা হবে।”
এ দিন ক্যাম্পাসে রাজ্যপালের সামনেই অবিলম্বে বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ, ছাত্র সংসদ নির্বাচন, উচ্চ শিক্ষায় কেন্দ্রীয় শিক্ষানীতি চালু না করা-সহ একাধিক দাবিতে ছাত্র সংগঠন টিএমসিপি এবং ডিএসও বিক্ষোভ দেখায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে রাজ্যপালের গাড়ি ঢোকা-বেরোনোর সময়ে দেওয়া হয় 'গো ব্যাক স্লোগান'। বিক্ষোভকারীদের হাতে ছিল কালো পতাকা। অন্তর্বর্তী উপাচার্য শান্তা দত্ত দে বলেন, "বিক্ষোভ যাঁরা দেখিয়েছে তাঁদের মধ্যে কতজন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র তা নিয়ে আমার সন্দেহ আছে। অধিকাংশই বহিরাগত।"
টিএমসিপির অভিরূপ চক্রবর্তী বলেন, “স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ না হওয়ায় বহু গুরুত্বপূর্ণ কাজ আটকে। রাজ্য সরকারের সঙ্গে সহযোগিতা করছেন না রাজ্যপাল। অন্যদিকে সুপ্রিম কোর্টে মামলা লড়ার জন্য তিনি বিশ্ববিদ্যালয়গুলির কাছ থেকে অর্থ সাহায্য নিচ্ছেন।” ডিএসও নেতা মিজানুর রহমান জানান, অবিলম্বে স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ করতে হবে। রাজ্য এবং কেন্দ্রের নতুন শিক্ষানীতি চালু করা যাবে না। অবিলম্বে ছাত্র সংসদ নির্বাচন করতে হবে।
এ দিন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষ্ঠানে বাংলায় বক্তব্য রাখেন রাজ্যপাল। তাঁর দাবি, "১০ কোটি মানুষ আমার সঙ্গে আছে। দুর্নীতিমুক্ত ক্যাম্পাস ও শিক্ষাব্যবস্থা গড়তে আমি শেষ পর্যন্ত লড়ব।’’ উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন উপাচার্য সোনালী চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রাক্তন দুই সহ-উপাচার্য ধ্রবজ্যোতি চট্টোপাধ্যায়, মীনাক্ষী রায়, প্রাক্তন রেজিস্ট্রার বাসব চৌধুরী।