প্রশান্ত কিশোরের সংস্থা আইপ্যাক ও তৃণমূল নেতৃত্বের যুগলবন্দি তৃতীয়বারের জন্য নীলবাড়ি দখলের পথ মসৃণ করেছিল। মাত্র ১০ মাসের মধ্যেই কি সেই সম্পর্ক ‘ছিন্ন’ করতে চলেছে তৃণমূল? সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহ কি সেই ইঙ্গিতই দিচ্ছে?
সে বিষয়ে সরাসরি প্রশ্ন এড়িয়েই গেলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার বিকেলে লখনউ রওনা হওয়ার আগে দমদম বিমানবন্দরে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়েছিলেন তিনি। সেখানেই তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, শোনা যাচ্ছে তৃণমূলের সঙ্গে আইপ্যাকের চুক্তি শেষ হয়ে গিয়েছে? প্রশ্ন শেষ হওয়ার আগেই মমতা বলেন, ‘‘আমাকে এই ধরনের প্রশ্ন করবেন না!’’ এরপরেই মমতা বলেন, ‘‘এটা দলের কোনও অভ্যন্তরীণ বিষয় নয়। যদি আমার দলের কোনও অভ্যন্তরীণ বিষয় থাকে, সে বিষয়ে আপনারা আমাকে প্রশ্ন করতে পারেন। এটা দলের কোনও বিষয় নয়।’’
ঘটনাচক্রে, তার কিছুক্ষণ আগেই তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সাংবাদিক সম্মেলনেও আইপ্যাকের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন হওয়ার প্রসঙ্গ উঠেছিল। পার্থ বলেছিলেন, ‘‘যাঁরা আইপ্যাকের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেন, তাঁরাই এ ব্যাপারে বলতে পারবেন। আমি এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করব না।’’ সঙ্গে রাজ্যের শিল্পমন্ত্রী আরও যোগ করেন, ‘‘আমি মমতার সৈনিক। তাঁর নির্দেশেই চলি। তিনি কোনও নির্দেশ দিলে আমি তা মেনে চলি। তাই আর কারও কথা বলতে পারব না।
তৃণমূল সূত্রের খবর, পুরসভা ভোটে প্রার্থিতালিকা ঘিরে বিরোধ, বিতর্ক এবং বিভ্রান্তির মধ্যেই দলের পরামর্শদাতা সংস্থা আইপ্যাকের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার পথে এগোচ্ছেন নেতৃত্ব। সম্প্রতি পুরভোটে প্রার্থী তালিকা প্রকাশ নিয়ে যে বিরোধ প্রকাশ্যে এসেছে, তাতেই তৃণমূল-আইপ্যাক ‘সম্পর্ক’ বা ‘চুক্তি’ শেষ হওয়ার দিকে এগোচ্ছে বলে দলের একাংশের ধারনা। তবে এ নিয়ে কোনও আনুষ্ঠানিক কোনও ঘোষণা তরফেই করা হয়নি। মমতা নিজেও সোমবার ওই বিষয়ে প্রশ্ন এড়িয়ে গিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে জয়ের পর আইপ্যাকের সঙ্গে চুক্তি ২০২৬ সাল পর্যন্ত বাড়িয়েছিলেন তৃণমূলের শীর্ষনেতৃত্ব। দলের নেতাদের একাংশের বক্তব্য, সেই চুক্তি নিয়ে দোলাচলের আরও একটি ইঙ্গিত মিলেছে পুরভোটে নেতাদের দায়িত্ব বন্টনে।আইপ্যাককে বাদ রেখেই পুরভোটে নেতাদের দায়িত্ব দিয়েছে তৃণমূল। সোমবার দলের মহাসচিব পার্থ দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের নামও ঘোষণা করে দিয়েছেন। যদিও প্রকাশ্যে এ বিষয়ে কিছু বলতে নারাজ শীর্ষ তৃণমূল নেতৃত্ব।