বার্তায় নেই মজুরি-কথা

অনেক ক্ষেত্রেই অভিযোগ, জমি মাফিয়া চক্রের সঙ্গে মিলে চা বাগানের মালিকরা বাগানের জমি বেআইনিভাবে বিক্রি করে দিচ্ছেন। আবার বাগানের শ্রমিকদের জমির উপর কোনও সত্বাধিকার না থাকায় তাঁরা সরকারি বিভিন্ন সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

Advertisement

শুভঙ্কর চক্রবর্তী

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৩ জুলাই ২০১৮ ০৪:০১
Share:

প্রশাসক: উত্তরকন্যায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক

বেশ কিছু চা বাগানে যে অনিয়ম রয়েছে, তা ঠেকাতে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার উত্তরকন্যায় রাজ্য সরকার গঠিত টি অ্যাডভাইজারি কমিটির বৈঠক শেষে তিনি জানান, বাগানের যাবতীয় সমস্যা খতিয়ে দেখতে মুখ্যসচিবের নেতৃত্বে তৈরি হচ্ছে বিশেষজ্ঞ কমিটি।

Advertisement

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘৩ মাসেই রিপোর্ট দেবে কমিটি। তৈরি হবে নতুন আইনও।’’ তবে চা বলয়ে যা নিয়ে লাগাতার আন্দোলন চলছে, সেই নূন্যতম মজুরি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘এই নিয়ে আলাদা কমিটি আছে। শুক্রবার কলকাতায় সেই কমিটি বৈঠকে বসবে। সেখানেই ওই বিষয়ে আলোচনা হবে।’’

অনিয়ম ঠেকাতে কী কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে? মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘বাগানের পিএফ সমস্যা নিয়ে সংশ্লিষ্ট দফতরের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করা হবে। যে সব মালিক বাগান বন্ধ রাখছেন, তাঁদের জমির লিজ বাতিল করে নিলামে তোলা হবে।’’ একই সঙ্গে শ্রমিকদের সমস্যা সমাধানে আরও ঘোষণা করেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর দেওয়া তথ্য অনুসারে, উত্তরবঙ্গের চা বাগানগুলিতে নথিভুক্ত ২ লক্ষ ৭২ হাজার শ্রমিকের পাশাপাশি প্রায় ৮ লক্ষ শ্রমিক পরিবারের সদস্য রয়েছেন। সেই সদস্যদের কর্মসংস্থানমুখী নানা প্রশিক্ষণ ও স্বল্প সুদে ঋণ দেওয়ার কথা এ দিন ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।

Advertisement

অনেক ক্ষেত্রেই অভিযোগ, জমি মাফিয়া চক্রের সঙ্গে মিলে চা বাগানের মালিকরা বাগানের জমি বেআইনিভাবে বিক্রি করে দিচ্ছেন। আবার বাগানের শ্রমিকদের জমির উপর কোনও সত্বাধিকার না থাকায় তাঁরা সরকারি বিভিন্ন সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এ সব নানা সমস্যার সমাধানে চা বাগানের জমি নিয়ে পৃথক আইন তৈরি করা হচ্ছে বলেই এ দিন জানান মুখ্যমন্ত্রী। শ্রমিকদের আর্থিক স্বচ্ছলতা বৃদ্ধির জন্য বাগানে টি ট্যুরিজম ও হোম স্টে-র উপর জোর দেওয়ার কথাও জানান তিনি।

কিন্তু যে বিষয়টি নিয়ে শ্রমিকরা এখন আন্দোলনের পথে, সেই ন্যূনতম মজুরি নিয়ে এ দিন কোনও আশ্বাস দেওয়া হয়নি। জয়েন্ট ফোরামের নেতা মণিকুমার দার্নাল বলেন, ‘‘বর্তমান পরিস্থিতিতে চা বাগানের শ্রমিকদের জন্য নূন্যতম মজুরি চালু করা প্রথম এবং প্রধান বিষয় হওয়া উচিত ছিল। আমরা বৈঠকের দিকে তাকিয়ে ছিলাম। হতাশ হলাম।’’ যদিও প্রশাসনের একই অংশের দাবি, এটি সরকার, মালিক ও শ্রমিক ইউনিয়নের প্রতিনিধিদের নিয়ে ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে আলোচনার বিষয়।

শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটকও বলেন, ‘‘বামেদের ৩৪ বছরে চা শ্রমিকদের যা মজুরি বেড়েছিল, আমাদের আমলে তার কয়েক গুণ বেশি বেড়েছে। নূন্যতম মজুরি নিয়ে নিয়মিত আলোচনা করা হচ্ছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement