গঙ্গাসাগরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র।
উত্তরপ্রদেশের কুম্ভমেলার সঙ্গে এ রাজ্যের গঙ্গাসাগর মেলার তুলনা টেনে কেন্দ্রীয় সরকারকে বিঁধলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতার মতে, কুম্ভমলায় রাজ্যকে সম্পূর্ণ সাহায্য করে কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু গঙ্গাসাগরের ক্ষেত্রে কোনও সাহায্য করা হয় না বলে অভিযোগ তাঁর। এর পাশাপাশি, গঙ্গাসাগর মেলাকে ‘জাতীয় মেলা’ হিসাবে ঘোষণা করার দাবিও তুলেছেন তিনি।
বুধবার ডুমুরজলা হেলিপ্যাড থেকে কপ্টারে চড়ে গঙ্গাসাগর রওনা দেন মমতা। সেখানে পৌঁছে গঙ্গাসাগরে রাজ্য সরকার যে সব উন্নয়নমূলক কাজকর্ম করেছে তার বিবরণ দেন তিনি। পাশাপাশি, গঙ্গাসাগরে যাতায়াত আরও সুগম হয়েছে বলেও জানান। তাঁর মন্তব্য, ‘‘দূরকে নিকট করার বন্দোবস্ত করা হয়েছে।’’ সেই সূত্রে তিনি তুলে ধরেন উত্তরপ্রদেশে কুম্ভমেলার প্রসঙ্গ। তিনি বলেন, ‘‘কুম্ভমেলা সারা পৃথিবীতে এক বিরল মেলা। কুম্ভমেলায় আকাশ এবং রেলপথের যোগাযোগ দারুণ ভাল। কিন্তু গঙ্গাসাগর মেলায় মানুষকে জল দিয়ে পেরোতে হয়।’’ তাঁর দাবি, ‘কোটিখানেক মানুষ’ যাতায়াত করেন জল দিয়েই। মমতার অভিযোগ, ‘‘আমরা কেন্দ্রকে বার বার বলার পরেও আমরা বিচার পাইনি। মুড়িগঙ্গার উপরে একটা সেতু প্রয়োজন। কিন্তু, এর খরচ প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা। তা কী ভাবে করা যায় তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
মমতার মতে, মুড়িগঙ্গার উপর সেতু তৈরি হলে তা ‘বড় কাজ’ হবে। তবে ‘বিরাট যজ্ঞ’ করতে গেলে ‘যজ্ঞের মালপত্র’ যোগাড় করতে হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। এই সূত্রেই গঙ্গাসাগর মেলাকে ‘জাতীয় মেলা’ হিসাবে ঘোষণা করার দাবি করেছেন তিনি। তাঁর অভিযোগ, ‘‘কুম্ভমেলায় উত্তরপ্রদেশ টাকা পায় কেন্দ্র থেকে। আর গঙ্গাসাগর মেলায় ১০ পয়সার বাতাসা দিয়েও উপকার করা হয় না। সম্পূর্ণ খরচটাই রাজ্য সরকারের।’’
বুধবার বেলা আড়াইটে নাগাদ গঙ্গাসাগরে পৌঁছন মমতা। সেখানে নতুন হেলিপ্যাডের উদ্বোধন করেন তিনি। বিকেলে কপিল মুনির আশ্রম পরিদর্শন করেন তিনি। সেখানে মন্দির চত্বরে আলোকসজ্জার উদ্বোধন করেন। এ ছাড়া দক্ষিণেশ্বর কালীবাড়ি, কালীমন্দির, তারকেশ্বর, জহুরা কালী এবং তারাপীঠ— এই ৫টি মন্দিরের আদলে তৈরি নির্মাণেরও উদ্বোধনও করেন মুখ্যমন্ত্রী।