Mamata Banerjee

গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বরদাস্ত নয়, কোচবিহারে বৈঠকে নেতাদের বার্তা নেত্রী মমতার

সমন্বয় বাড়াতে সপ্তাহে একটি করে বৈঠক করার নির্দেশ দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কোচবিহার শেষ আপডেট: ১৫ ডিসেম্বর ২০২০ ২০:০৮
Share:

কোচবিহারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —নিজস্ব চিত্র

লোকসভা ভোটের মুখে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে গিয়ে সাংসদ হয়েছেন নিশীথ প্রামাণিক। সদ্য বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন মিহির গোস্বামী। জেলার অন্যান্য নেতাদের মধ্যেও গোষ্ঠীকোন্দলের খবর রাজনৈতিক মহলে অপরিচিত নয়। এমন পরিস্থিতিতেই কোচবিহারে এসে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব মেটাতে কড়া বার্তা দিলেন তৃণমূল নেত্রী। সমন্বয় বাড়াতে সপ্তাহে একটি করে বৈঠক করার নির্দেশ দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

Advertisement

মঙ্গলবার জলপাইগুড়ির সভা সেরে হেলকপ্টারে কোচবিহার বিমানবন্দরে নামেন মমতা। বিমানবন্দরেই জেলার শীর্ষনেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকে বসেন। ছিলেন জেলার তৃণমূলের সমস্ত বিধায়ক, পৌর প্রশাসক, জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি পার্থপ্রতিম রায় এবং দলের নেতা আব্দুল জলিল আহমেদ, জিসিপিএ নেতা তথা রাজবংশী ভাষা অ্যাকাডেমির চেয়ারম্যান বংশীবদন বর্মন-সহ অন্যান্য নেতা-নেত্রীরা। দলীয় সূত্রে খবর, বৈঠকে দলনেত্রী স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছেন প্রতি সপ্তাহে একটি করে বৈঠক করতে হবে। আর সেই বৈঠকে রবীন্দ্রনাথ ঘোষ, উদয়ন গুহ, বিনয়কৃষ্ণ বর্মন এবং পার্থপ্রতিমকে উপস্থিত থাকতেই হবে। এক জনও অনুপস্থিত থাকলে বৈঠক হবে না।

অর্থাৎ তৃণমূল নেত্রীর বার্তা স্পষ্ট, দলের মধ্যে দলবাজি করা যাবে না। সবাইকে মিলে মিশে চলতে হবে। বৈঠকে উপস্থিত নেতাদের সূত্রে জানা গিয়েছে, মমতা স্পষ্ট হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, কারও নামে কোনও অভিযোগ উঠলে কড়া হাতে তাঁর বা তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে দল।

Advertisement

আরও পড়ুন: শুভেন্দুর ‘বহিরাগত’ ও ‘দলতন্ত্রে’র কটাক্ষের জবাব দিলেন মন্ত্রী ব্রাত্য

লোকসভা ভোটে উত্তরবঙ্গে জমি হারিয়েছে তৃণমূল। তুলনায় ভাল জায়গায় বিজেপি। ৮টির মধ্যে ৭টি আসনই পেয়েছে বিজেপি। একটি গিয়েছে কংগ্রেসের ঝুলিতে। ফলে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে উত্তরবঙ্গের লড়াই অনেকটাই কঠিন। তার উপর প্রায় সব জেলাতেই রয়েছে একাধিক গোষ্ঠীর মধ্যে দ্বন্দ্ব-সংঘাত। ব্যতিক্রম নয় কোচবিহারও।

কোচবিহারের রাজনৈতিক বাতাবরণের খবর যাঁরা রাখেন, রবীন্দ্রনাথ-পার্থপ্রতিমের ঠান্ডাযুদ্ধ অজানা নয় তাঁদের কাছে। লোকসভা ভোটে বিপর্যয়ের পরে বিনয়কৃষ্ণ বর্মনকে জেলা সভাপতি করেছিলেন মমতা। তার পর তাঁকেও সরিয়ে পার্থপ্রতিমকে জেলা সভাপতি করা হয়। তার পর থেকে রবীন্দ্রানাথ কিছুটা হলেও সক্রিয়তা কমিয়েছেন বলে মনে করেন দলের কর্মীদের অনেকেই। আবার এই রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে কোন্দলেই লোকসভার আগে দল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন নিশীথ প্রামাণিক।

আরও পড়ুন: প্রণবের বই ঘিরে প্রকাশ্য টুইট-যুদ্ধে পুত্র অভিজিৎ ও কন্যা শর্মিষ্ঠা

রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে মিহির গোস্বামীর সমীকরণ ভাল থাকলেও পার্থপ্রতিম জেলা সভাপতি হওয়ার পর থেকে গুরুত্ব হারিয়েছেন মিহির। দল কোনও কাজ না দেওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে তিনি দল ছেড়েছেন সম্প্রতি। অভিযোগ, মিহিরকে কার্যত নিষ্ক্রীয় করার পিছনেও পার্থপ্রতিম অনেকটাই দায়ী বলে মনে করেন পর্যবেক্ষকরা। আবার পার্থপ্রতিম বা রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে উদয়নের কোন্দল না থাকলেও দিনহাটায় তাঁর সঙ্গে স্থানীয় একাধিক গোষ্ঠীর দ্বন্দ্ব রয়েছে। সেই সব বিষয় মাথায় রেখেই দলনেত্রীর এই কড়া নির্দেশ বলে মত পর্যবেক্ষকদের।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement