বৃহস্পতিবার শহরে একটি অনুষ্ঠান থেকে ডিএ বৃদ্ধির কথা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: ফেসবুক।
রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের মহার্ঘভাতা বৃদ্ধি করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ডিএ বৃদ্ধির কথা ঘোষণা করেছেন তিনি। জানিয়েছেন আগামী ১ জানুয়ারি থেকে বর্ধিত হারে মহার্ঘভাতা মিলবে। ৪ শতাংশ বৃদ্ধি করা হয়েছে ডিএ।
বৃহস্পতিবার শহরে বড়দিন উপলক্ষে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানেই মহার্ঘভাতা বৃদ্ধি করার কথা ঘোষণা করেন তিনি। এত দিন রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা ৬ শতাংশ হারে ডিএ পেতেন। বৃহস্পতিবারের ঘোষণার পর থেকে তাঁরা পাবেন ১০ শতাংশ হারে ডিএ। ২০২৪ সালের ১ জানুয়ারি থেকে এই ঘোষণা কার্যকর হবে বলে জানিয়েছেন মমতা। বর্ধিত হারে ডিএ পাবেন পেনশনভোগীরাও।
ডিএ বৃদ্ধি করায় কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের সঙ্গে রাজ্য সরকারি কর্মীদের মহার্ঘভাতার ফারাক কমে হল ৩৬ শতাংশ। কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীরা বর্তমানে ৪৬ শতাংশ ডিএ পান। মমতা ঘোষণার সময়ে এ বিষয়ে কেন্দ্র-রাজ্য ফারাক বুঝিয়েছেন। তিনি জানান, কেন্দ্রীয় সরকারের ক্ষেত্রে ডিএ বাধ্যতামূলক। কিন্তু রাজ্য সরকারের ক্ষেত্রে তা নয়। রাজ্যে ডিএ ঐচ্ছিক।
রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের ৪ শতাংশ ডিএ বৃদ্ধির ফলে সরকারের ২,৪০০ কোটি টাকা খরচ হবে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এতে উপকৃত হবেন রাজ্যের ১৪ লক্ষ সরকারি কর্মী। সরকারি কর্মীদের জন্য এই মহার্ঘভাতা বৃদ্ধিকে বড়দিন এবং নতুন বছরের ‘উপহার’ বলে তুলে ধরেছেন মমতা।
তবে সরকারের এই ঘোষণায় খুশি হতে পারেননি ডিএ বৃদ্ধির দাবিতে দীর্ঘ দিন ধরে আন্দোলনরত কর্মচারীরা। সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের তরফে বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ডিএ-তে কেন্দ্র-রাজ্য ব্যবধান ৪০ শতাশ। ৪ শতাংশ ঘোষণা করা হয়েছে। একে ‘ভিক্ষা’ হিসাবে দেখছেন আন্দোলনকারীরা। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘‘মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীকে বলি, এককের ঘরের শূন্যটা কোথায় গেল? শূন্যটাকে বাম দিকে না বসিয়ে চার এর ডান দিকে বসান। আমরা কিন্তু ভিক্ষা চাইছি না।’’
সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের আন্দোলনের অন্যতম আহ্বায়ক ভাস্কর ঘোষ বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ১ জানুয়ারি থেকে ৪ শতাংশ ডিএ বৃদ্ধির ঘোষণা করলেও আমাদের কর্মসূচি বহাল থাকবে। আমরা ভিক্ষা চাইনি।’’
এ প্রসঙ্গে সিপিএমের রাজ্য সরকারি কর্মীদের কো-অর্ডিনেশন কমিটির নেতা বিশ্বজিৎ গুপ্ত চৌধুরী বলেন, ‘‘৪০ শতাংশ ডিএ বাকি ছিল। ৪ শতাংশ দিতে বাধ্য হলেন আমাদের আন্দোলনের চাপে পড়ে। এখনও ৩৬ শতাংশ বাকি। এই ঘোষণায় আমাদের আর্থিক বঞ্চনা মিটবে না। আমরা পূর্ণ ডিএ-র দাবিতে লড়াই চালিয়ে যাব।’’
তৃণমূল রাজ্য সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনের আহ্বায়ক প্রতাপ নায়েক বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ধন্যবাদ। সরকারি কর্মচারীদের মুখে উনি হাসি ফোটালেন। এত আর্থিক বঞ্চনার পরেও ৪ শতাংশ হারে ডিএ বৃদ্ধি করা হল।’’
বিজেপির সরকারী কর্মচারী পরিষদের সভাপতি দেবাশিস শীল বলেন, ‘‘যেখানে কেন্দ্র-সহ ছয়টি রাজ্যে ১লা জুলাই,২০২৩ থেকে ৪৬ শতাংশ ডিএ দিয়ে দেওয়া হয়ে গিয়েছে, সেখানে আমাদের রাজ্যে আগামী বছর থেকে দেওয়া হচ্ছে ১০ শতাংশ মাত্র! এই ৪ শতাংশ বাড়তি ডিএ আসলে ভিক্ষা। সামনে লোকসভা নির্বাচন না থাকলে সেটাও দেওয়া হত কিনা সন্দেহ। ডিএ ব্যাবধানের ফলে নিম্নবেতনভুক কর্মচারীর প্রতিমাসে কম করেও সাড়ে সাত হাজার টাকা বঞ্চিত হচ্ছেন।’’ ডিএ নিয়ে এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করেছেন শুভেন্দু অধিকারীও।