গণপ্রহার রুখতে নতুন আইনের ভাবনা রাজ্যের

গণপ্রহার সংক্রান্ত মামলায় দেশের সবক’টি রাজ্যকে সুসংহত পদক্ষেপ করা এবং সে বিষয়ে রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট।

Advertisement

চন্দ্রপ্রভ ভট্টাচার্য ও প্রদীপ্তকান্তি ঘোষ

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ অগস্ট ২০১৯ ০১:৫৯
Share:

বিধানসভা ভবন

পুলিশি পদক্ষেপের একাধিক নির্দেশ থাকলেও নেই নির্দিষ্ট আইন। অথচ সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে সুসংহত ব্যবস্থা করতেই হবে। সে কারণে গণপ্রহার রুখতে পৃথক আইন তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। আগামী ২৬ অগস্ট থেকে বিধানসভার অধিবেশন শুরু হওয়ার কথা। সব ঠিকঠাক থাকলে, সেই অধিবেশনে বিলটি আসার সম্ভাবনা রয়েছে।

Advertisement

গণপ্রহার সংক্রান্ত মামলায় দেশের সবক’টি রাজ্যকে সুসংহত পদক্ষেপ করা এবং সে বিষয়ে রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। ২০১৮ সালের ওই নির্দেশের পর পুলিশকে একগুচ্ছ করণীয় স্থির করে দিয়েছিল রাজ্য সরকার। গত বছর ওই নির্দেশিকা কার্যকর হলেও মূল সমস্যা দেখা দেয় আইনি পদক্ষেপের প্রশ্নে। প্রশাসনিক বিশেষজ্ঞদের একাংশের ব্যাখ্যা, আলাদা করে গণপ্রহার বা গণপ্রহারে মৃত্যুতে (লিঞ্চিং) সুনির্দিষ্ট শাস্তির বিধান ভারতীয় দণ্ডবিধিতে (ইন্ডিয়ান পেনাল কোড বা আইপিসি) সে ভাবে নেই। সে কারণে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পরে রাজস্থান সরকার পৃথক আইন করেছে। সে পথ নিচ্ছে এ রাজ্যও। বর্তমানে এ ধরনের ঘটনায় ক্ষেত্রবিশেষে আইপিসি-র ৩০২ (খুন) বা ৩০৪ নম্বর ধারায় (অনিচ্ছাকৃত খুন) অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।

রাজস্থানের নতুন আইনে গণপ্রহারে আক্রান্তের মৃত্যুর ঘটনা ঘটলে অভিযুক্তদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং সর্বোচ্চ পাঁচ লক্ষ টাকা পর্যন্ত জরিমানার ব্যবস্থা রয়েছে। গণপ্রহারে আক্রান্ত গুরুতর জখম হলে অভিযুক্তের ১০ বছরের কারাদণ্ড এবং তিন লক্ষ টাকা পর্যন্ত জরিমানা, আক্রান্ত অল্প আহত হলে অভিযুক্তের সাত বছরের কারাদণ্ড এবং এক লক্ষ টাকা পর্যন্ত জরিমানার ব্যবস্থা রয়েছে। পুলিশকর্তাদের একাংশের ধারণা, এ রাজ্যের নতুন আইনেও প্রায় একই ধরনের শাস্তির ব্যবস্থা রাখা হতে পারে। এক কর্তার কথায়, ‘‘শুধু পুলিশি ব্যবস্থাই যথেষ্ট নয়। কড়া আইনে শাস্তির ব্যবস্থা না থাকলে এমন ঘটনা আটকানো মুশকিল।’’ এ বিষয়ে প্রস্তাবিত খসড়া আইন দফতরের অনুমোদন সাপেক্ষে বিধানসভায় পেশ করার কথা।

Advertisement

তবে গণপ্রহারের ক্ষেত্রে অভিযুক্তদের চিহ্নিতকরণে পুলিশের অনেক সময়েই সমস্যা হয়। সংশ্লিষ্টমহলের ব্যাখ্যা, ওই ঘটনার নির্ভুল তথ্য-প্রমাণ জোগাড় করা সব সময় সহজ না-ও হতে পারে। কারণ, অনেক জায়গায় ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরার সুবিধা থাকে না। মূলত কার প্ররোচনায় গণপ্রহারের ঘটনাটি ঘটেছে, তা চিহ্নিত করাও অনেক সময় কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। আবার অনেক লোক ঘটনার সঙ্গে যুক্ত থাকে বলে স্থানীয় ভাবে বিষয়টি আড়াল করার প্রবণতা বেশি থাকে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement