পাহাড়কে শান্তির বার্তা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। — নিজস্ব চিত্র।
পাহাড়ে তিনি শান্তি চান। উন্নয়ন চান। চান না ‘ধান্দাবাজ’দের প্রতি কোনও রকম প্রশ্রয়। দার্জিলিঙের ম্যাল থেকে পাহাড়ের নতুন নেতৃত্বকে এবং পাহাড়বাসীকে তিন বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বেলা ১১টা থেকে জিটিএ (গোর্খা টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন)-এর নবগঠিত বোর্ডের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান ছিল। সেখানে বক্তৃতা করতে গিয়ে মমতা বলেন, “পাহাড় অসীম সম্ভাবনাময়। এখানে শান্তি চাই। কেউ যেন গড়বড় না করে।” মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যে উঠে এসেছে এক সময় বিমল গুরুঙের নেতৃত্বাধীন জিটিএ বোর্ডকে রাজ্য সরকার যে অর্থসাহায্য করেছিল, তার কথাও। তবে সরাসরি কারও নাম করেননি মুখ্যমন্ত্রী।
মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, পাহাড়ের স্বপ্ন কাঞ্চনজঙ্ঘার মতো সুউচ্চ। তিনি বলেন, ‘‘সাত হাজার কোটি টাকা জিটিএকে দিয়েছি। এ ছাড়া আরও কিছু টাকা দেওয়া হয়েছে। আমি আগের কথা আর বলতে চাই না। আপনারা শপথ নিন, যে নেতা যতই ধান্দাবাজি করুন তাঁকে ভবিষ্যতে যেন পাহাড়ে গড়বড় করতে না দেওয়া হয়। কথায় কথায় পাহাড়কে অশান্ত হতে দেবেন না।’’ পাহাড়ের অর্থনীতি চাঙ্গা করার বার্তাও দিয়েছেন মমতা। বলেন, ‘‘অনীতের সঙ্গে গতকাল আমি অনেক কথা বলেছি। জিটিএর শপথের পর আমি অনীতকে কলকাতায় আসতে বলেছি।’’
সদ্য শপথ নেওয়া জিটিএ সদস্যদের প্রতি মুখ্যমন্ত্রীর বার্তা, ‘‘অনেকে গালি দিচ্ছে। কিন্তু অনেকে বিভিন্ন জায়গা থেকে পালিয়ে বাংলায় আসছে। কারণ বাংলা শান্ত। আমি ঝগড়া নয়, বন্ধুত্ব চাই। আমার ইচ্ছা, পাহাড় ভাল থাকুক, পাহাড় এগিয়ে যাক। সকলে খুশিতে থাকুন এটাই চাই। আমি দখল নিতে আসব না। আমি ভালবাসতে আসব। আপনারা কোন দলের ভুলে যান, আপনারা দাজিলিং, বাংলা তথা এই দেশের জন্য কাজ করুন। সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করুন।’’
পাহাড়ে কয়েক দফা উন্নয়নের প্রস্তাব দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। দার্জিলিঙে ২০০ একর জায়গার উপর ‘নতুন শহর’ তৈরির কথা বলেছেন মমতা। সেখানে তৈরি হবে হোম স্টে, শপিং মল, খাবারের দোকান। কার্শিয়াঙ, কালিম্পঙেও এমন প্রকল্প তৈরির প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি। তাঁর কথায় ‘‘মিরিকের জন্য অন্য পরিকল্পনা করতে হবে। যাতে ওখানে ইকো-টুরিজম করা যেতে পারে। কারণ ওখানে ভূমিকম্প হয়।’’ চা বাগানে যে সব বাড়ি রয়েছে সেখানে হোম স্টে করার প্রস্তাবও দিয়েছেন। পাহাড়ের মহিলারা গাড়ি চালালে গাড়ি কিনতে ঋণ দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি তাঁর আশ্বাস, ‘‘২০২৪ সালের শেষে পাহাড়ের সব ঘরে পানীয় জল পৌঁছে যাবে।’’
সম্প্রতি মণিপুরে ধসে মারা গিয়েছেন বেশ কয়েক জন জওয়ান। তাঁদের মধ্যে নয় জন দার্জিলিঙের বাসিন্দা। ওই জওয়ানদের পরিবারের সদস্যদের হোমগার্ডের চাকরি এবং দু’লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।