ছবি: পিটিআই।
এনআরসি থেকে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ), রাজ্যে প্রয়োগ হতে দেবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু তৃণমূল নেত্রীর সেই আপত্তিকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে নারাজ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তাঁর বক্তব্য, পশ্চিমবঙ্গের আপত্তিকে সে ভাবে গুরুত্ব দেওয়ার কোনও প্রয়োজন নেই। কারণ এগুলি সবই কেন্দ্রীয় আইন। যা প্রয়োগে বাধ্য রাজ্য সরকার। গত কাল রাজ্যে ন্যাশনাল পুপলেশন রেজিস্টার (এনপিআর) তৈরির কাজও বন্ধ করার যে নির্দেশ পশ্চিমবঙ্গ সরকার দিয়েছে, তা অবৈধ বলেই মনে করছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। কেন্দ্রের বক্তব্য, এ ভাবে কেন্দ্রীয় কাজে হস্তক্ষেপ করার কোনও অধিকার নেই রাজ্যের।
দেশের নাগরিকদের তালিকা বানাতে দ্রুত এনআরসি-র কাজ শুরু করার পক্ষপাতী মোদী সরকার। শরণার্থীরা যাতে এনআরসি-তে বাদ না পড়েন, তার জন্য সদ্য সমাপ্ত অধিবেশনেই নাগরিকত্ব আইনে সংশোধনী আনে সরকার। কিন্তু এনআরসি ও সিএএ-র মাধ্যমে বিজেপি ধর্মীয় মেরুকরণ ও বিভাজনের রাজনীতি করছে বলে অভিযোগে সরব হয় বিরোধী দলগুলি। মমতা জানান, তিনি কোনও ভাবেই এনআরসি এবং সিএএ রাজ্যে প্রয়োগ হতে দেবেন না। মমতার হুঙ্কার, এনআরসি ও সিএএ হলে তাঁর মৃতদেহের উপর দিয়ে করতে হবে কেন্দ্রকে। তৃণমূল নেত্রীর সেই বক্তব্য প্রসঙ্গে একটি সর্বভারতীয় বৈদ্যুতিন সংবাদমাধ্যমে অমিত শাহ জানান, ‘‘বিষয়টি এত গুরুত্ব দিয়ে দেখার দরকার নেই। সিএএ ও এনআরসি কেন্দ্রীয় তালিকাভুক্ত বিষয়। প্রতিটি রাজ্য তা বাস্তবায়নে বাধ্য। দিনক্ষণ এখনও ঠিক না হলেও কেন্দ্র ওই আইন গোটা দেশে প্রয়োগ করতে বদ্ধপরিকর।’’ মমতা-সহ বিরোধীরা এনআরসি-সিএএ বাতিল করার দাবি তুলেছেন। অমিত কিন্তু বলেন, ‘‘আইন প্রত্যাহারের প্রশ্নই নেই।’’
আরও পড়ুন: ফের মৃত্যু, অভিযোগ নয়া আইনের দিকেই
ঘটনাচক্রে এ সময়ে ২০২১ সালের জনগণনার কাজের পাশাপাশি চালু রয়েছে এনপিআর তৈরির কাজ। কিন্তু কাল রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতর বিজ্ঞপ্তি জারি করে সেই কাজ বন্ধ করে দেয়। রাজ্যের ওই পদক্ষেপ সংবিধান বিরোধী বলেই মনে করছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। মন্ত্রক কর্তাদের মতে, এ ভাবে বিজ্ঞপ্তি জারি করে কাজ বন্ধ করতে পারে না রাজ্য। এতে সাংবিধানিক সঙ্কট তৈরি হতে পারে। বিজেপি নেতা তথা রাজ্যসভার সাংসদ স্বপন দাশগুপ্তের মতে, ‘‘পরিকল্পিত ভাবে সংবিধানকে চাপে ফেলতে চাইছেন মমতা। তাঁর ইচ্ছা, রাজ্যে কেবল তাঁর আইন চলবে। তিনি পরিকল্পিত ভাবে কেন্দ্রকে উস্কাচ্ছেন, যাতে সংবিধানিক সঙ্কটের যুক্তি দেখিয়ে পশ্চিমবঙ্গে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করতে বাধ্য হয় কেন্দ্র। যাতে রাজ্যবাসীর আবেগ তৃণমূলের পক্ষে যায়।’’