ধুমারপাহাড়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসনিক সভা ও বৈঠককে ঘিরে আশায় ছিলেন মুর্শিদাবাদ জেলার মানুষ। মুর্শিদাবাদ জেলা ভাগ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী কী বলছেন, সে দিকে তাকিয়ে ছিলেন তাঁরা। তেমনি মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ঘিরে কোনও পরিকল্পনার কথা জানাচ্ছেন কিনা এবং মুর্শিদাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবিষ্যৎ কী, তা জানতেও উৎসুক ছিলেন জেলার মানুষ।
কিন্তু বুধবার সাগরদিঘি ব্লকের ধুমারপাহাড় এলাকায় প্রশাসনিক সভার মঞ্চ থেকে জেলা ভাগ নিয়ে কোনও কথা বলেননি মুখ্যমন্ত্রী। তবে বিকেলে বহরমপুর রবীন্দ্রসদনে প্রশাসনিক বৈঠকে ‘মুর্শিদাবাদ যে বড় জেলা’ সে কথা বললেও সরাসরি জেলা ভাগ নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি।
এ দিন প্রশাসনিক বৈঠকে ডিজিটাল রেশন কার্ডের প্রসঙ্গ বলতে গিয়ে জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মিনা বলেন, ‘‘ডিজিটাল রেশন কার্ডের জন্য রাজ্যে সব থেকে বেশি ১৩ লক্ষ আবেদন পেয়েছি।’’ সেই সময়ে জেলাশাসকের মুখের কথা কেড়ে নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন ‘‘তোমাদের জেলা তো বড়। তিনটি এমপির জেলা। উত্তর ২৪ পরগনায় অবশ্য স্বাস্থ্য ও পুলিশ জেলা আলাদা হয়েছে। প্রশাসনিক দিকে থেকে উত্তর ২৪ পরগনা প্রথম, দক্ষিণ ২৪ পরগনা দ্বিতীয় এবং তার পরে মুর্শিদাবাদ।’’
সেই সময়ে বৈঠকে হাজির জেলার জনপ্রতিনিধিরা একটু নড়েচড়ে বসেন। ভেবেছিলেন মুর্শিদাবাদ জেলা ভাগ নিয়ে বুঝি এ বার মুখ্যমন্ত্রী কিছু বলবেন। কিন্তু জেলা ভাগ নিয়ে কোনও কথা না বলে পাশ কাটিয়ে মুখ্যমন্ত্রী প্রসঙ্গে চলে যান।
এ দিন প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মুর্শিদাবাদ বিশ্ববিদ্যালয় বিষয়ে খোঁজ নেন। বৈঠকে পূর্ত দফতরের এক আধিকারিককে দাঁড় করিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আপনারা কী বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিটেল প্রজেক্ট রিপোর্ট (ডিপিআর) তৈরি করেছেন? মুর্শিদাবাদে যে বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে তার ডিপিআর তো পূর্ত দফতর করছে? বিশ্ববিদ্যালয়ের বাজেট কত?’’
মুখ্যমন্ত্রীর ওই প্রশ্নের উত্তর দিতে ওঠেন রাজ্য শিক্ষা দফতরের প্রধান সচিব মণীশ জৈন। তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে বলেন, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিটেল প্রজেক্ট রিপোর্ট পরিকল্পনা স্তরে আছে।’’ এর পরেই রাজ্যের সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিপিআর যাতে একই রকম হয় সে নির্দেশও দেন মুখ্যমন্ত্রী। বৈঠকে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের প্রসঙ্গ তোলেন মুখ্যমন্ত্রী নিজেই। মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষকে দাঁড় করিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘মেডিক্যালে মাঝে মধ্যে পূর্ত দফতরের এসি থেকে আগুন লেগে যায়। দেখে নেবেন সিসিটিভি যেন কেউ ঘুরিয়ে দিতে না পারে। এমন জায়গায় রাখবেন যাতে হাত না পায়। আগুন লাগানোর ঘটনা তো ভেতরকার লোকেই করে।’’