মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
শেষ মুহূর্তে দিল্লি সফর বাতিল করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার বিকেলেই রওনা হওয়ার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দিলেন, তিনি দিল্লি সফর বাতিল করেছেন। রাজ্য বাজেটের কারণেই তাঁর এই সফর বাতিল বলে জানিয়েছেন মমতা। মুখ্যমন্ত্রী এ-ও জানিয়েছেন, মঙ্গলবার ‘এক দেশ, এক ভোট’ সংক্রান্ত বৈঠকে তাঁর বদলে তৃণমূলের তরফে দুই সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় উপস্থিত থাকবেন।
আগামী বৃহস্পতিবার রাজ্য বাজেট পেশ হবে বিধানসভায়। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, সেই কারণেই তাঁকে এই সফর বাতিল করতে হল শেষ মুহূর্তে। বস্তুত, গত কয়েক দিন ধরেই বাজেট নিয়ে ব্যস্ত মুখ্যমন্ত্রী। গত শুক্র ও শনিবার ‘কেন্দ্রীয় বঞ্চনা’র বিরুদ্ধে রেড রোডে মমতার ধর্না ছিল। মুখ্যমন্ত্রীর অস্থায়ী অফিস তৈরি হয়েছিল সেই ধর্নামঞ্চের পিছনে। দেখা গিয়েছিল, ঘণ্টা খানেক বাদে বাদেই মমতা ওই অফিসে যাচ্ছেন। মুখ্যমন্ত্রী নিজেই জানিয়েছিলেন, তিনি বাজেট সংক্রান্ত বিভিন্ন কাগজপত্র খতিয়ে দেখছেন। তার পর তাতে সই করছেন।
মুখ্যমন্ত্রীর দিল্লি সফর নিয়ে রাজনৈতিক মহলে গত কয়েক দিন ধরে বিস্তর আলোচনা ছিল। তৃণমূলের অনেকেও মুখ্যমন্ত্রীর সূচি নিয়ে স্পষ্ট কিছু বলতে পারছিলেন না। অন্য দিকে বাম, কংগ্রেস নেতারা বলতে শুরু করেছিলেন, ‘বোঝাপড়া’ করার উদ্দেশেই দিল্লি যেতে হচ্ছে মমতাকে। প্রদেশ কংগ্রেসের অনেক নেতার ‘আশঙ্কা’ ছিল, দিল্লি গিয়ে কংগ্রেস নেত্রী সনিয়া গান্ধীর সঙ্গেও মমতা দেখা করতে পারেন। যদিও শেষ পর্যন্ত সফর বাতিল করলেন মমতা।
‘এক দেশ, এক ভোট’ সংক্রান্ত বিষয়ে মমতা এর আগেই তাঁর অবস্থান স্পষ্ট করেছেন। তাঁর বক্তব্য, ‘এক দেশ, এক ভোট’-এর অর্থ দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে সঙ্কুচিত করা। যা আসলে সামগ্রিক ভাবে সংবিধান বদলের নামান্তর। এর আগেও কমিটির চেয়ারম্যান তথা দেশের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতিকে এ নিয়ে চিঠি লিখেছিলেন তৃণমূলের সর্বোচ্চ নেত্রী। মমতা চেয়েছিলেন, তিনি নিজে গিয়ে প্রতিবাদ জানিয়ে আসবেন। কিন্তু এই মুহূর্তে রাজ্য বাজেটের চাপই তাতে অন্তরায় হয়ে দাঁড়াল বলে তিনি জানালেন। ফলে মমতার দিল্লি সফর ঘিরে রাজনৈতিক মহলে যে কৌতূহল তৈরি হয়েছিল, তারও আপাতত অবসান হল।