ফাইল চিত্র।
বিভিন্ন দেশে আটকে পড়া ভারতীয়েরা বন্দে ভারত প্রকল্পের যে-উড়ানে কলকাতায় ফিরছিলেন, সেই উড়ান প্রায় বন্ধই করে দিতে বললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার নবান্নে তিনি জানান, বন্দে ভারতে মাসে একটি উড়ান যাতে আসে, তার জন্য রাজ্য চিঠিতে অনুরোধ করছে কেন্দ্রকে।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “অনেক বিমান আসছে, আটকানো হচ্ছে না। বিমানে একটা কাগজ দেওয়া হচ্ছে। লেখার পরে তা চেক না-করে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। কোনও স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না! আমরা (করোনা) কন্ট্রোল করব, আর কারও অবিবেচনাপ্রসূত সিদ্ধান্তে বা অবহেলায় আমাদের জায়গায় ছড়িয়ে দেবেন, এটা যেন না-হয়। তাই বলছি, বিদেশ থেকে আসা বিমান এখন বন্ধ করুন। যাঁরা আসার, তাঁরা এসে গিয়েছেন। মাসে একটা বিমান চালান, আপত্তি নেই।”
মমতার বক্তব্য, করোনা প্রভাবিত রাজ্য থেকে কলকাতার উড়ান আপাতত বন্ধ রাখা হোক। তাঁর কথায়, “কোভিড রোগী চেন্নাই থেকে কোভিডের কাগজ নিয়ে কলকাতা বিমানবন্দরে নামল। তাকে পরীক্ষা করা হল না। হাসপাতালে গিয়ে তারা ভর্তি হল। এ ভাবে তো ‘কমিউনিটি স্প্রেড’ হবে। তাই বলছি, যেখানে করোনা রোগীর সংখ্যা বেশি, সেখান থেকে ঘরোয়া উড়ান জুলাই পর্যন্ত বন্ধ রাখা হোক। মুখে বলছে, টেস্টিং, ট্র্যাকিং, ট্রেসিং। কিন্তু মাঝখান থেকে রাজ্যে যা নিয়ন্ত্রণে রেখেছি, তা বাড়িয়ে চলে যাচ্ছে!’’ বিমানবন্দরের খবর, কলকাতায় দিনে ৬০-৭০টি উড়ান ওঠানামা করছে। রাজ্য চাইলে কেন্দ্র সেই উড়ান কমিয়ে দিতে পারে।
এ দিকে নিয়ম হল, বিদেশ থেকে ফেরার পরে সাত দিন নিজের টাকায় নির্দিষ্ট হোটেলে নিভৃতবাসে থাকা বাধ্যতামূলক। কিন্তু অনেকেই জোর করে বাড়ি চলে যাচ্ছিলেন। নবান্নের এক প্রশাসনিক কর্তা জানান, এ বার পুলিশ দিয়ে যাত্রীদের সরকারি নিভৃতবাসে পাঠানো হবে। আবুধাবি থেকে বৃহস্পতিবার আসা ৮০ জনকে জোর করে হুগলির একটি নিভৃতবাসে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু সন্ধ্যায় কিরঘিজস্তান থেকে ফেরা ১৫১ জন যাত্রী হোটেলে যেতে রাজি হননি। তাঁদের অধিকাংশই ডাক্তারির ছাত্রী। বিক্ষোভের মুখে তাঁদের বাড়ি যেতে দেওয়া হয়। শুক্রবার এক বৈঠকে ঠিক হয়েছে, শনিবার থেকে বন্দে ভারত-এর যাত্রীদের ১১ নম্বর ব্যাগেজ বেল্টের কাছে বসিয়ে রাখা হবে। হোটেলে যেতে রাজি হলে তবেই ২০ জন করে ছাড়া হবে। বাইরে বেরিয়ে তাঁরা বেঁকে বসলে বিমানবন্দরের ভিতরে নিয়ে গিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হবে।