Mamata Banerjee

দেশে ‘পরিবর্তন’ চাই, ঐক্যের ডাক মমতার

বিরোধীদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার বার্তা দেওয়ার পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে বঞ্চনা এবং রাজ্যের পাওনা আটকে রাখার অভিযোগও ফের তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ মে ২০২৩ ০৮:৫০
Share:

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র

রাজ্যে তৃতীয় বারের সরকারে আসার দ্বিতীয় বর্ষপূর্তির দিনে আগামী লোকসভা নির্বাচনে দেশের সরকারে পরিবর্তনের ডাক আবার শোনা গেল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গলায়। বিজেপিকে পরাস্ত করার লক্ষ্যে ফের তাঁর আহ্বান, গণতন্ত্র রক্ষায় সব বিরোধী একজোট হোক।

Advertisement

বিরোধীদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার বার্তা দেওয়ার পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে বঞ্চনা এবং রাজ্যের পাওনা আটকে রাখার অভিযোগও ফের তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। দাবি করেছেন, কেন্দ্রের অসহযোগিতা সত্ত্বেও রাজ্য সরকার উন্নয়নের কাজ করছে। মমতা যখন মঙ্গলবার এই বার্তা দিচ্ছেন, সে দিনই তৃণমূল মহিলা কংগ্রেসের তরফে ঘোষণা হয়েছে কেন্দ্রের কাছে পাওনা আদায়ের দাবিতে ধর্নায় বসার। কিছু দিন আগে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রীই রেড রোডে একই দাবিতে দু’দিনের ধর্নায় বসেছিলেন। তাঁর জনসংযোগ যাত্রায় বেরিয়ে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও প্রতি দিন রাজ্যের টাকা আটকে রাখার অভিযোগে কেন্দ্রকে বিঁধছেন। এই প্রেক্ষিতেই এ বার শাসক দলের মহিলা সংগঠনের সিদ্ধান্ত, গান্ধী মূর্তির নীচে আজ, বুধবার থেকে ৩২ ঘণ্টার ধর্না কর্মসূচি চলবে।

সরকারের বর্ষপূর্তির দিনে এক ভিডিয়ো-বার্তায় মমতা বলেছেন, অনেক ঝড়-ঝঞ্ঝার মধ্যে দিয়ে দু’বছর আগে বাংলার মানুষ তৃণমূলকে ফের ক্ষমতায় এনেছিলেন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘তবে দুঃখ আমাদের একটাই। ভেবেছিলাম, ৩৪ বছরের অত্যাচারী সরকার চলে যাওয়ার পরে কেন্দ্রীয় সরকারের দিক থেকে আমরা একটু সহানুভূতি পাব। আমাদের ন্যায্য টাকাপয়সা পাব। কিন্তু সহানুভূতি তো আমরা পাইইনি। উপরন্তু ১০০ দিনের কাজের বকেয়া টাকাও দেয়নি কেন্দ্র। তার মধ্যেও আমরা ১০ হাজার কোটি কর্মদিবস সৃষ্টি করেছি।’’ এই সূত্রেই তিনি আরও বলেছেন, ‘‘সবাইকে শুভনন্দন। আর দেশের জন্য একটা কথা বলতেই হবে, এই দেশে পরিবর্তন হওয়া খুব জরুরি। পরের ভোট হবে পরিবর্তনের নির্বাচন।’’

Advertisement

পরবর্তী নির্বাচনের লক্ষ্য মাথায় রেখেই তৃণমূল নেত্রীর আহ্বান, ‘‘যদি ১২ বছরে আমরা এত কিছু করতে পারি একটা অত্যাচারী সরকারের বিরুদ্ধে লড়ার পরে, তা হলে ১০ বছরের একটি জুমলা সরকারের বিরুদ্ধেও লড়তে পারব। তাই সব বিরোধী দলকে বলব, আসুন একজোট হই। বিজেপিকে পরাস্ত করি। গণতন্ত্রে মানুষই শেষ কথা বলুক।’’ গণতন্ত্রকে রক্ষা করার কথা বলতে গিয়ে বিরোধীদের বিরুদ্ধে লাগাতার ‘কুৎসা ও অপপ্রচারে’র অভিযোগও ফের এনেছেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশিই প্রধানমন্ত্রীর নাম না করে তাঁর মন্তব্য, ‘‘মানুষকে ‘মন কি বাত’ বলার নামে ‘ঝুট কি বাত’ করতে হ্যায়!’’

রাজ্যের মন্ত্রী ও মহিলা তৃণমূলের রাজ্য সভানেত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য এ দিনই জানিয়েছেন, কেন্দ্রের কাছে রাজ্যের প্রাপ্য এথন এক লক্ষ ১৫ হাজার কোটি টাকা। কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে বারবার দাবি জানিয়েও সুরাহা হয়নি। কেন্দ্রের এই ‘বঞ্চনা’র প্রতিবাদেই তৃণমূলের মহিলা সংগঠনের ডাকে আজ ধর্না কর্মসূচি শুরু হবে।

মুখ্যমন্ত্রী যখন দেশে পরিবর্তনের কথা বলছেন, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ও বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার ফের রাজ্যে তৃণমূল সরকারকে উৎখাতের ডাক দিয়েছেন। শুভেন্দু টুইট-বার্তায় এবং দলীয় সভায় বলেছেন, ‘‘যাঁরা অভূতপূর্ব ভোট-পরবর্তী হিংসা এবং সন্ত্রাসের শিকার হয়েছিলেন, তাঁদের শ্রদ্ধা জানাই। সেই কালো দিনের দ্বিতীয় বর্ষপূর্তি পালন করা হচ্ছে! এখন আঞ্চলিক দলে পরিণত হওয়া তৃণমূল কংগ্রেস সব রকম নৃশংসতা দেখিয়েছিল। আমাদের কর্মীদের বলিদান কখনও ভুলব না। তাঁদের সঠিক বিচার দিতে আমরা বদ্ধপরিকর।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement