ঘর সামাল দিন, বাম ও কংগ্রেসকে আর্জি মমতার

বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান এবং বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী অবশ্য ঘর ভাঙানোর দায়ে রাজ্যের শাসক দলকেই অভিযুক্ত করেছেন। দু’জনেরই বক্তব্য, ধর্মনিরপেক্ষ দলগুলি বিজেপির সঙ্গে লড়াই করার জন্য সব সময়েই তৈরি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ জুলাই ২০১৭ ০৩:১৫
Share:

বক্তা: বিধানসভায় সাংবাদিক বৈঠকে মমতা। নিজস্ব চিত্র

সারা দেশের মতো এ রাজ্যেও বাড়বাড়ন্ত হচ্ছে বিজেপি এবং সঙ্ঘ পরিবারের নানা সংগঠনের। এই ‘বিপদে’র মোকাবিলায় বিরোধী বাম ও কংগ্রেসকে ফের শক্ত হয়ে লড়াই করার আবেদন জানালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দুই দলের নেতাদের প্রতিই মুখ্যমন্ত্রীর আর্জি, তাঁদের দল থেকে কেউ যেন বিজেপিতে না যায়। তাঁরা যেন ঘর সামলে রাখেন।

Advertisement

গত লোকসভা ভোটের পরে ঘরছাড়াদের ফেরানোর আর্জি নিয়ে নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন বিমান বসুর নেতৃত্বে বাম নেতারা। চা, ফিশফ্রাই সহযোগে আপ্যায়ন করে মমতা সে দিনও তাঁদের বলেছিলেন, ঘর সামলে রাখতে। কারণ, বিজেপি মাথা তুলছে। নরেন্দ্র মোদী সরকারের মোকাবিলায় এক বার বলেছিলেন, প্রয়োজনে আলিমুদ্দিনে গিয়ে তিনি আলোচনায় রাজি। কেন্দ্রীয় সরকারের সিদ্ধান্তের একজোট হয়ে বিরোধিতার স্বার্থে সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরিকে ফোনও করেছিলেন এক বার। সোমবার রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের দিন বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘরে যে ভাবে কংগ্রেস ও বাম নেতাদের ডেকে আলোচনায় বসেছিলেন মমতা, তাতে সেই বিজেপি মোকাবিলায় একজোট হওয়ার তাগিদই পরিষ্কার।

বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান এবং বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী অবশ্য ঘর ভাঙানোর দায়ে রাজ্যের শাসক দলকেই অভিযুক্ত করেছেন। দু’জনেরই বক্তব্য, ধর্মনিরপেক্ষ দলগুলি বিজেপির সঙ্গে লড়াই করার জন্য সব সময়েই তৈরি। কিন্তু তৃণমূল ক্রমাগত দল ভাঙিয়ে কংগ্রেস এবং সিপিএমকে দুর্বল করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আলোচনায় উঠে আসে রায়গঞ্জ পুরসভার সাম্প্রতিক ভোট এবং সেখানে কংগ্রেসের কাউন্সিলরদের ভাঙিয়ে নেওয়ার প্রসঙ্গও। মুখ্যমন্ত্রী অবশ্য বিরোধী নেতাদের সঙ্গে তরজায় যাননি। তিনি শুধু পাল্টা বলেন, ওঁরা যদি দল ছেড়ে আসেন, তা হলে কী করা যাবে!

Advertisement

আরও পড়ুন:ছাত্র ভর্তির টাকা নিয়ে জয়ার সামনেই গ্রেফতার

আলোচনার খুঁটিনাটির চেয়ে মুখ্যমন্ত্রীর মনোভাবকেই বেশি তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন বিরোধী নেতারা। দার্জিলিঙের পরিস্থিতি এবং রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে অশান্তির ঘটনা নিয়ে আলোচনার জন্য বিধানসভার অধিবেশন ডাকার আর্জি জানিয়ে কয়েক দিন আগে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছিলেন সুজনবাবু। স্পিকারের ঘরে সুজনবাবুকে দেখেই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ৪ অগস্ট থেকে অধিবেশন ডাকা হচ্ছে। তখন যে জিএসটি বিল পাশ করানো হবে, তা জানিয়ে ওই কর নিয়ে কেন্দ্রের চাপিয়ে দেওয়া অন্যায়ের প্রসঙ্গও তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। সাম্প্রতিক কালে যা প্রথম। জিএসটি নিয়ে আলোচনার দাবি জানিয়েও আগে সাড়া পায়নি বিরোধীরা।

কংগ্রেস ও বাম নেতৃত্ব অপেক্ষা করছেন, এর পরে দল ভাঙানোয় ভাটা প়ড়ে কি না। সামনেই ২১ জুলাই। ‘শহিদ সমাবেশ’ প্রতি বছরই তৃণমূলে যোগদানের মঞ্চ। আর বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলাপ ঘোষের কটাক্ষ, ‘‘সারদা, নারদ কেলেঙ্কারিতে মুখ্যমন্ত্রী এমন ফেঁসেছেন, পিঠ বাঁচানোর রাস্তা নেই। তাই বাম, কংগ্রেসকে আঁকড়ে বাঁচতে চাইছেন। ’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement