আসুন মানবিক হই: মুখ্যমন্ত্রী

মঙ্গলবার বাগবাজারে বিশ্বের প্রথম চৈতন্য সংগ্রহশালার উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৪ অগস্ট ২০১৯ ০৪:০৯
Share:

আলাপ: বাগবাজার গৌড়ীয় মিশনে মঙ্গলবার শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু সংগ্রহশালার উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে শিশুদের সঙ্গে কথাও বলেন তিনি। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী

আচণ্ডালে কোল দিয়ে মানবতার জয়গান গেয়েছিলেন শ্রীচৈতন্য। সেই মানবিকতার আদর্শে তিনিও বিশ্বাসী বলে দাবি করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আহ্বান, ‘‘আসুন, আমরা মানবিক হই, মানুষ হই।’’

Advertisement

মঙ্গলবার বাগবাজারে বিশ্বের প্রথম চৈতন্য সংগ্রহশালার উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী। চৈতন্যদেবের প্রেম, সম্প্রীতি, আদর্শের উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘‘বড় মানুষ হওয়া সহজ নয়। এর জন্য অনেক ত্যাগ করতে হয়। অনেক দুঃখ, কষ্ট, অত্যাচার, বদনাম সহ্য করতে হয়। তিনিই বড় হন, যিনি অপরকেও বড় বলে ভাবেন।’’ মমতা জানান, চৈতন্যদেবই প্রথম সমাজ সংস্কারক, ৫৩৩ বছর আগে যিনি ভেদাভেদের বিপক্ষে এবং সংস্কৃতি, সভ্যতার পক্ষে অখণ্ড ভারত গড়ার কথা বলেছিলেন। সেই ধারাবাহিকতা বজায় রেখে চলেছে বাংলা। একই কথা পরবর্তী সময়ে শ্রীরামকৃষ্ণ, স্বামী বিবেকানন্দ-সহ বিভিন্ন মনীষী নানা ভাবে বলে গিয়েছেন। তাই অন্য কারও কাছে তিনি বাংলার সংস্কৃতি শিখতে চান না বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী।

মমতার অভিযোগ, বাংলার মেধা, সংস্কৃতি ও মানবিকতা নিয়ে অনেকে হিংসা করেন। ‘‘অন্যান্য প্রদেশকে বাংলা কিন্তু কখনও হিংসা করে না। এটা বাংলার শিক্ষা, সংস্কৃতি ও সভ্যতা,’’ বলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, হিন্দুধর্ম সর্বজনগ্রাহ্য। সেটা কারও একার সম্পত্তি নয়। কোনও ধর্মই কারও কেনা নয়। বাংলায় সর্বধর্মের উন্নয়নে কাজ হয়েছে। ‘‘কিন্তু যাঁরা সেটা দেখতে পান না, তাঁরা যেন আগে নিজেদের চেহারার প্রতি নজর দেন। যেন ভেবে দেখেন, তাঁরা দেশের জন্য কী করেছেন,’’ বলেন মমতা।

Advertisement

বাগবাজারে গৌড়ীয় মিশনের প্রধান কার্যালয় চত্বরে গড়ে ওঠা ‘শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু মিউজ়িয়াম’-এর বাকি কাজের জন্য সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাংসদ তহবিল, রাজ্য সরকারের তহবিল মিলিয়ে এক কোটি টাকা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। একটি বাড়ির অর্ধেক কিনে সংগ্রহশালার সূচনা হয়েছে। মমতা জানান, কলকাতা পুরসভা ৭০-৮০ লক্ষ টাকা দিয়ে বাড়িটির বাকি অর্ধেক অংশ কিনে মিশনকে দেবে।

সংগ্রহশালার একতলায় স্মরণ কক্ষ ছাড়াও থাকছে শ্রীচৈতন্যের মানবলীলা, সন্ন্যাস গ্রহণ, প্রেমদান ও পার্ষদদের নিয়ে সংকীর্তন লীলা। প্রাক্‌-চৈতন্য যুগ, চৈতন্য যুগ এবং চৈতন্যোত্তর যুগের বাংলার সামাজিক সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডল সম্পর্কে জানতে পারবেন দর্শকেরা। শ্রীচৈতন্য ও তাঁর পারিষদবর্গ এবং ঝাড়খণ্ড লীলা সম্পর্কে জানা যাবে দোতলায়। তেতলায় শ্রীভক্তিবিনোদ গ্যালারি ও চৈতন্যদর্শন গ্যালারি। মিশনের প্রতিষ্ঠাতা শ্রীল ভক্তিসিদ্ধান্ত সরস্বতী গোস্বামী প্রভুপাদ সম্পর্কে জানা যাবে চারতলায়। রয়েছে গ্রন্থাগার, ডিজিটাল পদ্ধতিতে গৌড়ীয় দর্শন, বৈদিক সৃষ্টিতত্ত্বের উপস্থাপনা, পাণ্ডুলিপির ডিজিটাল লেখ্যাগার। আধ্যাত্মিক ও দার্শনিক বিষয়ের ডিভিয়োর সাহায্যে চলবে ২-ডি ফিল্মের প্রদর্শন। মডেল, ভার্চুয়াল রিয়্যালিটি ও আলো-ধ্বনির সমন্বয়ে তুলে ধরা হবে বিভিন্ন বিষয়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement